গরম পানীয় হিসেবে বিশ্বজুড়ে কফির জনপ্রিয়তা প্রশ্নাতীত। কফি ছাড়া দিন চলে না—এমন মানুষের সংখ্যা নিতান্ত কম নয়। দিনে দিনে ক্যাফেইনের প্রতি আসক্তি মানুষের বেড়েই চলেছে। কফিপ্রেমীরা শনিবার (১ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক কফি দিবস পালন করছেন।
কফি পানে কখনো-কখনো ঝুঁকি থাকলেও এর উপকারিতা অনেক বেশি। কর্মস্থলের কঠিন সময়ে কফি যেমন শ্রান্তি দূর করে, তেমনই সকাল-দুপুর আড্ডার অপরিহার্য অংশ এই পানীয়। বন্ধুদের সঙ্গে কিংবা পারিবারিক আড্ডা কফি ছাড়া বেসুরো অনেকের কাছে।
অতি বেশি ক্যাফেইন শরীরে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। পুষ্টিবিদরা বলছেন, মাঝারি মাত্রায় কফি পান উপকারী। এতে মানুষের মধ্যে ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারে। দেহ-মন তাজা রাখতে গরম কফির জুড়ি নেই।
ভারতীয় পুষ্টিবিদ প্রিয়া পালান বলেন, একটি মুদ্রার দুটো পিঠ থাকে। অতিরিক্ত কফি পানে বেশ কিছু ঝুঁকি থাকে। এতে বিষণ্নতা, অনিদ্রা ও অস্থিরতা চলে আসতে পারে। আবার নিয়মিত কফি পানে স্বাস্থ্যের উপকারিতাও উল্লেখযোগ্য।
তিনি বলেন, গবেষণায় দেখা গেছে, স্মৃতিভ্রংশ, অ্যালঝেইমার ও পারকিনসনস রোগসহ বিভিন্ন স্নায়বিক সমস্যা দূর করতে কফির তুলনা মেলা ভার।
কফি মানবদেহের হরমোন এপিনেফরাইন বাড়াতে সহায়তা করে। এতে মানুষের শারীরিক কর্মক্ষমতা ও পেশিশক্তি বাড়ে। শরীরের সার্বিক সহ্যক্ষমতা জোরদার করে। এ ছাড়া মস্তিষ্কের কার্যক্রম ও শক্তির মাত্রাও বাড়ায় ক্যাফেইন।
প্রিয়া পালান মনে করেন, কফিতে থাকা অতিক্ষুদ্র পুষ্টিগুণ—ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ ও ভিটামিন বি-ইনসুলিন সংবেদনশীলতা উদ্দীপিত করতে পারে। টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ক্ষতিকর প্রভাবকে বিলম্বিত করে ক্যাফেইনের ম্যাগনেসিয়াম। দুধ ও চিনি মেশানো অতিরিক্ত ক্যালরিযুক্ত কফির তুলনায় ব্ল্যাক কফি অধিক স্বাস্থ্যসম্মত।
দিনে দুই কাপ কফি পানের পরামর্শ দিয়েছেন এই পুষ্টিবিদ। তিনি বলেন, চার কাফের বেশি খাওয়া উচিত হবে না। অবশ্যই মাঝারি মাত্রায় কফি খেতে হবে। নাহলে এর বৈরী প্রভাবও পড়তে পারে শরীরে। তখন মানুষের ঘুম হারাম করে দিতে পারে এই গরম পানীয়।
তবে ব্যক্তিভেদে কফি খাওয়ার মাত্রা নির্ভর করে বলে মনে করেন প্রিয়া পালান। দুধ ও শর্করা মিশ্রিত কফি অতিরিক্ত ক্যালরি যুক্ত করলেও কালো কফিই মানুষের জন্য উত্তম। ব্ল্যাক কফি মানবদেহে কম ক্ষতি বয়ে আনে বলে মনে করেন পুষ্টিবিদরা।
এন-কে
Leave a Reply