অভিনব কায়দায় পেঁয়াজ ও তরমুজের ভেতরে ইয়াবা-ফেনসিডিল

নিত্য নতুন অভিনব কায়দায় ভারত থেকে কুমিল্লা সীমান্ত দিয়ে দেশের ভেতর পাচার হয়ে আসছে ইয়াবা ও ফেনসিডিল। এর জন্য বেছে নেওয়া হচ্ছে গবাদিপশু, ফল ও সবজি।

বার্তা সংস্থা ইউএনবির এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, সীমান্তবর্তী বিভিন্ন জেলার মতো কুমিল্লা সীমান্ত দিয়েও অপ্রতিরোধ্য গতিতে দেশে ঢুকছে বিপুল পরিমাণ মাদক।

দেশের সীমান্তবর্তী বিভিন্ন জেলার মতো কুমিল্লা সীমান্ত দিয়েও অপ্রতিরোধ্য গতিতে দেশে ঢুকছে বিপুল পরিমাণ মাদক। মাদক চোরাচালানের পাশাপাশি, কুমিল্লাসহ এর আশপাশের জেলাগুলোতে বেড়ে চলেছে মাদকাসক্তের সংখ্যা। প্রতিনিয়ত অভিনব সব কৌশল ব্যবহার করে অব্যাহত রাখা হচ্ছে মাদক চোরাচালান।

মাদক চোরাচালান দমনে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ, মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, পুলিশ ও র‌্যাবসহ বিভিন্ন সংস্থা কাজ করলেও তা নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। সাম্প্রতিক সময়ে মাদক পাচারে নতুন কৌশল নিয়েছে কুমিল্লায় মাদক চোরাচালানকারীরা।

ভারত থেকে রাতে আসা গরুর পেটের সাথে বেঁধে আনা হচ্ছে গাঁজা। চোরাচালানীদের ভাষায় এটি হলো ‘ক্যাটল কেরিং’। বড় পেঁয়াজের ভেতরের অংশ ফেলে দিয়ে তার মধ্যে এবং অভিনব পন্থায় আখের ভেতরে ঢুকিয়ে আনা হচ্ছে ইয়াবা ট্যাবলেট। কনডমের মাধ্যমেও ইয়াবা মানুষের মুখ বা পায়ূপথ দিয়ে পেটে ঢুকিয়ে দেশে আনা হচ্ছে।

এ ছাড়াও কুমিল্লা সীমান্ত দিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই নানা ধরনের মৌসুমী ফল তরমুজ, কাঁঠাল, লাউ, কুমড়ার ভেতর ঢুকিয়ে ভারত থেকে আনা হচ্ছে ফেনসিডিল, ইয়াবাসহ অন্যান্য মাদকদ্রব্য। ছোট-বড় নানা যানবাহনে করেও বিভ্ন্নি কৌশলে ভারত থেকে মাদক আসছে। যা পরবর্তিতে ছড়িয়ে পড়ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে।

প্রতিদিনই পরিবর্তিত হচ্ছে মাদক পাচারের ধরন। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), র‌্যাব, পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থার হাতে হরহামেশা মাদকের চালান ধরা পড়লেও, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে মূল হোতারা। আর মাদকসহ যারা ধরা পড়ছে, তাদের অধিকাংশই বহনকারী। যারা অল্প কিছু টাকার বিনিময়ে বহন করছে সর্বনাশা এসব মাদক।

কুমিল্লা সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে আসা মাদকদ্রব্যের মধ্যে রয়েছে- হেরোইন, গাঁজা, ফেনসিডিল, ইয়াবা, বিয়ার, বিভিন্ন ধরনের মদ, রিকোডেক্স সিরাপ, সেনেগ্রাসহ নানা প্রকার মাদক ও যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট এবং বিভিন্ন ধরনের নেশা জাতীয় ইনজেকশান।

এ বিষয়ে কুমিল্লার মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ মাঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, ‘কিছুদিন আগেও ইয়াবা ট্যাবলেট মিয়ানমার থেকে কক্সবাজার হয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার হতো। বর্তমানে মিয়ানমার থেকে সরাসরি ভারতের ত্রিপুরা সীমান্ত দিয়ে কুমিল্লায় ঢুকছে।’

কুমিল্লা সীমান্তে মাদক চোরাচালান রোধে বিজিবির পাশাপাশি র‌্যাব, পুলিশ ও মাদকদ্রব্য অধিদপ্তর কাজ করছে উল্লেখ করে মাঞ্জুরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘চোরাকারবারীরা নতুন নতুন কৌশল অবলম্বন করলেও, আমরাও পাল্টা কৌশল নিচ্ছি। মাদকসহ তাদেরকে আটক করা হচ্ছে। মাদকদ্রব্য চোরাচালান প্রতিরোধে আমাদের প্রয়াস সার্বক্ষণিক থাকবে।’

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *