ফারাক্কা বাঁধ খুলে দিয়েছে ভারত,বন্যার আশঙ্কা বাংলাদেশে

.jpg

প্রবল বর্ষণে প্লাবনের সৃষ্টি হওয়ায় সোমবার ফারাক্কা বাঁধের সব লকগেট খুলে দিয়েছে ভারত সরকার।

ভারত ফারাক্কা বাঁধের সবগুলো গেট খুলে দেয়ায় দ্রুত পানি বাড়ছে পদ্মায়। এতে রাজশাহী অঞ্চলের বিভিন্ন চর ও নিচু এলাকা প্লাবিত হওয়ায় মানুষের মাঝে বন্যা আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

উত্তর প্রদেশ ও বিহারে রেকর্ড বৃষ্টিতে উপচে পড়ছে বাঁধের জল। ফলে ফরাক্কা ব্যারেজের ১০৯টি লকগেটই আজ খুলে দেয় কর্তৃপক্ষ। এতে নদীর ভাটিতে প্লাবনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তারা বলেছেন, ভারত ফারাক্কা বাঁধের সব গেট খুলে দেয়ায় গঙ্গার পানি চলে আসছে বাংলাদেশের পদ্মা নদীতে। ফলে রাজশাহীতে পদ্মায় পানিপ্রবাহ বিপৎসীমার ১৮ দশমিক ৫০ মিটারের কাছাকাছি চলে এসেছে।

রাজশাহী নগরীর বড়কুঠি পয়েন্টে পাউবোর গেজ পাঠক এনামুল হক বলেন, সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় রাজশাহীতে পদ্মায় প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ১৮ দশমিক শূন্য এক মিটার। এর আগে সকালে প্রবাহ ছিল ১৭ দশমিক ৯০ মিটার। প্রতি ঘণ্টায় অন্তত ২ সেন্টিমিটার করে পানিপ্রবাহ বাড়ছে পদ্মায়।

উজান থেকে নেমে আসা ঢলে পদ্মায় প্রবাহ বেড়েছে বলে জানিয়েছেন রাজশাহী পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ সহিদুল আলম।

তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় পদ্মায় প্রবাহ বেড়েছে ১১ সেন্টিমিটার। এর আগের ২৪ ঘণ্টায় প্রবাহ বেড়েছিল ৬ মিটারের মতো। ভারতের উত্তর প্রদেশ ও বিহারে বৃষ্টিপাতের কারণে প্রবাহ বাড়তে পারে।

তিনি জানান, এর আগে আগামী ৩ অক্টোবর রাজশাহীতে পদ্মার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছিল। কিন্তু এখন যেভাবে পানিপ্রবাহ বাড়ছে তাতে একদিন আগেই তা বিপৎসীমায় পৌঁছে যেতে পারে।

তবে ফারাক্কা বাঁধের সব গেট খুলে দেয়ার বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি এই পাউবো কর্মকর্তা।

এদিকে ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে, দেশটির উত্তর প্রদেশ ও বিহারে গত কয়েক দিনে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে। এতে উপচে পড়ছে পানি। এ কারণেই ফারাক্কা বাঁধের সব গেট একসঙ্গে খুলে দিয়েছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। এর জেরে মুর্শিদাবাদের একাংশ ও বাংলাদেশে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

জানা গেছে, গত কয়েক দিনে গঙ্গা ছাড়াও পশ্চিমবঙ্গের মালদা জেলার প্রায় সব নদনদীতে পানি বাড়ছে। একটানা বর্ষণে ইংরেজ বাজার শহরের একাধিক এলাকা তলিয়ে গেছে। সোমবার ফারাক্কা ব্যারাজের ১০৯টি গেটই খুলে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এর জেরে নদীর নিম্নগতিতে প্লাবনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। পানি বেড়েছে মালদা জেলার ফুলহর, মহানন্দা ও কালিন্দী নদীতে।

ইংরেজ বাজারের ২৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২১টিই প্লাবিত হয়েছে। পুরনো মালদার ২০টি ওয়ার্ডের ৯টি জলমগ্ন। জেলায় একাধিক জায়গায় নদী তীরবর্তী বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা।

 

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *