জনপ্রিয়তা স্বর্ত্তেও জাতীয় রাজনীতিতে আগ্রহ ছিলোনা বাবার, চিন্তা চেতনায় শুধু চট্টগ্রাম-নওফেল

ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল

২৪ ঘন্টা ডট নিউজ। রাজীব,চট্টগ্রাম ডেস্ক : চট্টলবীর, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বর্ষীয়ান আওয়ামী লীগ নেতা, চট্টগ্রাম সিটির সাবেক তিনবারের সফল মেয়র প্রয়াত এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী তার জীবদ্দশাই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক ধারাবাহিতা এবং দলের ভবিষ্যত নিয়ে আজীবন রাজনীতি করেছেন।

বঙ্গবন্ধুর একনিষ্ট কর্মী হিসেবে এবং তার সুযোগ্য কণ্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপর সম্পূর্ণ আনুগত্য রেখে তিনি সবসময় দলের জন্য নিবেদিত প্রাণ ছিলেন। দলের জন্য নিবেদিন প্রাণ হয়ে তিনি জননেতা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

তৃণমুল কর্মী হিসেবে সারাদেশে জাতীয় নেতার পরিচিতি পেয়েছেন। তবে জাতীয় নেতৃত্বে মহিউদ্দিন চৌধুরী কখনো আগ্রহ প্রকাশ করেননি। কারণ তার চিন্তা চেতনায় ছিলো বৃহত্তর চট্টগ্রামে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে আরো সুসংগঠিত করার এবং বৃহত্তর চট্টগ্রামের উন্নয়নের জন্য আজীবন তিনি সংগ্রাম করেছেন, রাজনীতি করেছেন।

প্রয়াত এ নেতার ২য় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে নগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত স্মরণ সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে মহিউদ্দিনপুত্র, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এসব কথা বলেন।

আজ ১৫ ডিসেম্বর রবিবার সকাল ১১টায় কাজীর দেউড়ী ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশনাল সেন্টারে প্রয়াত নেতার স্মরণ সভার আয়োজন করে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ।ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল

নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে স্মরণ সভার প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর অন্যতম সদস্য ও প্রয়াত মহিউদ্দিন চৌধুরীর ঘনিষ্ঠজন সাবেক মন্ত্রী আলহাজ্ব আমির হোসেন আমু।

নওফেল বলেন, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের আয়োতিক এ স্মরণ সভার মাধ্যমে আমার প্রয়াত পিতার স্মতিচারণ যেমন সম্ভব হয়েছে তেমনি আগামী নতুন প্রজন্মের জন্য অনেক শিক্ষনীয় বিষয় আমার পিতৃতুল্য আওয়ামী লীগের অভিভাবক নেতৃবৃদ্ধের আলোচনায় উঠে এসেছে।

আমার বাবার রাজনৈতিক জীবন নিয়ে আলোচনা করবার দৃষ্টতা আমার নেই। তাছাড়া সে অভিজ্ঞতাও আমার হয়নি বলে মনে করছি। আজকের অনুষ্ঠানে আলোচক বৃন্দরে আলোচনাই মূখ্য। তাদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন নওফেল।

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন পরবর্তী ভোটাভুটির মাধ্যমে যে নেতৃত্ব ঘোষণা হয়েছে তা সারা বাংলাদেশে সমাদৃক প্রশংসীত হয়েছে উল্লেখ করে নওফেল বলেন, দলীয় নেতৃত্বে প্রতিযোগীতার চমৎকার সমাপ্তির একটি উদাহরণ হয়ে থাকবে উত্তর জেলা আওয়ামীলীগের এ ভোটাভুটির নেতৃত্ব।

তিনি বলেন, দলীয় নেতৃত্বের প্রতিযোগীতা সবসময় থাকবে সে দলীয় নেতৃত্বে প্রতিযোগীতার সমাপ্তিটাও যেন সুষ্ঠ সুশৃঙ্খলভাবে হয় সে বিষয়টা যেন সকলেই সকল পর্যায়ের নেতৃবৃন্দরা ধারণ করে। কারণ আমরা আমাদের পূর্বসুরিদের জীবনের দিকে যদি তাকাই তাদের জীবনেও দলীয় নেতৃত্বের প্রতিযোগীতা ছিলো কিন্তু দলীয় সাংগঠনিক শক্তির প্রশ্নে দলের প্রয়োজনে তারা কখনো এমন কোন কিছু করেনি যেখানে দলের সাংগঠনিক শক্তি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

নওফেল বলেন, যেকোন মূল্যে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে বাংলাদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় রাখতে সকল পর্যায়ে সকল নির্বাচনে আমাদের সর্ব শক্তি দিয়ে সাংগঠনিক ঐক্য ধরে রাখবার চেষ্টা না করি তবে আজকে আমি আপনি আমাদের প্রতিযোগীতায় ভবিষ্যত প্রজন্ম ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যদি বাংলাদেশের রাজনীতিতে, নির্বাচনী ক্ষমতায় ঐক্যের প্রমাণ দিয়ে বিজয় না আনতে পারে, যদি প্রমাণ করতে না পারে রাজনৈতিক ঐক্যের তবে অস্তিত্ব বিপন্ন হবে। আগামী যে কঠিন সময়গুলো আসছে, বাংলাদেশের অপরাজনৈতিক শক্তি গোপনে ঐক্যবদ্ধ হয়ে উন্নয়নের রাজনীতিকে, শেখ হাসিনার রাজনীতিকে, শেখ হাসিনার ভিশন বাস্তবায়নে ব্যাঘাত ঘটাতে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।

তাই সকলের কাছে আহবান জানিয়ে নওফেল বলেন, আমাদের নিজেদের প্রতিযোগীতার কারণে এ অপরাজনৈতিক শক্তি যাতে কোন ভাবেই সুযোগ নিতে না পারে সেজন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে রাজনীতি করতে হবে। যদি আমরা ঐক্যবদ্ধ না হয়ে রাজনীতির প্রতিযোগীতায় মেতে থাকি তবে আওয়ামীলীগের রাজনীতি টেকশই হবে না।

স্মরণ সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন, আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এমএ সালাম, উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান ও মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম।

নগর আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুকের সঞ্চালনায় প্রয়াত নেতা মহিউদ্দিন চৌধুরীর ২য় মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণ সভায় মঞ্চে উপস্তিত ছিলেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নঈম উদ্দিন চৌধুরী, অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, অ্যাডভোকেট সুনীল সরকার, সহ-সভাপতি ও সিডিএ চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ, বন্দর-পতেঙ্গা আসনের সংসদ সদস্য এমএ লতিফ, মহানগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ও সিডিএর সাবেক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম, অ্যডভোকেট শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী।

এছাড়াও চট্টগ্রাম নগর,উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ এবং তার বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা স্মরণ সভায় অংশগ্রহণ করেন।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *