চট্টগ্রামের রাউজানে বৈদ্যুতিক খুঁটি মাঝখানে রেখে অনুমোদন ছাড়াই গড়ে তোলা হয় দ্বিতল ভবন। ছাদের তিন ফুট উপর দিয়ে নেওয়া তেত্রিশ হাজার ভোল্টেজের বৈদ্যুতিক লাইনে বিদ্যুতায়িত হয়ে শান্ত দত্ত (১৯) নামে এক স্কুল পড়ুয়া পানি সঞ্চালন লাইনের শ্রমিক নিহত হয়েছেন।
জানা যায়, উপজেলার পাহাড়তলী ইউনিয়ন ৭ নম্বর ওয়ার্ডে চুয়েট বঙ্গবন্ধু হলে বিপরীতে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কের সংলগ্ন দক্ষিণে অপরিকল্পিতভাবে অনুমোদন ছাড়াই ভবন নির্মাণ করেন রাঙ্গুনিয়া উপজেলা বেতাগী ইউনিয়ন নিবাসী আব্দুল হক।
গত বুধবার (১২ অক্টোবর) বেলা আড়াইটার দিকে ভবনের ছাদে পানি সঞ্চালন লাইনের কাজ করার সময় লোহার পাইপের সঙ্গে ৩৩ হাজার ভোল্টের তারের স্পর্শ হয়ে বিদ্যুতায়িত হয়। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে ভর্তি করান।
সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ রবিবার ভোর ৫টায় তার মৃত্যু হয়। নিহত শান্ত দত্ত রাউজান উপজেলার পাহাড়তলী ইউনিয়ন দক্ষিণ দেওয়ানপুর গ্রামের কাঞ্চন দত্তের ছেলে ও দেওয়ানপুর এসকে সেন স্কুল অ্যন্ড কলেজের দশম শ্রেণীর ছাত্র। পড়ালেখার পাশাপাশি পানি সঞ্চালন লাইনের কাজ করতেন।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ছাদের তিন ফুট উপরে তেত্রিশ হাজার ভোল্টেজের লাইন গেলেও সংশ্লিষ্টরা তদারক করেনি। ওই ভবনের মালিক প্রবাসে থাকায় অনুমোদন ছাড়াই ভবন নির্মাণে মালিক পক্ষের কারো বক্তব্য পাওয়া যায় নি।
চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর জিএম সরোয়ার জাহান প্রতিবেদককে বক্তব্য দিতে রাজি না হলেও চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ অফিস সূত্রে জানা যায়, বৈদ্যুতিক খঁুটি ঘেষে বিল্ডিং করার বিষয়টি দৃষ্টি গোচরে আসার পর গত ২৯ সেপ্টেম্বর ভবন মালিককে নোটিশ দেয় চট্টগ্রাম পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ২ কর্তৃপক্ষ। ভবন মালিক পাত্তা দেয়নি।
শুধু ওই ভবনের মালিককে নয়, বিদ্যুৎ খঁুটির পাশে যারা ভবন নির্মাণ করছেন তাদের নোটিশ পাঠানোসহ উঠান বৈঠক, সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো হচ্ছে। দুর্ঘটনা কবলিত ওই ভবনে কাচাঘরে ২০২১ সালে মিটার সংযোগ দেওয়া হয়। ভবন নির্মাণ শুরু করেছে চলতি বছরে।
ঘটনার পর গত ১৩ অক্টোবর প্রধান বৈদুতিক উপদেষ্টা ও প্রধান বিদ্যুৎ পরিদর্শক বরাবর তদন্ত প্রতিবেদন পাঠান বিদ্যুৎ অফিস। পাহাড়তলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রোকন উদ্দিন বলেন, উপজেলা পরিষদ বা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে অনুমোদন নেয়নি ভবন মালিক।
ভবনে ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যুৎ খুঁটি দেখে তাদের দ্বিতীয় তলার কাজ না করার পরামর্শ দিলেও তারা আমলে নেয়নি। উল্লেখ্য, বিগত ৭ জুলাই একই ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডে ছাদে দাঁড়িয়ে আম পারার সময় ৫ ফুট দূরে থাকা ১১ হাজার ভোল্টেজ লাইনে স্পৃষ্ট হয়ে সানজিদা চৌধুরী নামে এক তরুণীর মৃত্যু হয়।
৪ বছর পূর্বে চুয়েট এলাকায় একটি দ্বিতল ভবনে ছাদে কাজ করতে গিয়ে ৩৩হাজার ভোল্টেজ লাইনে বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট এক নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু হয়। এছাড়াও মৃত্যুর ঘটনা না ঘটলেও বেশ কিছু ছোট-বড় ঘটনা সংঘঠিত হয়েছে।
২৪ ঘণ্টা / জেআর
Leave a Reply