নৌপথে আসছে ইয়াবার বড় চালান, পাল্টেছে কৌশল

চট্টগ্রামের ইয়াব ব্যবসায়ীরা ইয়াবা পাচারের কৌশলে পরিবর্তন এনেছে। সীমান্তবতীর্ দেশ মায়ানমারের ইয়াবা চট্টগ্রাম—কক্সবাজার মহাসড়ক হয়ে এখন আর বড় চালান পাচার হয়না। ইয়াবা কারবারিরা নতুন ও নিরাপদ ভাবে পথ বেঁচে নিয়েছে মহেশখালীর উপকূলীয় অঞ্চলকে। রাতের আঁধারে নির্ভয়ে নির্বিঘ্নে উপকূলীয় এলাকার কুতুবজোমে খালাস করছে ইয়াবার বড় চালানগুলো এরপর সড়ক বা নৌপথ হয়ে সেগুলো সরাসরি চট্টগ্রামে আসে। কক্সবাজার থেকে সরাসরি বাসে করে ইয়াবা আসছে চট্টগ্রাম যাচ্ছে ঢাকায়ও।

এছাড়া সাতকানিয়া নেমে রাঙ্গুনীয়া হয়ে সড়কপথে চট্টগ্রাম নগরীতে প্রবেশ করছে ইয়াবা। কারবারিরা প্রথমে পটিয়ায় নেমে কর্ণফুলী নদীর ১৪ নম্বর ঘাট ব্যবহার করে ইয়াবা পাচার করছে।

এছাড়া বাঁশখালী হয়ে আনোয়ারা দিয়েও পাচার করা হয় এ মাদক। নৌপথে মহেশখালী থেকে মাছের ট্রলার ও লবণের বোট করে ফিশারি ঘাট এবং পতেঙ্গাসহ নগরীর অলিগলিতে ছড়িয়ে পড়ছে মরণব্যাধি ইয়াবা।

সহজ কৌশলে ইয়াবা পাচারে পুলিশ ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের বিপত্তি বাঁধায় কৌশল পাল্টিয়ে মাদক পাচার হচ্ছে। বিশেষ করে ভোররাতে বিলাসবহুল গাড়িতে করে পাচার হয়, যাতে কেউ সন্দেহ না করে সেজন্য বাচ্চাদেরও সঙ্গে রাখা হয়।

অনেক সময় বাচ্চাদের ডায়াপারে করেও বহন করা হয়। মাদক কারবারিরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দেওয়ার জন্য মাদক পাচারে পরিবহনে নিত্যনতুন কৌশল ব্যবহার করে।

সুক্ষ্ম কৌশল অবলম্বন করতে কারবারিরা গাড়ির সিটের নিচে বিশেষ চেম্বার, জুতা, ছাতা, নিজের পেটে করে, বাচ্চার শরীরে সঙ্গে করে ভ্রমণকারী হিসেবেও ইয়াবা পাচার করছে।

তথ্য নিয়ে জানা গেছে, গত ২৯ মার্চ রাতে কক্সবাজার জেলার সর্ববৃহৎ ইয়াবা চালানটি উদ্ধার করা হয় মহেশখালী পৌরসভার গোরকঘাটা সিকদার পাড়ার মাওলানা জাকারিয়ার পুত্র সালাহ উদ্দীনের পোড়া গাড়ির ভিতর হতে।

উদ্ধারকৃত ইবার সংখ্যা ৬ লাখ ২০ হাজার বলে পুলিশের রেকর্ড সূত্রে জানা যায়। এতোবড় চালান উদ্ধার করা হলেও কার্যত কোন আসামী গ্রেপ্তার না হওয়াতে জনমনে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়।

এদিকে মহেশখালীর দুইটি জেটি ঘাটে প্রশাসনের তেমন কার্যকর তৎপরতা না থাকায় রাতের অন্ধকারে নির্বিঘ্নে টেকনাফ ও মায়ানমার থেকে যে কোন অবৈধ পণ্য ইয়াবাসহ নিয়ে ট্রলার ভীড়তে পারে।

এ সুযোগে ঘাটের লোকজনের সাথে আতাত করে নিরাপদে ইয়াবার চালান লোড আনলোড করা হয়। এই ঘাটে প্রশাসনের নজরদারী বাড়ানো প্রয়োজন বলে মনে করেন সচেতন মহল।

অন্যদিকে গত অক্টোবর মাসে চট্টগ্রাম মহনগর থেকে ৪০ মামলায় ৪৫জন গ্রেফতারের সাথে ৭২ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।

বিভিন্ন জায়গা থেকে গাঁজা উদ্ধার করা হয় ৭ কেজি একই সাথে ৬৯ জনকে গ্রেফতার করে ৬৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দেয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর চট্টগ্রাম কার্যালয়।

এসব তথ্য নিশ্চিত করেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর চট্টগ্রাম কার্যালয়ের উপ—পরিচালক মুকুল জ্যোতি চাকমা।

২৪ ঘণ্টা / জেআর

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *