বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তরিত হয়েছে:সুজন

যারা একসময় বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি বলে উপহাস করতো তারাই আজ বলছে বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে এক আশ্চর্য বিষয় বলে অভিমত প্রকাশ করেন দারুল উলুম কামিল মাদ্রাসার গর্ভনিং কমিটির চেয়ারম্যান বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ আলহাজ্ব খোরশেদ আলম সুজন।

তিনি গতকাল ১৬ ডিসেম্বর সোমবার সকাল ১১টায় দেশের প্রাচীনতম দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দারুল উলুম কামিল মাদ্রাসায় ৪৮ তম মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছিলেন।

এ সময় সুজন বলেন হাজার বছরের শ্রেষ্ট বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তিলে তিলে বাঙালিকে ঐক্যবদ্ধ করেন চ‚ড়ান্ত আন্দোলনের জন্য। ১৯৪৭ সালেই রাষ্ট্রভাষা উর্দু করার ঘোষণা দিয়ে বাঙালির ওপর প্রথম আঘাত হানে পাকিস্তানি শাসকরা। এরপর ১৯৫২ সালে বুকের তাজা রক্তে রাজপথ রাঙিয়ে বাংলার বীর সন্তানেরা মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা করে।

পরবর্তীতে ১৯৬৬ সালের ৬ দফা আন্দোলন এবং ১৯৭০ সালের নির্বাচনের মধ্য দিয়েই স্বাধিকারের চেতনার যে স্ফূরণ ঘটেছিল তা ১৯৭১ সালে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে রূপ নেয়। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে লাখো জনতার সামনে দেওয়া ঐতিহাসিক ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে ভারী অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল নিরস্ত্র নিরপরাধ বাঙালির ওপর। বর্বর হত্যাযজ্ঞে মেতে উঠেছিল তারা।

ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ি থেকে সেই রাতেই তারা বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে। তবে তার আগেই তিনি বাঙালির ওপর পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর গণহত্যা শুরুর বার্তা দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। সেই ঘোষণায় তিনি বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়ে যেতে জনসাধারণের প্রতি আহ্বান জানান।

বঙ্গবন্ধুর সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে বীর বাঙালি হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিরোধ সংগ্রাম গড়ে তোলে। দীর্ঘ ৯ মাস সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালের এই দিনে পৃথিবীর মানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র বাংলাদেশের। আর বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথ ধরে তারই কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে চলছে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা।

ইতিমধ্যে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তরিত হয়েছে। অর্থনীতির এ ধারা অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশ ২০৪১ সালের আগেই বিশ্বের একটি অন্যতম শক্তিশালী অর্থনৈতিক দেশে পরিণত হবে তাই সকলকে এ উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান সুজন।

মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মুহাম্মদ মুহসিন ভূঁইয়া’র সভাপতিত্বে এবং আরবি প্রভাষক মাওলানা মাহবুবুর রহমান এর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আবুল হোসাইন, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাদ্রাসা গর্ভনিং কমিটির সহ-সভাপতি আলহাজ্ব সাহাবউদ্দিন আহমদ।

বক্তব্য রাখেন মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ মাওলানা মাহবুবুল আলম ছিদ্দিকী, মাওলানা হারুনুর রশিদ, রফিকুল ইসলাম প্রমূখ। উপস্থিত ছিলেন মাদ্রাসার গভর্ণিং বডির সদস্য, শিক্ষক-শিক্ষিকা, অভিবাবকসহ সর্বস্তরের ছাত্র ছাত্রীবৃন্দ।

আলোচনা সভা শেষে মাদ্রাসার বার্ষিক ম্যাগাজিন আয-যিকরা-২০১৮-১৯ এর মোড়ক উন্মোচন করেন অতিথিবৃন্দ। পরে দেশ ও জাতির উত্তরোত্তর সাফল্য এবং সমৃদ্ধি কামনায় দোয়া মোনাজাত করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন মাওলানা মুনিরুল মন্নান আল মাদানী।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *