চট্টগ্রামে ১১’শ বছরের পুরনো মসজিদ ও বিরল প্রাণী

মাজারের পাদদেশে সুবিশাল দীঘিতে বাঁশের কঞ্চির মাথায় কেউ খাওয়াচ্ছেন পাউরুটির ছোট ছোট টুকরো কেউবা দিচ্ছেন কলাসহ নানা রকম ফল। আবার কেউ খাওয়াচ্ছেন মাংশ-ডিম কিংবা রান্না করা নানারকম খাবার। মানুষের ডাকে সাড়া দিয়ে মাথা তুলে খাবার গ্রহণও করছে কাছিম। এমন বিরল দৃশ্য দেখা মিলছে এ মাজারে। মাজারের দৃশ্য বা কাছিম দেখতে প্রতিদিন চট্টগ্রামসহ সারাদেশ থেকে হাজারও মানুষ ছুটে আসেন এখানে।

চট্টগ্রামের প্রাচীন স্থাপনা বায়েজিদ বোস্তামীর মাজার। ইরানের বিখ্যাত পার্সিয়ান সুফি হযরত বায়েজিদ বোস্তামী রহমতুল্লাহি আলাইহির নামে গড়ে উঠা এই মাজার চট্টগ্রামের ধর্মপ্রাণ মানুষের পাশাপাশি চট্টগ্রামে আসা দেশী বিদেশী পর্যটকদের জন্যও আকর্ষনীয় স্থান।

এই সমাধির অবয়ব সর্বপ্রথম ১৮৩১ সালে পাহাড়ের উপরিভাগে একটি দেয়ালঘেরা আঙ্গিনার মাঝে আবিষ্কার করা হয়। মনোবাসনায় দর্শনার্থী ও ভক্তরা উপরিভাগ মাজারের পাশে থাকা গাছে বেঁধে দেন সুতো আর আশা পূর্ণ হলে খুলে নেন সে সুতো।

বায়েজিদ বোস্তামি মাজার কমিটির সদস্য ও খাদেম ছৈয়দ মোহাম্মদ আব্দুর রহমান দৈনিক সময়ের কাগজকে বলেন, মাজার প্রাঙ্গণে সুবিশাল এ দীঘিতে কাছিম আছে প্রায় ৭ শ’র মতো।

যার কোনো কোনোটির বয়স ৫০ থেকে ১০০ বছর। ওজনেও হবে ২ থেকে ৩মন। মাজারের এ বিলুপ্তপ্রায় বিরল প্রজাতির প্রাণীকে সংরক্ষণে রাখতে প্রজনন কেন্দ্র খুলে পরিচর্যায় রাখছেন বলেও জানান তিনি।

জানা যায়, সমাধি পাহাড়ের পাদদেশে একটি তিন গম্বুজ বিশিষ্ট মোঘলরীতির আয়তাকার মসজিদ এবং একটি বিশালাকার দীঘি আছে। স্থাপত্যশৈলী থেকে ধারণা করা হয় মোঘল সম্রাট এর আমলে মসজিদটি নির্মিত।

ধারণা করা হয় সুফী সাধক ও আউলিয়াগণ চট্টগ্রামে ইসলাম ধর্ম প্রচারের সময় সচরাচর পাহাড় এর উপরে কিংবা জঙ্গল ঘেরা অঞ্চলে আবাস স্থাপন করেন এবং এসব জায়গাতে মাজার কিংবা এই ধরণের বিভিন্ন স্থাপনা প্রতিষ্ঠা করেন।

সে লক্ষ্যে ১১’শ বছর আগে ইরানের বিখ্যাত সুফি সাধক হযরত বায়েজিদ বোস্তামি রহমতুল্লাহ আলাইহি চট্টগ্রামে এসেছিলেন ধর্ম প্রচারে। তার স্বরণে তৈরি হয়েছে সুবিশাল ঐ মাজার।

২৪ ঘণ্টা / জেআর

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *