অভিনব কৌশলে ভুয়া নিয়োগ প্রক্রিয়া, পিবিআইয়ে জালে সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের ৩ সদস্য ধরা

পিবিআই

২৪ ঘন্টা ডট নিউজ। চট্টগ্রাম ডেস্ক : পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) চট্টগ্রাম মেট্রোর সদস্যদের বিশেষ অনুসন্ধানে ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে গ্রেফতার হয়েছে তিন প্রতারক।

বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় গ্রেফতার তিনজনই অভিনব কৌশলে ভুয়া নিয়োগ প্রক্রিয়ায় জড়িত সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য। সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো’র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মঈন উদ্দিন।

তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ চাকুরি প্রত্যাশীদেরকে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস, চট্টগ্রাম বন্দর ও সেনাবাহিনীতে ভুয়া নিয়োগ প্রক্রিয়ার কথা বলে বড় অংকের টাকা হাতিয়ে প্রতারণা করে আসছিলো।

তিনি বলেন, গত তিন মাস আগে এ প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়ে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে চাকরি প্রত্যাশি সাইফুল ইসলাম, আব্দুল গফুর ও মিলন চক্রবর্তী নামের তিন ব্যাক্তি। তারা এ চক্রের কাছ থেকে ৮ থেকে ১২ লক্ষ টাকার বিনিময়ে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের ভুয়া নিয়োগ পত্রও সংগ্রহ করেছিলো। কিন্তু গত ৮ সেপ্টেম্বর সংশ্লিষ্ট অফিসে গিয়ে তারা প্রতারণার বিষয়টি জানতে পারে এবং প্রশাসনের কাছে প্রতারক আনোয়ারুল হোসেনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগ দায়ের করেন।

অভিযোগের সূত্র ধরে গত ১২ ডিসেম্বর ঢাকা থেকে আটক হয় প্রতারক চক্রটির অন্যতম সদস্য ঝালকাঠির বড় কৈবর্ত্যখালী এলাকার বাসিন্দা রিপন সিকদার (৩০)। পরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে রিপন এ চক্রের আরো দুই প্রতারকের তথ্য দেন। এরপর টানা ৫দিন বিভিন্ন অনুসন্ধানে দুই প্রতারকের অবস্থান নিশ্চিত হয় পিবিআই।

১৭ ডিসেম্বর মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রাম নগরীর পাঠানটুলির হোটেল পূরবীতে অভিযান চালায় পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর সদস্যরা। এসময় ফেনীর দক্ষিণ গুখুমা এলাকার বাসিন্দা প্রতারক চক্রটির সদস্য আনোয়ারুল হোসেন প্রকাশ আতিক (৪৫) ও নারায়ণগঞ্জের চর তালিমাবাদ দক্ষিণ পাড়ার বাসিন্দা মো. তোফাজ্জল হোসেন (৫৪)কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পিবিআই সদস্যরা।

গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে বেশকিছু ভুয়া নিয়োগপত্র, প্রবেশপত্র, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্র, পেনড্রাইভসহ প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।

গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রতারক চক্রের সদস্যরা জানিয়েছে তারা এ পর্যন্ত চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের নিয়োগপত্র দিয়েছেন ২৩ জনকে। ২০ জনকে দিয়েছেন পুলিশ ক্লিয়ারেন্স পত্র, ২১ জনকে নিয়োগপত্র, চট্টগ্রাম বন্দরে ১ জনের নামে নিয়োগপত্র ও পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে ৪ জনের নামে নিয়োগপত্র ও এনবিআরে ২৭ জনের নামে নিয়োগপত্র দিয়েছে চক্রটি।

জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানায়, গত ২০১৫ সাল থেকে তারা নিজেরাই বিভিন্ন পদের জন্য ভুয়া প্রবেশপত্র, প্রশ্নপত্র, উত্তরপত্র, পুলিশ ভেরিফিকেশন, নিয়োগপত্র বানিয়ে হোটেলে এনে নিয়োগপ্রার্থীর পরীক্ষা নেন। নিয়োগপ্রার্থীরা দাবীকৃত সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ করার পর তাদের হাতে কথিত নিয়োগপত্রটি ধরিয়ে দেন।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *