মিশরীয়রা ‘রোসেটা পাথর’ ফেরত চায় ব্রিটিশদের কাছ থেকে  

মিশর ও অন্যান্যদেশ ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার বিভিন্ন জাদুঘর থেকে ঐতিহ্য ফিরে পাওয়ার দাবি করছে।কয়েক হাজার মিশরীয় পুনরায় তাদের ঐতিহ্য ‘রোসেটা পাথর’ ফিরে পাওয়ার জন্য দাবি তুলেছেন। পাথরটি ব্রিটিশ মিউজিয়ামে রক্ষিত আছে।

আরব একাডেমি ফর সায়েন্স, টেকনোলজি অ্যান্ড মেরিটাইম ট্রান্সপোর্টের ডিন ও পাথরটি ফিরে পেতে দুইটি পিটিশনের একটি দায়ের করা মনিকা হান্না বলেন, ব্রিটিশ মিউজিয়ামের কাছে থাকা পাথরটি মিশরের বিরুদ্ধে পশ্চিমা সাংস্কৃতিক সহিংসতার প্রতীক।

রোসেটা পাথর হলো একটি ফলক। ধূসর গ্রানাইট এই ফলকের ওপর তিনটি ভাষায় একটি ফরমান বা আদেশ খোদাই করা রয়েছে। প্রাচীন মিশরীয় হায়ারোগ্লিফিকসের পাঠোদ্ধারের প্রাথমিক অগ্রগতি এ থেকেই পাওয়া যায়।

ব্রিটেন ও ফ্রান্সের মধ্যকার যুদ্ধের সময় রোসেটা পাথরটি ক্রোক হয়। মিশরে নেপোলিয়ন বোনাপার্টের সামরিক দখলের পর ফ্রান্সের সৈন্যরা ১৭৯৯ সালে পাথরটি খুঁজে পায়। মিশরের উত্তরাঞ্চলের শহর রশিদে পাথরটি পাওয়া যায়।

১৮০১ সালে ব্রিটিশরা মিশরে ফ্রান্সের সৈন্যদের পরাজিত করে। সে সময় রোসেটা পাথরসহ বেশ কিছু পুরাকীর্তি আত্মসমর্পণ চুক্তির শর্তানুযায়ী ব্রিটিশরা নিয়ে যায়। এরপর থেকেই রোসেটা পাথরটি ব্রিটিশ মিউজিয়ামে রয়েছে।

পাথরটি ফিরে পেতে হান্নার করা পিটিশনে চার হাজার ২০০ জনের সই রয়েছে। পিটিশনে বলা হয়েছে, পাথরটি দখলে নেওয়া ছিল যুদ্ধের মালামাল লুণ্ঠনের একটি কাজ।

আরেকটি পিটিশনে পাথরটি পাওয়ার দাবি তুলেছেন মিশরের সাবেক মন্ত্রী জাহি হাওয়াস। পিটিশনটিতে এক লাখেরও বেশি সই রয়েছে। দুটি পিটিশনই যুক্তি দিয়ে প্রমাণ করেছে যে, ১৮০১ সালের চুক্তিতে মিশরের কিছু বলার ছিল না।

এক বিবৃতিতে ব্রিটিশ মিউজিয়াম বলেছে যে, ১৮০১ সালের চুক্তিতে একজন অটোমান অ্যাডমিরালের সই ছিল, যিনি ফরাসিদের বিরুদ্ধে ব্রিটিশদের পাশাপাশি লড়েছিলেন। এর মাধ্যমে এটিই প্রমাণিত হয় যে, তিনি মিশরের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন, যেহেতু নেপোলিয়নের আগ্রাসনের সময় অটোমান সুলতানরা কাগজে—কলমে মিশরের শাসনভারে ছিলেন।

ব্রিটিশ মিউজিয়াম বলেছে যে, মিশর সরকার পাথরটি ফিরে পাওয়ার জন্য কোনো আবেদন জানায়নি। খোদাই করা আদেশের ২৮টি কপির ২১টিই মিশরে এখনও রয়েছে।

মিশরের সাবেক মন্ত্রী জাহি হাওয়াস বলেন, রোসেটা পাথর মিশরীয় পরিচিতির প্রতীক। মিডিয়া এবং বুদ্ধিজীবীদের মাধ্যমে ব্রিটিশ মিউজিয়ামকে বলব তাদের কোনো অধিকার নেই।

২৪ ঘণ্টা / জেআর

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *