ছাত্রলীগের ৩০তম জাতীয় সম্মেলন আজ

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগের ৩০তম জাতীয় সম্মেলন আজ মঙ্গলবার। আজ সকাল সাড়ে ১০টায় ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এই সম্মেলন শুরু হবে। সম্মেলনে প্রধান অতিথি থাকবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্রে জানা যায়, আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে সংগঠন গোছাতে পারবে—এমন নেতৃত্ব আসবে ছাত্রলীগে। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ যাঁদের দেওয়া হবে, তাঁদের পারিবারিক রাজনৈতিক পরিচয় গুরুত্ব পাবে।

আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্রে জানা যায়, ছাত্রলীগে শিবির, স্বাধীনতাবিরোধী পরিবারের সদস্যদের অনুপ্রবেশ নিয়ে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায় ক্ষুব্ধ। ফলে এবারের নেতৃত্ব নির্বাচনে পারিবারিক রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার বিষয়টি গুরুত্ব পাবে।

এবার ছাত্রলীগের নেতা নির্বাচনে বয়সসীমা কত হবে, তা নিয়ে নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক আলোচনা রয়েছে। ছাত্রলীগের গত চার সম্মেলনে নেতাদের বয়সসীমা ২৯ বছর পর্যন্ত ছিল। তবে এবার বয়সসীমা কিছুটা শিথিল হতে পারে। কভিড মহামারির কারণে এমন সিদ্ধান্ত আসতে পারে। ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ড দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা কালের কণ্ঠকে এমনটা জানিয়েছেন।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ছাত্রলীগের বয়সসীমার বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তিনি সম্মেলনের মঞ্চে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবেন। তবে বয়সের বিষয়ে কভিড মহামারির বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়ার আলোচনা আছে দলের মধ্যে।

আওয়ামী লীগের একটি সূত্র জানায়, ছাত্রলীগের নেতা নির্বাচনের ক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতারা বিশেষ গুরুত্ব পেয়ে থাকেন। এবারে বুয়েট এবং ঢাকার বাইরের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতাদেরও গুরুত্ব দেওয়ার দাবি উঠেছে দলের অভ্যন্তরে।

জাতীয় সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব পেতে যাচ্ছে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি, ঢাকা মহানগর উত্তর, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কমিটি। জাতীয় সম্মেলনের পর একসঙ্গে এই চার কমিটি ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

এরই মধ্যে এই চার কমিটিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে আগ্রহী পদপ্রত্যাশীদের জীবনবৃত্তান্তসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমাদান প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। চারটি কমিটির আটটি পদের জন্য ৮৬৮ জন পদপ্রত্যাশী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার পদপ্রত্যাশীদের মনোনয়নপত্র নভেম্বরের ২৬ থেকে ২৯, ঢাবি শাখার মনোনয়নপত্র ২ ডিসেম্বর এবং কেন্দ্রীয় কমিটির মনোনয়নপত্র ৩০ নভেম্বর থেকে ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত সংগ্রহ করা হয়।

কেন্দ্রীয় কমিটিতে সভাপতি পদে ৯৬ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ১৫৮ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। ঢাকা মহানগর উত্তর কমিটিতে সভাপতি পদে ১০২ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ৮৫ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তবে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ কমিটিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে ১৮২টি মনোনয়ন সংগ্রহ করা হলেও সভাপতি পদে ৮৩টি এবং সাধারণ সম্পাদক পদে ৭০টি মনোনয়নপত্র হাইকমান্ডে জমা দেওয়া হয়েছে।

ঢাবি কমিটিতে অন্য কমিটির মতো সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে আলাদা মনোনয়নপত্র জমা নেওয়া হয়নি। এই কমিটিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে ২৪৫টি মনোনয়নপত্র জমা নেওয়া হয়েছে।

মনোনয়নপত্র বিক্রি করে ছাত্রলীগের তহবিলে জমা হয়েছে ২৬ লাখ সাত হাজার টাকা।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *