ইমো ব্যবহারকারীরা ব্ল্যাকমেইলের শিকার হচ্ছে

একাধিক নারী চক্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সক্রিয়। ইমোতে প্রতারণা করে মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। সিআইডির সাইবার টিমের কাছে এমন অভিযোগ রয়েছে। সিআইডির অনুসন্ধানে উঠে এসেছে প্রতারক চক্র প্রথমে বন্ধুত্বের সম্পর্ক পাতিয়ে ইমোতে যোগাযোগ করে ঘনিষ্ঠ হয়। সম্পর্কের এক পর্যায়ে তাদের একান্ত সময়ের ভিডিও আর আপত্তিকর ছবি ধারণ করে। ভিডিও কলে আপত্তিকর কন্টেন্ট কৌশলে ধারন করে অনলাইনে ফাঁস করে দেওয়ার ভয় দেখায়। এমন ভিডিও দিয়ে ব্ল্যাকমেইলিং করে টাকা হাতিয়ে নেয় চক্রের সদস্যরা। এমনকি চক্রের সুন্দরী নারীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেক গুলো আইডি ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পর এসব আইডি গুলো পুরোপুরি নষ্ট করে দেয় যাহাতে তাদের বিরুদ্ধে কোন আইনী ব্যবস্থা নেওয়া না যায়।

এ ব্যাপারে চট্টগ্রামের এসএসপি মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ খালেদ বলেন, এদের মূল টার্গেট হচ্ছে ব্ল্যাকমেলিংয়ের মাধ্যমে অর্থ আদায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে তারা ব্যবহার করে। কারণ আইটি বিষয়ে অনেকেরই অজানা। ফলে ইমো বা ম্যাসেঞ্জারে আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করে ভাইরাল করতে পারলেই তাদের মিশন সাক্সেসফুল।

চট্টগ্রামের সিআইডি দফতর সূত্রে জানা গেছে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয়ের একজন চিকিৎসক সাইবার পুলিশ সেন্টারের ফেসবুক পেজে সম্প্রতি একটি অভিযোগ করেন। অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি তার এবং তার প্রাক্তন স্ত্রী মারিয়া ইসলাম নিকিতার একান্ত মূহুর্তের ভিডিও তার টেলিগ্রাম এবং তার বর্তমান স্ত্রীর ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে পাঠিয়ে দেয়। এমনকি আপত্তিকর ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তার কাছে টাকা দাবি করে। ফলে ব্ল্যাকমেইল হওয়ার সম্ভাবনায় ঢাকাস্থ সিআইডির সাইবার সেন্টারে অভিযোগ করেছেন।

সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) অভিযোগের ভিত্তিতে ও ব্ল্যাকমেলিংয়ের কারণে গত ৫ ডিসেম্বর ঢাকার কাফরুল হতে তমালিকা আক্তার এবং চট্টগ্রামের খুলশি থানা এলাকা হতে আবু সাঈদ রনিকে গ্রেফতার করে। এসময় তাদের কাছ থেকে পর্নোগ্রাফির কাজে ব্যবহৃত দুইটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। এই দুটি ফোনে অনেকগুলো আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও পাওয়া গেছে। যেগুলো দিয়ে তারা আগামীতে ব্ল্যাকমেলিং করার জন্য সংরক্ষণ করেছে বলে সিআইডির কাছে স্বীকার করেছে।

আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা গেছে, তমালিকা আক্তার ও অভিযোগকারীর প্রাক্তন স্ত্রী মারিয়া ইসলাম নিকিতা পরস্পর বন্ধু । তারা দুজনেই ইমোতে এবং ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে ভিডিও কলের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তিদের সাথে টাকার বিনিময়ে ভিডিও সেক্স করে। এই অভিযোগকারীর সাথে মারিয়া ইসলাম নিকিতা ভিডিও কলে আপত্তিকর মুহুর্ত থারন করে। সেই রেকডকৃত ভিডিও দেখিয়ে পরে ব্ল্যাকমেইল করে।

এমনকি অভিযোগকারীকে বিবাহ করতে বাধ্য করে। পরবর্তীতে তাদের মধ্যে ডিভোর্স হয়ে গেলে মারিয়া ইসলাম নিকিতা তার বন্ধু গ্রেফতারকৃত তমালিকা আক্তারকে বর্ণিত ভিডিওটি সরবরাহ করে। তমালিকা আক্তার আবার এই ভিডিও চট্টগ্রামে তার প্রেমিক আবু সাঈদ রনিকে সরবরাহ করে। আবু সাঈদ রনি এই ভিডিও অভিযোগকারী এবং তার বর্তমান স্ত্রীকে টেলিগ্রাম ও ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে পাঠিয়ে তাদের কাছে টাকা দাবি করে তাদেরকে ব্ল্যাকমেইল করে। জিজ্ঞাসাবাদে তারা আরো জানায়, তারা পরস্পর যোগসাজসে ঢাকা এবং চট্টগ্রামে অবস্থান করে অনেকের সঙ্গে ইমো্ এবং ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে আপত্তিকর ভিডিও করে। এর আগেও ব্ল্যাকমেইল করে প্রতারণা করে বিপুল পরিমাণ টাকা আত্নসাৎ করেছে।

২৪ঘণ্টা/জেআর

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *