সাতকানিয়ায় ৬ বছর বয়সী শিশু ধর্ষণ

বার্ষিক পরীক্ষা শেষে বাড়ি ফেরার পথে টাকা ও চকলেট দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় ফোরকানিয়া মাদ্রাসায় শিশু শ্রেণি পড়ুয়া ছয় বছর বয়সী এক কন্যা শিশুকে (ছদ্মনাম-সানি আক্তার) ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলার খাগরিয়া ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড সাঙ্গুনদী তীরবর্তী ভরাখাল এলাকায় ঝোপ-ঝাড়ের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে খাগরিয়া ইউনিয়নের গণি পাড়া বক্কর বাড়ির মৃত সোনা মিয়ার ছেলে অভিযুক্ত মো. ইউচুপ ও তার পরিবার ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়।
ঘটনাটি এলাকায় জানা-জানি হলে আজ (৭ ডিসেম্বর)বুধবার সকালে থানা পুলিশ ধর্ষিতা শিশুটি’কে রক্তাক্ত অবস্থায় তার বাড়ি থেকে উদ্ধার করে প্রথমে দোহাজারী হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করেন চিকিৎসকরা। ঘটনার পর থেকে ধর্ষক পলাতক রয়েছেন। গতকাল(৭ ডিসেম্বর)বুধবার সকালে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ধর্ষককে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবীতে এলাকায় মিছিল বের করেন।
ধর্ষিতা শিশুটির মা বলেন, আমার মেয়ে খাগরিয়া ফৌজদার ঘোনা নুরানী মাদ্রাসার শিশু শ্রেণির শিক্ষার্থী। ঘটনার দিন দুপুর ২টার দিকে আমার মেয়েটি হাতে একটি ১০টাকার নোট নিয়ে কেঁদে কেঁদে ঘরের দিকে আসছিল। তার হাতে টাকা দেখে মেয়েকে আমি বেত দিয়ে মারধর করি। পরে ঘরে নিয়ে কান্নার কারণ জিজ্ঞাসা করলে সে আমাকে পুরো ঘটনা খুলে বলে। এ বছর আমার মেয়েটি বার্ষিক পরীক্ষা দিচ্ছিল। প্রচুর রক্ত ক্ষরণে ঘটনার রাতে আমার মেয়ের গায়ে জ্বর উঠে যায়। এ বিষয়ে আমি থানায় অভিযোগ করব এবং ধর্ষণকারীকে গ্রেপ্তার করে ফাঁসি দেওয়ার দাবী জানাচ্ছি।
খাগরিয়া ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. মহসিন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমাকে বুধবার সকালে চৌকিদার রফিক ফোন করে বলে, তার নাতনী ধর্ষণের শিকার হয়েছে। সকালে চেয়ারম্যান সাহেবকে অবগত করে সাথে পুলিশ ও এলাকার লোকজন নিয়ে আমি শিশুটির বাড়িতে গিয়ে উদ্ধার করে দোহাজারী হাসপাতালে নিয়ে যায়। তিনি আরও বলেন, ধর্ষক ও তার আত্মীয়রা এলাকায় প্রভাবশালী হিসেবে পরিচিত। ঘটনার দিন রাতে তারা শিশুটির পরিবারকে টাকা ও হুমকি-ধমকি দিয়ে চাপে রাখতে চেয়েছিল। কিন্তু শিশুটির প্রচুর রক্তক্ষরণ শুরু হলে, শিশুটির মায়ের কান্নায় এলাকায় জানাজানি হয়ে যায়।
এ ব্যাপারে খাগরিয়া ইউনিয়ন ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি আবু বক্কর বলেন, ধর্ষক ইউচুপের এমন ঘটনার নজির এলাকায় আগেও রয়েছে। প্রভাবশালী হওয়ায় এলাকার লোকজন সাহস করে মুখ খুলেনা। আমরা এ ঘটনায় কুলাংগার ধর্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিসহ ফাঁসির দাবী জানাচ্ছি। আজ বুধবার এলাকার লোকজন ধর্ষকের ফাঁসির দাবীতে মিছিল করেছেন।
দোহাজারী হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সায়েরা বেগম বলেন, শিশুটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চমেক হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে পাঠানো হয়েছে।
সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারেক মুহাম্মদ আবদুল হান্নান বলেন, ধর্ষণের শিকার শিশুটিকে চমেক হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। শিশুটির অভিভাবকরা মামলা দিলে তা রুজু করা হবে। ধর্ষককে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের ২টি টিম কাজ করছেন।

২৪ঘণ্টা/জেআর

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *