চট্টগ্রামের আনোয়ারা পারকি সমুদ্র সৈকতে ৭২ কোটি টাকা ব্যয়ে পর্যটন কমপ্লেক্সের নির্মাণাধীন সেই প্রাচীর উদ্বোধনের আগে হেলে পড়ল। গত বৃহস্পতিবার রাতে নির্মাণাধীন প্রাচীরটি হেলে পড়ে। নির্মাণকাজে অনিয়ম-দুর্নীতি ও লবণাক্ত পানি ব্যবহারের কারণেই এমনটি হয়েছে বলে মনে করছেন এলাকাবাসী। তবে হেলে পড়ার পর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স দেশ লিংক ও রাজ কর্পোরেশনের প্রতিনিধিরা কাজটি তাদের নয় বলে জানান। পর্যটন কমপ্লেক্সের চট্টগ্রামের উপ ব্যাবস্থাপক মো. ছরোয়ার উদ্দিন প্রাচীর হেলেপড়ার বিষয়টা তদন্ত করবেন বলে জানান।
সরেজমিনে গিয়ে দেখাযায় পর্যটন কমপ্লেক্সের উত্তর পাশের সীমানা প্রাচীরটি হেলে পড়েছে। এটি রক্ষায় কাজ করছেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকরা। স্কাভেটর দিয়ে দেওয়ালের বালি সরানো হচ্ছে।
জানাযায়, পারকি সমুদ্র সৈকতকে অধুনিকায়নের লক্ষে পর্যটন কর্পোরেশনের উদ্যোগে ২০১৮ সালে ১৩ দশমিক ৩৬ একর জমিতে ৬২ কোটি টাকা বরাদ্ধ নিয়ে শুরু হয় পর্যটন কমপ্লেক্স নির্মাণ কাজ। প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ ছিল ২ বছর। নিয়াজ ট্রেডার্স, দেশ লিংক লিমিটেড ও রাজ কর্পোরেশন নামে তিনটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান যৌথ ভাবে এ কাজ শুরু করে করেও ২০ শতাংশ কাজও শেষ করতে না পারায় মেয়াদ বাড়ানো হয় ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। আর বরাদ্ধ বাড়িয়ে করা হয় ৭১ কোটি ২৫ লখ। কিন্তু মেয়াদ বরাদ্ধ দুইটি বাড়িয়েও ৬০ শতাংশ কাজও শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কর্তৃপক্ষ প্রকল্পের বিল্ডিং কনস্ট্রাকশনের ৬০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে দাবী করলেও মুলত কাজ শেষ হয়েছে ৫০ শতাংশ। কিন্তু নির্মাণ কাজে নি¤œমানের সামগ্রী ও সাগরের লবনাক্ত বালি আর পানি ব্যবহারের কারনে গুণগতমান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে স্থানীয়রা।
গত বৃহস্পতিবার রাতে ভরাট কাজে সমুদ্রের লবণাক্ত পানিযুক্ত বালুর চাপে হেলে পড়েছে সীমানা প্রাচীরটি। শ্রমিকরা জানায় বালির চাপে প্রাচীরটি হেলে পড়েছে। তবে নির্মাণ কাজে নিয়োজিত ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান দেশ লিংক ও রাজ কর্পোরশন তারা প্রাচীর নির্মাণ কাজ করছেনা বলে জানায়।
মেসার্স দেশ লিংকের স্বত্তাধিকারী মাসুদ আলম বলেন, আমরা কটেজ ও মাল্টিপারপাস ভবনের কাজ করছি। প্রাচীর নির্মাণের কাজ করেছেন রাজ কর্পোরেশন নামে একটি ঠিকাদার। কাজ বন্ধ রাখার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভবনের নকশা পরিবর্তনের কারনে কাজ একটু ধীরগতিতে চলছে। মেয়াদ আবারও ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
তবে রাজ কর্পোরেশনের স্বত্তাধিকারী সুজন সিংহ বলেন, গাইড ওয়াল কাজটি আমরা করি নাই। এটি দেশ লিংক করেছেন। উদ্বোধনের আগে যখন গাইড ওয়াল ধসে যাওয়ায় তারা বিষয়টি অস্বীকার করছেন এখন।
বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন (বাপক) চট্টগ্রামের উপ ব্যাবস্থাপক মো. ছরোয়ার উদ্দিন বলেন নিম্নমানের সামগ্রী ও লবণাক্ত পানি ব্যবহারের বিষয়টি আমাদের জানা ছিলনা। হয়ত এই কারনেই প্রাচীরটা হেলেপড়তে পারে। বিষয়টি আমি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।
২৪ঘণ্টা/জেআর
Leave a Reply