রাঙ্গামাটির পার্বত্য অঞ্চল পর্যটকদের কারনেই দিগন্ত জোড়া নাম। বিশ্বের এমন কোন স্থান নেই যাহার সঙ্গে তুলনা করা যাবে রাঙ্গামাটি পার্বত্য অঞ্চলের। পৌরসভার ময়লা আবর্জনার ডিপোর জন্য নান্দনিক ৫ একর জায়গার খতিয়ান জারি করে নেওয়া হয়েছে। এমন তথ্যের সত্যতা মিলেছে খতিয়ান থেকে। এমন পরিস্থিতিতে বন্ধ হয়ে যাবে স্কুল ও উপসনালয়। অতিষ্ঠ হবে জনজীবন। শিক্ষা বিমুখ হবে শিক্ষার্থীরা।
এদিকে জেলার শুকুরছড়ির ত্রিদিব নগরে প্রায় আড়াই’শ উপজাতি পরিবারের মধ্যে উচ্ছেদ আতংক বিরাজ করছে। গত কয়েকমাস ধরে জেলা প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্ত বাতিলে প্রতিনিয়ত মানববন্ধন করছে আতঙ্কগ্রস্থ পরিবারগুলো। মানববন্ধন থেকে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন আতঙ্কগ্রস্থ উপজাতি পরিবারগুলো।
অভিযোগ রয়েছে, রাঙামাটি পৌরসভার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন উপ-প্রকল্প স্থাপনে ভূমি অধিগ্রহণে কথা ছিল পৌরসভার ভেতরেই। কিন্তু অদৃশ্য হস্তক্ষেপের কারনে তা পৌরসভা থেকে প্রায় ১৬ কিলোমিটার দূরে নেওয়া হচ্ছে। জেলার শুকুরছড়ির ত্রিদিব নগরের অনির্বান চাকমার কাছ থেকে তৃতীয় শ্রেণির পাহাড়ি ৫ একর ভূমি ১০ লাখ টাকায় কিনে নেয় একটি চক্র। পরে মন্ত্রণালয় থেকে জেলার ময়লা ডাম্পিংয়ের ভূমি ক্রয়ের অনুমতিপত্র পাওয়ার পরই চক্রটি সক্রিয় হয়ে উঠে। চক্রটি মাত্র ১০ লাখ টাকার সেই পাহাড় চার কোটি ৩৭ লক্ষ ৩০ হাজার ২৪৫ টাকা মূল্যে পৌরসভাকে গছিয়ে দেয়। এতে সরকারের গচ্চা গেছে চার কোটি ২২ লক্ষ টাকা। শেষতক বন্দোবস্তি সম্পন্ন করে সংঘবব্ধ চক্রটি।
জানা গেছে, রাঙামাটির নানিয়ারচর ও সদর উপজেলার সীমানা এলাকার শুকুরছড়ি মৌজার ত্রিদিব নগরে। এখানে দুইটি উপজাতি পাড়ায় প্রায় আড়াই ক্ষুদ্র-নৃ গোষ্ঠি পরিবার বংশ পরস্পরায় বসবাস করছে। প্রস্তাবিত ডাম্পিং স্টেশনের মধ্যে শুকরছড়ির ১নং ওয়ার্ড ও অপরটি ৬নং ওয়ার্ডে রয়েছে নানা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও উপসনালয়। এছাড়াও মাত্র দুইশ’ গজের ব্যবধানে এই দুটি জনবসতি।
আবার এরমধ্যে রয়েছে নয়নাভিরাম রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি সড়ক। এবার সেই দুই পাড়ার মধ্যেই রাঙামাটি পৌরসভার ময়লা ডাস্পিং উপ-প্রকল্পের জন্য চার একর পাহাড় ক্রয় (অধিগ্রহণ) করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ভূমি অধিগ্রহনের জন্য জরিপসহ প্রয়োজনীয় কার্যাদি সম্পন্ন করেছে জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ শাখা। কয়েকদিনের মধ্যে ভূমি মালিককে ক্ষতিপূরণ বাবদ মূল্য পরিশোধ করে জমি ও জমির দলিলপত্র পৌরসভাকে আনুষ্ঠানিকভাবে বুঝিয়ে দেওয়ার তোড়জোর প্রস্তুতি চলছে। এরপরই শুরু হবে ডাম্পিং স্টেশন স্থাপনের পরবর্তি কার্যক্রম।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ১৬ কিলোমিটার দূরের রাঙামাটি পৌরসভার ময়লার ডাম্পিং উপ-প্রকল্পের জন্য ভূমি কেনা হয়েছে এই দুই পাড়ার মধ্যে। পৌরসভার বর্জ্য এখানে ডাম্পিং করা হলে পাড়ার বাসিন্দাদের জীবন-জীবিকা বিভিষিকাময় করে তুলবে। ধ্বংস হয়ে যাবে এলাকার মানুষের দৈনিন্দন জীবনের ব্যবহারের পানির উৎস। বন্ধ হয়ে যাবে পাহাড় স্কুল, প্যাগোডাসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান।
এই বিষয়ে রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, শুকুরছড়ির ত্রিদিব নগরে রাঙামাটি পৌরসভার ময়লার ডাম্পিং উপ-প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণের ফাইলপত্র আমি এখানে যোগদানের আগ থেকেই বিষয়টি প্রসেস করা। আমি আসার পর প্রশাসনিক নিয়মে তা অগ্রগতি করেছি। এরমধ্যে ডাম্পিং স্টেশন সেখানে না করার দাবি জানিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা একটি আবেদন দিয়েছে। সেটা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
২৪ঘণ্টা/জেআর
Leave a Reply