চীনে করোনা ঠেকাতে কিনছে লেবু 

চীনের বিভিন্ন রাজ্যে করোনা সংক্রমণ আবারও বাড়েছে। বিক্ষোভের জেরে এরই মধ্যে কোভিড জিরো পলিসি কিছুটা শিথিল করেছে শি জিনপিংয়ের সরকার। এবার করোনা প্রতিরোধে শরীরের ইমিউনিটি বাড়াতে লেবু কিনতে বাজারে ছুটছেন চীনা নাগরিকরা।

ওয়েন নামে চীনের এক কৃষক জানান, লেবুর বাজারে আগুন লেগেছে। তিনি সিচুয়ান প্রদেশের অ্যানুই কাউন্টির বাসিন্দা। এবার ১৩০ একর (৫৩ হেক্টর) জমিতে লেবু চাষ করেছেন। এই প্রদেশটিতে চীনের ৭০ শতাংশ ফল উৎপাদন হয়। গত সপ্তাহে তার একদিনে বিক্রি হয়েছে ২০ থেকে ৩০ টন লেবু, যা আগে ছিল মাত্র ৫ বা ৬ টন। শুধু তাই না চড়া দামে বিক্রি করছেন লেবু।

বেইজিং ও সাংহাইয়ের মতো শহরগুলোতে ওয়েনের লেবুর চাহিদা বাড়ছে, যেখানে লোকেরা মহামারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তাদের ইমিউনিটি বাড়াতে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার কিনতে ছোটাছুটি করছেন। সর্দি ও ফ্লুর ওষুধ কম থাকায়, একজন অপ্রস্তুত সাধারণ মানুষ গত তিন বছর ধরে কোভিড জিরো নীতিগুলো থেকে সরকারের আকস্মিকভাবে সরে যাওয়ার সঙ্গে লড়াই করতে বাধ্য হচ্ছে।

তবে ভিটামিন সি খেলেই যে করোনা সেরে যাবে তার কোনো যৌক্তিক প্রমাণ এখনও নেই।

ওই কাউন্টির আরও এক কৃষক লিউ ইয়ানজিং জানান, গত চার থেকে পাঁচ দিনে লেবুর দাম দ্বিগুণ হয়েছে দেশটিতে। লিউ জানান, দিনে ১৪ ঘণ্টা ধরে কাজ করছেন তিনি এবং অর্ডার নিতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন সারাদেশ। তিনি জানান, সর্বশেষ দাম বাড়ার আগে, লেবু প্রতি আধা কেজি ২ বা ৩ ইউয়ানে বিক্রি হতো। এখন দাম ৬ ইউয়ান।

স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো বলছে, ডিংডং মাইকাই, একটি ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম যারা তাজা ফল বিক্রি করে, তারা বলছে কমলা ও নাশপাতিসহ অন্যান্য ফলের বিক্রিও বাড়ছে। চীনা নাগরিকের অনেকেই ধারণা করেন, ঠান্ডা ও মিষ্টি ফল আপনি অসুস্থ হলে ক্ষুধা ও রুচি বাড়ায়। আলিবাবা গ্রুপ হোল্ডিং লিমিটেডের মালিকানাধীন একটি গ্রোসারিতে পণ্যের বিক্রি প্রায় ৯শ শতাংশ বেড়েছে।

গত মাসেও, চীনের ফল ও সবজি চাষিরা পরিবহন সংকটের কারণে উৎপাদিত ফল নিয়ে বিপাকে পড়েন। দেশে কঠোরভাবে ভাইরাস নিয়ন্ত্রণের প্রভাবের কারণে প্রচুর পরিমাণে তাজা ফল জমাও থেকে যায়।

ওয়েনের মতে, অ্যানুইর গ্রামগুলোতে লেবুর দাম প্রায় শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছিল কারণ বিক্রি করার জন্য কোনও দেশীয় বা রপ্তানি বাজার ছাড়াই মজুদ করা হয়, যার ফলে কৃষকদের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এখন সব বদলে গেছে।

২৪ঘণ্টা/জেআর

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *