প্রথম দিনে ২২৭ রানে অলআউট বাংলাদেশ

মোমিনুল হকের হাফ-সেঞ্চুরির পরও ভারতের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের প্রথম দিন ৭৩ দশমিক ৫ ওভারে ২২৭ রানে অলআউট হয়েছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। এ ভেন্যুতে ভারতের বিপক্ষে টেস্টে নিজের সর্বোচ্চ ৮৪ রান করে আউট হন টাইগারদের সাবেক অধিনায়ক মোমিনুল।

বাংলাদেশের ইনিংস শেষে ব্যাট হাতে নেমে ৮ ওভারে বিনা উইকেটে ১৯ রান করেছে ভারত। ১০ উইকেট হাতে নিয়ে ২০৮ রানে পিছিয়ে ভারত।

মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্বান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।

চট্টগ্রাম টেস্টের একাদশ থেকে দু’টি পরিবর্তন আনে বাংলাদেশ। ইয়াসির আলি ও এবাদত হোসেনের পরিবর্তে একাদশে নেয়া হয়েছে ব্যাটার মোমিনুল হক ও পেসার তাসকিন আহমেদকে।

ভারতের একাদশে একটি পরিবর্তন হয়েছে। চট্টগ্রামের টেস্টের সেরা খেলোয়াড় স্পিনার কুলদীপ যাদবের পরিবর্তে একাদশে নেয়া হয়েছে পেসার জয়দেব উনাদকতকে।

ব্যাট হাতে সাবধানী শুরু ছিলো বাংলাদেশের দুই ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত ও জাকির হাসানের। চট্টগ্রাম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ১২৪ রানের সূচনা গড়েছিলেন তারা। আরও একবার বড় জুটির লক্ষ্য ছিলো শান্ত ও জাকিরের। সেই লক্ষ্যে ১৪ ওভারও কাটিয়ে দেন তারা। প্রথম ঘন্টায় অবিচ্ছিন্ন ছিলেন শান্ত ও জাকির।

১৫তম ওভারের বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন ১২ বছর ৬ দিন পর টেস্ট খেলতে নামা ভারতীয় পেসার জয়দেব উনাদকত। উনাদকতের বল ঠিকঠাক খেলতে না পারায় জাকিরের গ্লাভসে লেগে ভারতের অধিনায়ক রাহুলের হাতে ক্যাচ যায়। ৩৪ বলে ১৫ রান করেন জাকির। ৩৯ রানে পতন হয় বাংলাদেশের প্রথম উইকেট।
জাকির ফেরার চার বল পরই থামেন শান্তও। ১৬তম ওভারের দ্বিতীয় বলে ব্যক্তিগত ২৪ রানে ভারতের স্পিনার রবীচন্দ্রন অশি^নের বলে লেগ বিফোর আউট হন শান্ত।
৩৯ রানে দুই উইকেট পতনের পর তৃতীয় উইকেটে জুটি বেঁধে অবিচ্ছিন্ন ৪৩ রান তুলে মধ্যাহ্ন-বিরতিতে যান মোমিনুল ও অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।

তবে দ্বিতীয় সেশনের প্রথম বলেই পেসার উমেশ যাদবের ডেলিভারি মিড অফের উপর দিয়ে মারতে গিয়ে চেতেশ^র পূজারাকে ক্যাচ দেন সাকিব। ১টি করে চার-ছক্কায় ৩৯ বলে ১৬ রান করেন সাকিব।

সাকিবের বিদায়ের পর মোমিনুলে সাথে বড় জুটি ইঙ্গিত দিয়েও আউট হন মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাস। চতুর্থ উইকেট মুশফিকের সাথে ৪৮ ও পঞ্চম উইকেটে লিটনের সাথে ৪২ রান তুলেন মোমিনুল।

সাবধানে খেলতে থাকা মুশফিক ৩৮তম ওভারে অশি^নের শেষ তিন বলে তিনটি চার মারেন। ৪১তম ওভারের শেষ বলে উনাদকতের অফ-স্টাম্পের বল খেলতে গিয়ে উইকেটরক্ষককে ক্যাচ দেন মুশফিক। ৫টি চারে ২৬ রান করেন মুশফিক।

মুশফিকের বিদায়ে উইকেটে এসে সেট হয়ে বড় ইনিংস খেলার ইঙ্গিত দিয়ে ফিরেন লিটন। পেসার সিরাজের এক ওভারে ১টি করে চার ও ছয়ও মারেন তিনি। কিন্তু অশি^নের অফ-স্টাম্পের বলে ফ্লিক করে শর্ট মিড উইকেটে রাহুলকে ক্যাচ দিয়ে আউট হন লিটন। ২৬ বলে ২৫ রান করেন লিটন।

লিটনের সাথেই জুটিতে বাউন্ডারি মেরে টেস্ট ১৬তম হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেন মোমিনুল। মোমিনুলের অর্ধশতকে ৫ উইকেটে ১৮৪ রান নিয়ে চা-বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। মোমিনুল ৬৫ ও মিরাজ ৪ রানে অপরাজিত ছিলেন।
দিনের শেষ সেশন শুরু করেই বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। ভারতের দুই বোলার অশি^ন ও উমেশের তোপে ৪৩ রানে শেষ ৫ উইকেট হারিয়ে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ।
মিরাজকে ১৬, উইকেটরক্ষক নুরুল হাসানকে ৬ ও তাসকিনকে ১ রানে শিকার করে বিরতির পর বাংলাদেশকে বড় ধাক্কা দেন উমেশ। এতে ২২৩ রানে অষ্টম উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

তারপরও ভারতের মাথা ব্যাথার কারন ছিলেন মোমিনুল। নবম ব্যাটার হিসেবে মোমিনুলকে থামান অশি^ন। অশি^নের অফ-স্টাম্পের বল ছাড়তে গিয়ে নিজের ভুলেই আউট হন মোমিনুল। অশি^নের ডেলিভারিটি ছাড়া সনা ছাড়ার দ্বিধায় পড়লে বল মোমিনুলের গ্লাভসে লেগে উইকেটরক্ষকের হাতে জমা পড়ে। ১৫৭ বল খেলে ১২টি চার ও ১টি ছক্কা মারেন মোমিনুল।

শেষ ব্যাটার খালেদকে শূন্যতে ফিরিয়ে বাংলাদেশের ইনিংসে ইতি টানেন অশি^ন। ভারতের অশি^ন ৭১ রানে ও উমেশ ২৫ রানে ৪টি করে উইকেট নেন। উনাদকত ৫০ রানে নেন ২ উইকেট।

আলেঅর স্বল্পতার কারণে দিনের শেষ বেলায় ৮ ওভার ব্যাটিং করার সুযোগ পায় ভারত। শেষ বিকেলে বাংলাদেশের দুই বোলার তাসকিন ও সাকিবকে সামলাতে হিমশিম খেয়েছেন রাহুল ও গিল। রাহুল ৩ ও শুভমান গিল ১৪ রানে অপরাজিত আছেন।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *