তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় দুই সহোদর খুনের ঘটনা ঘটেছে। গরুর রশি চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে ধারালো অস্ত্রে খুন করা হয়েছে তাদের। এক ভাইকে খুনের পর উদ্ধার করতে আসা আরেক ভাইকে খুন করা হয়েছে। দুই এজাহার নামীয় খুনিকে রাঙ্গুনিয়া থানায় সোপর্দ করেছে র্যাব সেভেনের একটি টিম। গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ৬৮২ টাকা, মনিব্যাগ, হাজার খানেক টাকা দামের একটি মোবাইল ও দুটি তালার চাবি।
র্যাবের তথ্যে জানা গেছে, ঘটনার ১০/১৫ দিন আগে নিহত ভিকটিমের পরিবারের গৃহ পালিত গরুর খুঁটিসহ রশি ফসলী জমি থেকে চুরি হয়ে যায়। এরপর গত ১৬ ডিসেম্বর নিহত ভিকটিম গরু ক্ষেতে নিয়ে দেখেন শফিকুল ইসলাম চুরি হওয়া রশি দিয়ে তার গরু বেঁধে রেখেছে। তখন জয়নাল এই রশি কোথায় পেয়েছে বলে জিজ্ঞাসা করলে শফিকুল ইসলামের সঙ্গে বাকবিতন্ডা হয়। একপর্যায়ে শফিকুল তখন জয়নালকে মারধর করে। জয়নালের চিৎকার শুনে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসে। তখন শফিকুল সময়মত দেখে নিবে বলে হুমকি দেয়। এরপর বিকাল পৌনে চারটার দিকে শফিকুল তার তিন ছেলেকে নিয়ে ছোরা, কিরিচ, লাঠি, লোহার রড নিয়ে সজ্জিত হয়ে রাঙ্গুনিয়ার মধ্যপাড়া রাস্তায় অপেক্ষা করতে থাকে। কিছুক্ষণ পরে জয়নালকে ওই স্থান অতিক্রম করার সময় অতর্কিতভাবে মারধর করে। সে সময় শফিকুল ইসলামের ছেলে খোরশেদ ধারালো ছুরি দিয়ে জয়নালের বুকের বাম পাশে আঘাত করলে জয়নাল মাটিতে লুটে পড়ে।
জয়নালের চিৎকার শুনে তার অপর ভাই কামাল এগিয়ে এলে শফিকুলের আরেক ছেলে মোর্শেদুল হাতে থাকা ধারালো ছুরি দিয়ে কামালের বুকের বাম পাশে আঘাত করলে কামাল মাটিতে লুটে পড়ে। এসময় আশপাশে থাকা মানুষজন এগিয়ে এলে শফিকুল ও তার ছেলেরা আগতদেরকে গুরুতর জখম করে। বিষয়টি জেনে জয়নাল ও কামালের মা ঘটনাস্থলে পৌঁছালে শফিকুল তার ছেলেদেরকে নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল হতে পালিয়ে যায়।
জয়নাল ও কামালকে রাঙ্গুনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় নিহত ভিকটিমদের মা বাদী হয়ে রাঙ্গুনিয়া থানায় ৪ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামীও রয়েছে। নৃশংস ও লোমহর্ষক এ ঘটনায় জড়িত সকল আসামীকে গ্রেফতারের জন্য র্যাব-৭ তথ্য প্রযুক্তি ও ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারী শুরু করে।
এদিকে গ্রেফতার এড়ানোর জন্য বন্দর থানাধীন পূর্ব নিমতলা ডিয়ারপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৪নং আসামী সাইফুলকে গ্রেফতার করে। র্যাবের কাছে গ্রেফতারকৃত সাইফুল স্বীকার করেছে হত্যা মামলার ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা। বন্দর থানাধীন বেচাশাহ রোডস্থ পশ্চিম গোসাইলডাঙ্গার একটি বাড়ি হতে এজাহার নামীয় ২নং আসামী মোর্শেদুলকে গ্রেফতার করা হয়। নৃশংস হত্যার ঘটনার সাথে তারা দুজনই জড়িত থাকার সত্যতা স্বীকার করে।
২৪ঘণ্টা/জেআর
Leave a Reply