কৌশলে স্বর্ণ চুরি

ক্রেতা সেজে স্বর্ণ চুরির নক্সা করে সুক্ষ চিন্তায়। চোর চক্র পরিবারের কথা বলে দোকানে প্রবেশের জন্য একটি বিশেষ সময় নিধার্রণ করে। এই বিশেষ সময় নিশ্চিত করতে কয়েকদিন সময়ও লাগতে পারে। তারপরও চুরিতে সফল হতে পারলেই চোরের ষোলকলা পূর্ণ হয়। এমন ঘটনায় নগরীর হাজারীলেনের একটি দোকান থেকে প্রায় ১৬ লাখ টাকার স্বণার্লংকার চুরি হয়েছে।

বিভিন্ন এলাকায় ঘোরাফেরা এরা ঘোরাফেরা করে কোথাও কোন জুয়েলারী দোকান, মুদির দোকান খোলা দেখিলে ক্রেতা সেজে দোকানে প্রবেশ করে এবং দোকানদারকে ব্যস্ত রেখে কৌশলে স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা, মোবাইল চুরি করে। পাশাপাশি কোন বাসা বাড়ীর দরজা খোলা দেখিলে সে কৌশলে বাসা বাড়ীতে প্রবেশ করিয়া বাসার ভিতর হইতে নগদ টাকা, মোবাইল, স্বর্ণালংকার চুরি করিয়া নিয়া যায়।

কোতোয়ালী থানা সূত্রে জানা গেছে, গত ২৫ ডিসেম্বর বিকাল ৫টার দিকে শিবপদ ধর স্বর্ণের দোকানে অবস্থানকালীন সময়ে অজ্ঞাতনামা একজন ব্যক্তি আসে। দোকানে ঢুকে স্বর্ণের দাম জিজ্ঞাসা করে। এর আগে শিবপদের ছেলের নিকট হতে স্বর্ণ ক্রয় করেছে। শিবপদ ধরের ছেলে দোকানে আসলে স্বর্ণ ক্রয়ের বিষয়ে বর্ণিত অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির সাথে কথাবার্তা বলে এবং জনৈক অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি দোকানের ভিজিটিং কার্ড নেয়।
পরদিন ২৬ ডিসেম্বর সকাল পৌনে ১১ টার সময় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি শিবপদ ধরের মোবাইলে কল করে বলে গতকাল দোকানে স্বর্ণ ক্রয় করার জন্য গিয়েছিল এবং এখন সে কোতোয়ালী থানাধীন হাজারী গলিস্থ কালী বাড়ির সামনে আছে, তার সাথে একজন গর্ভবতী মহিলা আছে। সে দোকান চিনতে পারছে না, তিনি যেন দোকান থেকে এসে তাকে দোকানে নিয়ে যায়। তখন দোকানে কেউ না থাকায় তিনি দোকান থেকে বের হতে পারছে না বলে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে মোবাইলে জানালেও সে বারংবার ফোন করে তাকে দোকান চিনিয়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করতে থাকে। একপর্যায়ে তার অনুরোধে লকারের চাবি আলমারীর পার্শ্বে রাখা ব্যাগে রেখে দোকান থেকে বের হয়ে হাজারী গলিস্থ শিব মন্দিরের সামনে যান। সেখানে যাওয়ার পর অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে দেখতে না পেয়ে পুনরায় দোকানে ফিরে যান শিবপদ ধর।

শিবপদ ধর দোকানে গিয়ে দেখতে পান তার দোকানের লকারের চাবি লকারের সাথে ঝুলে আছে। তাৎক্ষণিক তিনি লকার খুলে দেখেন যে, লকারে রক্ষিত ৩টি স্বর্ণের নেকলেস, ১টি পাথর সেটিং স্বর্ণের নেকলেস, ২টি স্বর্ণের লেদন, ১০টি স্বর্ণের চেইন, ১টি স্বর্ণের কন্ঠ মালা, ৮টি স্বর্ণের হাত চেইন, ১টি স্বর্ণের ব্রেসলেট, ১ জোড়া স্বর্ণের কানের দুল, ১ জোড়া পাথর সেটিং স্বর্ণের কান পাশা, ১টি স্বর্ণের কানের দুল, ১টি স্বর্ণের কানের দুল, ১টি স্বর্ণের লকেটসহ সর্বমোট ১৯ ভরি ৫ আনা ৪ রত্তি স্বর্ণালংকার খোয়া গেছে। এসব স্বর্ণের মূল্য প্রায় ১৫ লাখ ৪০ হাজার টাকা।

এ ঘটনায় শিবপদ ধর থানায় এজাহার দায়ের করলে কোতোয়ালী থানার মামলা (নং-৩৬, তাং-২৭/১২/২০২২ইং)। কোতয়ালী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলের আশে পাশের সিসিটিভি ক্যামরার ফুটেজ সংগ্রহ ও তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে আসামীকে সনাক্ত করে। মহানগরের চান্দগাঁও থানাধীন ওয়াসা রোড মোহরা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। পুলিশ বাদীর সনাক্তমতে চাঁন্দগাও থানাধীন মধ্যম মোহরাস্থ অছি মিস্ত্রীর বাড়ীর মৃত আব্দুস সালামের ছেলে মো. আমির হোসেন (৩৮) কে গ্রেফতার করে। পরবতীর্তে ধৃত আসামীর দেখানো মতে তার ঘর সংলগ্ন চা পরটার দোকান তথা শাহ আমানত হোটেল এন্ড ঝাল বিতানের ভিতর অভিযান চালিয়ে চোরাই স্বণার্লংকার উদ্ধার করে। এর আগে বিভিন্ন এলাকায় সে ১৫০টি চুরির ঘটনা ঘটিয়েছে।

২৪ঘণ্টা/জেআর

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *