চট্টগ্রামের পাড়া-মহল্লায় সরস্বতী পূজা অনুষ্ঠিত

পঞ্জিকা মতে গত বুধবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুরু হয়ে পঞ্চমী তিথির অবস্থান বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত। মাঘ মাসের শুক্লা পঞ্চমী তিথিতে সরস্বতী পূজা অনুষ্ঠিত হয়। এই তিথি শ্রীপঞ্চমী বা বসন্ত পঞ্চমী নামেও পরিচিত। শাস্ত্রীয় নিয়ম অনুযায়ী গত বুধবার (২৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যার পর দেবীর বোধন, আমন্ত্রণ ও অধিবাস সম্পন্ন হয়। আজ বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) নগরের বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় সর্বজনীন ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিদ্যাদেবী মা সরস্বতী পূজা।

চট্টগ্রাম নগরের জেএমসেন হল মাঠ প্রাঙ্গণে ১১টি মণ্ডপে অনুষ্ঠিত হচ্ছে সরস্বতী পূজা। মণ্ডপগুলো হলো মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদ, মাস্টারদা সূর্যসেন ক্লাব, সর্বজনীন বাণী অর্চনা উদযাপন পরিষদ, জ্ঞানপিপাসু সনাতনী সংঘ, চট্টগ্রাম আইনজীবী বিজয়া সম্মিলন পরিষদ, বাংলাদেশ ছাত্র-যুব ঐক্য পরিষদ, বাণী অর্চনা পরিষদ, সনাতন পরিষদ, ওমরগনি এমইএস কলেজ, সনাতন বিদ্যার্থী সংসদ ও চট্টগ্রাম সনাতনী কর আইনজীবী কল্যাণ পরিষদ।

চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হিল্লোল সেন উজ্জ্বল বলেন, জেএমসেন হল মাঠে মোট ১১টি মণ্ডপে সরস্বতী পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সকালে পূজা শেষে পুষ্পাঞ্জলি দেওয়া হয়। সাড়ে ১০টায় শুরু হয় পিঠা উৎসব। দুপুরে প্রসাদ বিতরণের পর সন্ধ্যায় শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
নগরের ফিরিঙ্গিবাজার সনাতন কেন্দ্রীয় মন্দিরে এবার সরস্বতী পূজা করেছেন নারী পুরোহিত বর্ণালী ভট্টাচার্য্য। সঙ্গে ছিলেন একজন পুরুষ তন্ত্রধারক। আয়োজকরা জানান, দেবী সরস্বতীর পূজা প্রাচীন যুগ থেকেই বাঙালির হৃদয় ও অন্তরে সমাদৃত হয়ে আসছে। তিনি শুক্লবর্ণ, শুভ্র হংসবাহনা, বীণা রঞ্জিত পুস্তক হস্তে অর্থাৎ একহাতে বীণা ও অন্য হাতে পুস্তক।

শুক্লবর্ণ মানে সাদা, যা স্বচ্ছতা ও নির্মলতার প্রতীক। পবিত্রতার মূর্তি আর জ্ঞানদান করেন বলে তিনি জ্ঞানদায়িনী। তাঁর বাহন রাজহংস। কারণ হাঁস অসারকে ফেলে সার গ্রহণ করে। দুধ ও জলের মিশ্রণ থেকে জল ফেলে শুধু দুধটুকু গ্রহণ করে কিংবা কাদায় মিশ্রিত স্থান থেকে তার খাদ্য খুঁজে নিতে পারে। মায়ের সঙ্গে পূজিত হয়ে শিক্ষা দিচ্ছে, সবাই যেন অসার/ভেজাল/ অকল্যাণকরকে পরিহার করে নিত্য পরমাত্মাকে গ্রহণ করে এবং পারমার্থিক জ্ঞান অর্জন করতে পারে।

বীণার জীবন ছন্দময়। বীণার ঝংকারে উঠে আসে ধ্বনি বা নাদ। বিদ্যার দেবী সরস্বতীর ভক্তরা সাধনার দ্বারা সিদ্ধিলাভ করলে বীণার ধ্বনি শুনতে পায়। বীণার সুর অত্যন্ত মধুর। তাই বিদ্যার্থীদেরও মুখ নিঃসৃত বাক্যও যেন মধুর ও সঙ্গীতময় হয়। সেই কারণেই মায়ের হাতে বীণা। তাই দেবী সরস্বতীর আরেক নাম ‘বীণাপাণি’। বিদ্যার্থীদের লক্ষ্য জ্ঞান অন্বেষণ। আর জ্ঞান ও বিদ্যার অন্বেষণের জন্য জ্ঞানের ভাণ্ডার ‘বেদ’ তাঁর হাতে রয়েছে। সেই বেদই বিদ্যা।

২৪ঘণ্টা.জেআর

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *