যাত্রী দুর্ভোগ ও সেবা না বাড়িয়ে ভাড়া বৃদ্ধি গ্রহনযোগ্য নয়-ক্যাব চট্টগ্রাম

বাংলাদেশ রেলওয়ে নিরাপদ ও সহজ গণপরিবহন হলেও বিগত সরকারগুলোর রেলওয়ের উন্নয়নে মনোযোগ না থাকায় রেলপথ যেভাবে উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ হবার দরকার ছিলো তা হয়নি। অন্যদিকে বিপুল পরিমান যাত্রীর চাহিদা থাকা সত্বেও টিকেট না পাওয়া, মন্ত্রনালয়ের লোকজন যাত্রী/ভোক্তাদের ভোগান্তি, হয়রানি ও অনিয়মের কথা শুনার সময় পাচ্ছে না। সেকারণে মান্দাতার আমলের গ্রাহক অভিযোগ পদ্ধতি, গ্রাহক সেবা কেন্দ্রগুলির দুরাবস্থা, অকার্যকর, টিকেট কালোবাজারীদের সাথে রেল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আতাঁতের কারনে যাত্রী হয়রানি বন্ধ হচ্ছে না। অন্যদিকে সাধারন জনগন যখন নিত্যপণ্য ও সেবার মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে চরমভাবে জর্জরিত সেখানে রেলওয়ের সেবা না বাড়িয়ে ও ভোগান্তি নিরসন না করে ২৫ জানুয়ারি থেকে শোভন চেয়ার শ্রেণির ৩৮০ টাকার ভাড়া নতুন করে নির্ধারণ করা হয়েছে ৪০৫ টাকা, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) কোচে আসনপ্রতি ভাড়া ৭০ টাকা বাড়িয়ে ৬৩০ টাকার ভাড়া হয়েছে ৭০০ টাকা করার সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানিয়েছেন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম নেতৃবৃন্দ। সম্প্রতি বাংলাদেশ রেলওয়ে সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনের ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে এক বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ উপরোক্ত দাবি জানান।

শনিবার (২৮ জানুয়ারি) গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারন সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, সহ-সভাপতি সাংবাদিক এম নাসিরুল হক, ক্যাব মহানগরের সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি আলহাজ্ব আবদুল মান্নান, প্রমুখ।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, রেলপথ যোগাযোগের একটি গুরুত্বপুর্ন মাধ্যম হলেও রেল কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা, যাত্রীর স্বার্থ রক্ষায় চরম উদাসীনতা, অনীহা, রেল বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সীমাহীন অনিয়ম-দুনীর্তিকে অব্যাহত রাখার জন্য রেল বিভাগ যাত্রী সেবার মান উন্নয়নে আন্তরিক নয়। যার কারনে রেলের ভাড়া দ্বিগুন করা হলেও সেবার মান বাড়েনি। আর রেল ব্যবস্থাপনায় ভোক্তাদের কোন অংশগ্রহন গুরুত্বই পায়নি। অভিযোগ প্রতিকারে ঢাবি’র শিক্ষার্থীদের লাগাতর ধর্মঘট ডাকলেও পরিস্থিতির কোন উন্নয়ন হয়নি। এমনকি মান্দাতার আমলের সেই কোটা পদ্ধতি, টিকেট বিক্রয়ে সিন্ডিকেট প্রথা অব্যাহত আছে। যার কারনে রেলের টিকেট যাত্রীদের জন্য সোনার হরিন হলেও কালোবাজারীদের কাছে অতিসহজলভ্য হয়ে আছে। অনলাইনে টিকেট ছাড়ার পর সবগুলো বিক্রি দেখালেও ট্রেন ছাড়ার পর অনেক সীট খালি থাকে এবং লোকসানের সব দায়ভার রেলওয়ের ঘাঁড়ে যায়।

নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করে বলেন, সরকারের সদিচ্ছার কারনে রেলপথ মন্ত্রনালয় পৃথক মন্ত্রী পেলেও কাংখিত সেবা নিশ্চিত হয় নি। তাই অবিলম্বে রেলপথে যাত্রী হয়রানি, ভোগান্তি ও অনিয়ম রোধে তাক্ষনিক প্রতিকারের ডিজিটেল গ্রাহক সেবা কেন্দ্র (প্রয়োজনে প্রতিকার না পেলে ডিজি, মন্ত্রী, সচিবকে অবহিত করা যায় এমন ব্যবস্থা), বর্তমান টিকেট বিক্রয় ব্যবস্থাকে আরও আধুনিকায়ন ও ঢেলে সাজানো, কোটাপদ্ধতি বাতিল, যাত্রীদের জন্য টিকেট প্রাপ্তি সহজলভ্য করা, যাত্রী সেবার অনিয়ম রোধে রেলে তাৎক্ষনিক গ্রাহক সেবা কেন্দ্র/হেলপ লাইন চালু, সিদ্ধান্ত প্রদানে সক্ষম ও যোগ্য প্রতিনিধিকে রেলস্টেশনে অবস্থান নিশ্চিত করে সপ্তাহে অন্তত ১দিন গণশুনানীর আয়োজন করে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা গ্রহন এবং রেলপথের সেবা ও ব্যবস্থাপনায় নীতি নির্ধারনী পর্যায়ে ভোক্তা প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার দাবি জানান।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *