চট্টগ্রামের পটিয়ায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে কিশোর গ্যাং। কিশোর গ্যাংয়ের কবলে জিম্মি রয়েছে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা। ক্লাসে আসার পথে রাস্তায় ইভটিজিংয়ের শিকার মাদ্রাসা শিক্ষার্তীরা। কিশোর গ্যাংয়ের ভয়ে মাদ্রাসা ছাত্রীরা ক্লাসে আসতে পারছে না। ক্লাস চলাকালীন সময়ে হৈচৈ শুরু করে। অনেক সময় মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের উপর ইট পাথর নিক্ষেপ করে কিশোর গ্যাংসদস্যরা। কিশোর গ্যাংয়ের এমন ভয়াবহ চিত্র প্রতিদিন দেখা যাচ্ছে পটিয়া উপজেলার শাহচান্দ আউলিয়া কামিল মাদ্রাসার মূল ফটকে ও এতিমখানার দক্ষিণ পাশের কবর স্থান সংলগ্ন জায়গায়।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আশে পাশে প্রায় অর্ধ-শতাধিক কিশোর গ্যাংয়ের কয়েকশ সদস্য দাবড়িয়ে বেড়াচ্ছে। খুন, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, অপহরণসহ এমন কোনো অপকর্মই নেই যা তারা করেনা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নানামুখী তৎপরতার পরও কিশোর অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। কিশোর গ্যাংয়ের আতঙ্কে দিন পার করতে হচ্ছে ঐ মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের। অনেক সময় মাদ্রাসা ছাত্ররা ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করলে তাদের উপর হামলা করে তারা।
সরেজমিনে দেখা যায়, দিনের বেলায় যেভাবে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে কিশোর গ্যাং, তেমনি ভাবে সন্ধার পরে আরো ভয়াবহ রূপধারণ করে কিশোর গ্যাংয়ের দল। এই কিশোর গ্যাংয়ের মূলহোতা কে? বের করতে পারেনি এখনো কেউ। তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আশপাশে বেপরোয়াভাবে চলাচল করতে দেখা যাচ্ছে তাদের। প্রায় ৪/৫ মাস ধরে কিশোর সন্ত্রাসীদের প্রভাব দিন দিন ঝুঁকিপূর্ণ ভাবে রূপধারণ করছে। দিনের বেলায় মাদ্রাসার ছাত্রছাত্রীরা আসা যাওয়ার পথে অট্ট হাসি দিয়ে যৌন নিপিড়ন আচারণ শুরু করে।
শাহচান্দ আউলিয়া নুরীয়া এতিমখানার প্রধান শিক্ষক মওলানা কুতুবউদ্দিন শাহনুরী বলেন, শাহচান্দ আউলিয়া নুরীয়া এতিমখানার পুকুর পাড়ের দক্ষিণ দিকে একটু নির্জন জায়গা। সন্ধ্যার পর হলে সেদিক দিয়ে কেউ গেলে ধারালো চাকু দেখিয়ে কৌশলে হাতিয়ে নিচ্ছে মোবাইল, টাকা পয়সা সহ সঙ্গে থাকা প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। তবে তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন ছাড়া বাকি সদস্যরা এখানকার স্থানীয় বাসিন্দা নন। স্থানীয় কিশোর গ্যাংয়ের সাথে দল বেঁধে এসব অনৈতিক কর্মকান্ডে লিপ্ত রয়েছে তারা।
কয়েকজন মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা জানান, গত দুয়েকদিন আগে আমাদের ছাত্রাবাস থেক চুরি হয়েছে মোবাইল, সাইকেল, কাপড়, গ্যাস সিলিন্ডার, জুতাসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। বাহিরে স্যান্ডেল বা কোনো কিছু রাখা হলে। সে জিনিস আর পাওয়া যায় না। এতিম খানার আশে পাশে বহিরাগত কিশোর গ্যাংয়ের আড্ডা। বিভিন্ন জিনিসপত্র চুরিসহ নানান অপকর্মে জড়িত তারা। মাদরাসায় ক্লাসে আসা ছাত্রীদের ইভটিজিং। বিভিন্ন অজুহাতে ছাত্রদের মারধরসহ নানান সমস্যার মাঝে দিনগুনতে হচ্ছে মাদ্রাসা ছাত্রদের।
এ সময় তারা আরো বলেন, বেপরোয়া কিশোর গ্যাংয়ের কারণে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা এখন আতঙ্কের মুখে। এসব কিশোর গ্যাং প্রকাশ্য ধুমপানসহ বিভিন্ন নেশা জাতীয় দ্রব্য ব্যবহার করে। কেউ বাঁধা সৃষ্টি করলে তার সাথে ঝগড়াঝাটি শুরু করে। বার বার তাদের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলেও মানছে না কোনো বাঁধা। অনেক সময় মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের আবাসিক হোস্টেলে টুকে ছাত্রদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র চুরি করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে শাহচান্দ আউলিয়া কামিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ফরিদ উদ্দীন আহমেদ দৈনিক সময়ের কাগজকে বলেন, এ ব্যাপারে অচিরেই পটিয়ার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে লিখিতভাবে অভিযোগ জানাবো।
২৪ঘণ্টা.জেআর
Leave a Reply