সৈয়দপুরে ৫ মাসেও উচ্ছেদ হয়নি রেল লাইনের পাড়ের অবৈধ স্থাপনা

শাহজাহান আলী মনন, নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি ॥ নীলফামারীর সৈয়দপুরে রেললাইনের দুই পাশ হতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে আবেদন করার প্রায় পাঁচ মাস অতিবাহিত হয়েছে। কিন্তু এখনো এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। উপরন্তু রেললাইনের দুই পাশে গড়ে উঠেছে শীতবস্ত্রের দোকান। ফলে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে ট্রেন। এতে বেড়েছে দুর্ঘটনার আশঙ্কা।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ রেলওয়ের সৈয়দপুরের ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী (পথ) মোঃ সুলতার মৃধা জানান, সুষ্ঠুভাবে ট্রেন চলাচলের লক্ষ্যে সৈয়দপুর কিলোমিটার ৩৯৩/০ হতে ৩৯৫/৬ পর্যন্ত রেললাইনের দুই পাশে অবৈধ দোকানপাট ও বসতবাড়ি উচ্ছেদ করতে গত ৩০ জুন ডিইএন/২/পাকশী বরাবরে আবেদন করা হয়। কিন্তু অদ্যাবধি এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এদিকে এসব দোকানপাট ও বসতবাড়ির মালিকরা রেললাইনের ওপর ময়লা আবর্জনা ফেলার কারণে রেললাইন রক্ষণাবেক্ষণ কাজে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। সঠিকভাবে রেললাইন রক্ষণাবেক্ষণ ও সুষ্ঠুভাবে ট্রেন চলাচলে এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ জরুরি হয়ে পড়েছে।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সৈয়দপুর উপজেলা সভাপতি রুহুল আলম মাস্টার বলেন, সৈয়দপুরে রেললাইনের পাশে দোকান বসিয়ে ব্যবসা করার প্রচলন দীর্ঘদিনের। কারণ বাইরে একটি দোকান ভাড়া নিতে গেলে ১০ থেকে ২৫ লাখ অগ্রিম দেওয়াসহ প্রতি মাসে ভাড়া বাবদ ২০-৩০ হাজার টাকা ব্যায়। আর রেললাইনের পাশে দোকান করলে অগ্রিম দিতে হচ্ছে না। শুধু প্রতিদিন বখরার টাকা দিলেই নিশ্চিন্তে ব্যবসা করা যাচ্ছে। তবে শীত মৌসুম এলেই দোকানির সংখ্যা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। কারণ সৈয়দপুরই হচ্ছে বৃহত্তর রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের একমাত্র শীতবস্ত্রের মোকাম। এখান থেকেই শীতবস্ত্র যায় এ অঞ্চলের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায়। ফলে বখরা দিয়ে দোকান বসাতে ব্যস্ত থাকেন ব্যবসায়ীরা। আর এদের সহায়তা করেন রেলওয়ে কর্মকর্তা, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ ব্যবসায়ী নেতারা। সে সাথে কিছু সংগঠন এদেরকে অবৈধভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছেন বিপুল পরিমান টাকা।

রেললাইনের দুই পাশে দোকান বসানো খুবই ঝুঁকিপুর্ণ বলে মন্তব্য করে সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশনমাস্টার মোঃ শওকত আলী বলেন, রেলওয়ের আইন অনুযায়ী রেলপথের দুই পাশে ২০ ফুট করে এলাকা সংরক্ষিত। এ ছাড়া রেলপথে সব সময় ১৪৪ ধারা জারি থাকে। দোকান বসানো তো দূরের কথা, রেলপথে মানুষসহ সকল প্রকার জীবজন্তু চলাচল করাও একেবারেই নিষিদ্ধ। এদিকে রেললাইনের পাশে দোকান বসায় প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়ে ট্রেন চলাচল করছে।

একমাস পূর্বে রেললাইনের পাশের অবৈধ দোকান উচ্ছেদের নামে সৈয়দপুর রেলওয়ে থানা পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে। কিন্তু সকালে অভিযান শেষে বিকালে আবার সেসব দোকান নতুন করে বসেছে। এছাড়া রেল লাইনের পাশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে নিয়মিত একটি বাঁশের হাট বসলেও তা এ অভিযানের সময় বহাল তবিয়তেই রয়ে যায়।

অভিযোগ রয়েছে যে, রেলওয়ে পুলিশ, ষ্টেশন মাস্টার ও রেলওয়ের বিভিন্ন কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করেই এসব অবৈধ দোকান দেদারছে চলছে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *