চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর ওপর ১৯৩১ সালে নির্মিত কালুরঘাট সেতুতে অনেকটা ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছে যানবাহন। নতুন সেতুর কার্যক্রম কিছুটা এগোলেও নকশা জটিলতায় থমকে আছে। দোহাজারী-কক্সবাজার রেল প্রকল্পের কাজ ইতিমধ্যে ৮০ শতাংশেরও বেশি শেষ হয়েছে। প্রায় ৭০ কিলোমিটারেরও বেশি রেললাইন এখন দৃশ্যমান। চলতি বছরের শেষের দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে রেল চালু করার কথা রয়েছে। ফলে জীর্ণ সেতুটিই এখন ভরসা।
ইতিমধ্যে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার পর্যন্ত ট্রেন চলাচলের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটি কীভাবে সংস্কার ও ব্যবহার উপযোগী করা যায়, সে জন্য বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) কাছে পরামর্শ চেয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। বুয়েট সেতুর ওপর রেল চলাচলের জন্য সার্ভেও করছে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, `পরামর্শক দলের স্টাডি প্রায় শেষ পর্যায়ে। তারা প্রতিবেদন দিলেই সেই অনুসারে আগামী মার্চে দরপত্র আহ্বান করা হবে। কক্সবাজার রুটে ট্রেন চলাচলের জন্য এটি মেরামত করা জরুরি।’
এর আগে গত বছরের ২২ এপ্রিল রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি কালুরঘাট সেতু পরির্দশনে পর সাংবাদিকদের বলেছিলেন, বিদ্যমান সেতুটি বুয়েটের পরামর্শে মেরামতের পর আরও শক্তিশালী হবে এবং মেরামতের পর কালুরঘাট সেতু দিয়ে কক্সবাজার রুটে ট্রেন চলাচল করতে পারবে। তবে সেতু পার হওয়ার সময় ট্রেনের গতি কম থাকবে।
গত ১৮ জানুয়ারি রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন জানান, চলতি বছরের জুন-জুলাইয়ের মধ্যে চট্টগ্রাম-দোহাজারী-কক্সবাজার রেল যোগাযোগ প্রকল্পের কাজ শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে।
রেলওয়ের প্রকৌশল বিভাগের তথ্যমতে, কালুরঘাট সেতুতে ১০ টনের বেশি লোড নেওয়া সম্ভব নয়। কক্সবাজার রুটে ট্রেন চলাচল শুরু হলে সেতুতে সর্বোচ্চ লোড ১২ থেকে ১৫ টন পর্যন্ত হতে পারে। যেখানে মিটারগেজ ট্রেন ধীরগতিতে চালানো হলেও, ব্রডগেজ ট্রেন চালানো সম্ভব নয়।
২০২১ সালের অক্টোবরে রেলওয়ের প্রকৌশল বিভাগের আমন্ত্রণে বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ও পর্যবেক্ষক দলের প্রধান ড. এ এফ এম সাইফুল আমিন, অধ্যাপক ড. খান মাহমুদ আমানত ও ড. আব্দুল জব্বার খান কালুরঘাট সেতু পরিদর্শন করেন। পরে একই বছরের ডিসেম্বরে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (সেতু) আহসান জাবিরের কাছে পরিদর্শনের প্রাথমিক প্রতিবেদন জমা দেন তারা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী ৭ বছরের মধ্যে যেহেতু নতুন সেতু নির্মাণ সম্ভব নয়, তাই পুরনো এই সেতু দিয়ে কক্সবাজারের ট্রেন নিতে হলে সেতুটিকে সেই উপযোগী করে গড়ে তুলতে হবে। পরিদর্শনের সময় জানালিহাট অংশে অ্যাপ্রোচ রোডের সুরক্ষা দেয়ালে ফাটলসহ বড় ধরনের ৬টি ত্রুটি পেয়েছে দলটি।
২৪ঘণ্টা/জেআর
Leave a Reply