মিরসরাইয়ে দুলাভাইয়ের শ্লীলতাহানির চেষ্টা, অপমানে নারীর আত্মহত্যা

মিরসরাই প্রতিনিধি:::::মিরসরাইয়ের জোরারগঞ্জ থানায় দেড় বছরের শিশুকে নিয়ে ট্রেনের নিচে ঝাঁপিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেছেন এক নারী। ভাগ্যের জোরে শিশুটি বেঁচে গেলেও ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় নারীর দেহ। নিহতের নাম নাজমা বেগম (৩৫)। সে হিংগুলি ইউনিয়নের দক্ষিণ আজমনগর এলাকার মো: নুরুল হকের মেয়ে।

বুধবার ( ৮ মার্চ) দুপুর দেড়টায় বারৈয়ারহাট কমফোট হাসপাতালের পেছনে রেললাইনের উপর আত্মহত্যার ঘটনাটি ঘটে ।

ঘটনার বিবরণে নিহতের মা মনোয়ারা বেগম জানান, তার ৫ মেয়ে, বাড়িতে অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে মেয়েরা বাপের বাড়ি এসেছে । সোমবার অনুষ্ঠান শেষে সবাই শুয়ে পড়ে। রাত ৩টার দিকে নিহত ৪র্থ মেয়ে নাজমা বেগমের কক্ষে প্রবেশ করে বড় বোন রুজিনার স্বামী অটোচালক মানিক। বিষয়টি নাজমা বেগম তার স্বামী কাঠ মিস্ত্রি অপু মিয়াকে জানায়। মানিক প্রথম দিন গা ঢাকা দেয়। পরের দিন বিষয়টি নিয়ে দুই ভায়রার মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে । ভায়েরা মানিকের মারধরে ক্ষিপ্ত হয়ে অপু মিয়া স্ত্রীকে তালাক দেয়ার হুমকি দেয়। বিষয়টি নিয়ে দুই বোনের মধ্যেও ঝগড়া হয়। আজ মেয়েটা আত্মহত্যা করে চলে গেল । দেড় বছরের নাতিটা নিয়ে আমি এখন কোথায় যাবো!!

নিহত নাজমা বেগমের স্বামী অপু মিয়া জানান, অনুষ্ঠান শেষে স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি চলে যেতে চাই। স্ত্রী আরও দুই দিন বাপের বাড়ি থাকতে চাইলে তাকে রেখে নিজ বাড়িতে চলে যায়। পরদিন স্ত্রী ফোন করে বলে রাতে বড় দুলাভাই তার রুমে ঢুকে ঘুমের মধ্যে জড়িয়ে ধরে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে। তার চিৎকারে পরিবারের অন্য সদস্যরা এগিয়ে আসলে সে পালিয়ে যায়। ঘটনা শুনে স্ত্রীকে নিতে গেলে পরের দিন দুলাভাই ফেরত আসে। এ সময় নিজের স্ত্রী থাকতে অন্যের স্ত্রীর সাথে খারাপ কাজ করতে চাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তার সাথে মারামারির ঘটনা ঘটে। তখন রাগ করে শশুর বাড়ি থেকে কাজে চলে যাই। দুপুরে শুনতে পাই আমার স্ত্রী আত্মহত্যা করেছে। আমি থানায় মামলা করবো, আমি এটার উচিত বিচার চাই। আমার দেড় বছরের শিশু কে এখন কে লালনপালন করবে। কাকে মা বলে ডাকবে !!

অভিযুক্ত দুলাভাই মানিক শ্লীলতাহানির ঘটনা অস্বীকার করে বলেন, নিহত নাজমা বেগম অসুস্থ ও মানসিক ভারসাম্যহীন ছিল। এতটুকু বলেই ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন।

রেলওয়ে পুলিশের সীতাকুণ্ড ও মিরসরাই অংশের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসআই খোরশেদ আলম জানান, আহত শিশু কে স্থানীয় আশরাফুল আলম নামে এক ব্যক্তি উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে নিজের তত্ত্বাবধানে নিয়ে ছিলেন । পরবর্তীতে তার সহায়তায় শিশুটিকে তার নানার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে । নিহতের মরদেহ রেলওয়ে পুলিশের হেফাজতে ময়নাতদন্তের কাজ চলছে। স্থানীয়দের কথায় আত্মহত্যার বিষয়ে জানতে পেরেছি । মহিলার স্বামী যদি মামলা দায়ের করেন তাহলে উপযুক্ত বিচার পেতে তাকে সহযোগিতা করা হবে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *