জামায়াত- বিএনপি ও হেফাজতের দুর্গে ঐক্যবদ্ধ আওয়ামীলীগের বিজয়

ফটিকছড়ির নাজিরহাট পৌরসভা নির্বাচনে জামায়াত- বিএনপি ও হেফাজতের দুর্গে বিজয় হয়েছে ঐক্যবদ্ধ আওয়ামীলীগের। নির্বাচনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী (নৌকা) প্রতীকের এ কে জাহেদ চৌধুরী বেসরকারীভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর প্রাপ্ত ভোট ১০ হাজার ১ শত ৮০। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোবাইল প্রতীকে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আনোয়ার পাশা পেয়েছেন ৭ হাজার ১ শত ৭৪ ভোট।

বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) রাত সাড়ে আট টায় ফটিকছড়ি উপজেলার বীরমুক্তিযোদ্ধা জহুরুল হক হলে নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসার মো. তারিফুজ্জামান নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করেন।

নাজিরহাট পৌরসভা গঠনের পর প্রথম নির্বাচনে উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি মুজিবুল হককে হারিয়ে মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন বিএনপি প্রার্থী সিরাজ উদ দৌলা। পরে তিনি আওয়ামীলীগে যোগদান করেন।

প্রথমবার হারলেও দ্বিতীয়বারের নির্বাচনে এ পৌরসভায় নিজেদের বিজয়ী ছিনিয়ে এনেছে আওয়ামী লীগ। চট্টগ্রাম উত্তরজেলা ও ফটিকছড়ি উপজেলা আওয়ামীলীগের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় এ বিজয় সম্ভব হয়েছে বলে জানান আওয়ামী লীগ নেতারা। ফটিকছড়ি উপজেলা আওয়ামীলীগের দীর্ঘদিনের বিভাজন ভুলে নির্বাচনের মাঠে সরব ছিলেন জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। ফলে জামায়াত বিএনপি ও হেফাজতের দুর্গখ্যাত এ পৌরসভায় নিজেদের বিজয় নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়েছেন আওয়ামী লীগ। এদিকে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দিপনার মধ্যদিয়ে সম্পন্ন হয়েছে নাজিরহাট পৌরসভা নির্বাচন।

বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোটাররা ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) তাদের পছন্দের প্রার্থীকে সুষ্টু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট প্রদান করেন। সারাদিন শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট গ্রহণ করা হয়। সকালে ভোটকেন্দ্রগুলোতে উপস্থিতি কম থাকলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে ভোটার উপস্থিতি বাড়তে থাকে। তবে সকালের দিকে নারী ও বৃদ্ধ ভোটারদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। তবে ইভিএমের মেশিনের ধীরগতি ও আঙ্গুলের চাপ না মেলায় ভোটারদের কিছুটা বেগ পেতে হয়। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া না গেলেও দুপুরের দিকে পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ড বাবুনগর মাদ্রাসা ভোট কেন্দ্রে সাংবাদিকদের প্রবেশে বাধাঁ প্রদানের অভিযোগ কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হাসান মুরাদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে। যার তাৎক্ষনিক তীব্র প্রতিবাদ জানান স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা।

নাজিরহাট পৌরসভার ভোটাররা এই প্রথমবারের মতো ইভিএমে ভোট দেন। তাই ভোট নিয়ে ভোটারদের মধ্যে বেশ কৌতূহল ছিল। তবে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রশাসনের কমতি ছিল না। পৌরসভার ২২ টি ভোট কেন্দ্রে ৪৪ হাজার ৭শ’ ৮৬ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ২৩ হাজার ৯শ’ ৩০ জন ও নারী ভোটার ২০ হাজার ৮ শত ৫৬ জন ভোটার তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট প্রদান করেন।

নির্বাচনে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১নং ওয়ার্ডে মাওলানা জয়নাল আবেদীন, ২ নং ওয়ার্ডে আমান উল্লাহ, ৩ নং ওয়ার্ডে ওসমান গণি, ৪ নং ওয়ার্ডে মোহাম্মদ শাহজাহান, ৫ নং ওয়ার্ডে মোস্তফা কামাল, ৬ নং ওয়ার্ডে মাওলানা ইয়াকুব, ৭ নং ওয়ার্ডে মাওলানা মঞ্জুর মিয়া, ৮ নং ওয়ার্ডে মোহাম্মদ আলী, ৯ নং ওয়ার্ডে মো. সোলায়মান নির্বাচিত হয়েছেন।
এছাড়াও, সংরক্ষিত ১, ২, ৩ নং ওয়ার্ডে ছলিমা আক্তার শিউলী; ৪, ৫, ৬ নং ওয়ার্ডে রহিমা বেগম এবং ৭, ৮, ৯ নং ওয়ার্ডে হাসিনা মমতাজ নির্বাচিত হয়েছেন।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *