‘অন্যায়ের বিরুদ্ধে মাথা উচু করে দাড়ানোর শিক্ষাই দিয়েছেন মহিউদ্দিন চৌধুরী’

অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে মাথা উচু করে দাড়ানোর শিক্ষাই দিয়েছেন এ.বি.এম মহিউদ্দিন চৌধুরী।

আজ ২৭ ডিসেম্বর শুক্রবার বিকেলে নগরীর ৩৮নং দক্ষিণ মধ্য হালিশহর ওয়ার্ডস্থ এ.বি.এম মহিউদ্দিন চৌধুরী স্মরণ সভা পরিষদের উদ্যোগে স্থানীয় বেগমজান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মিলনায়তনে আয়োজিত স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে উপরোক্ত মন্তব্য করেছেন মহিউদ্দিন চৌধুরীর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের সহযোদ্ধা এবং চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন।

স্মরণ সভা পরিষদের আহবায়ক অধ্যক্ষ কামরুল হোসেন এর সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব সালাউদ্দিন মামুনের সঞ্চালনায় স্মরণ সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ও বন্দর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি নূরুল আলম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংরক্ষিত আসনের মহিলা কাউন্সিলর ও চট্টগ্রাম ওয়াসার বোর্ড সদস্য আফরোজা কালাম, বন্দর থানা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হাজী মোঃ ইলিয়াছ, ৩৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী মোঃ হাসান। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বেসরকারী কারা পরিদর্শক আজিজুর রহমান আজিজ।

এ সময় সুজন আরো বলেন, মহিউদ্দিন চৌধুরী ছিলেন রাজনৈতিক মহীরুহ। যে কোন দূর্যোগে তিনি দল এবং চট্টগ্রাম বাসীর উপর ছায়ার মতো থাকতেন। ছোটবেলা থেকেই অসীম সাহসের অধিকারী মহিউদ্দিন চৌধুরী ছাত্র অবস্থা থেকেই রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৭১ সালে সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের নেতৃত্বে লালদীঘির মাঠে জনসভার ডাক দেন মহিউদ্দিন চৌধুরী। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে মার্চেই পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হন মহিউদ্দিন চৌধুরী। ধারাবাহিক নির্যাতনের এক পর্যায়ে পাগলের অভিনয় করে কারাগার থেকে ছাড়া পেয়ে পালিয়ে যান ভারতে। ভারতের উত্তর প্রদেশে প্রশিক্ষণ শেষে ‘মাউন্ট ব্যাটালিয়ন’র প্লাটুন কমান্ডার নিযুক্ত হন তিনি। পাহাড়ি এলাকায় তিনশ মুক্তিযোদ্ধার দলের নেতা হিসেবে সম্মুখ সমরে নেতৃত্ব দেন মহিউদ্দিন চৌধুরী। ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ের পর মুসলিম হলে ক্যাম্প স্থাপন করে অসুস্থদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন মহিউদ্দিন চৌধুরী। নিজ হাতে দাফন করেন ঘূর্ণিঝড়ে নিহতদের যা হতবাক করেছে সারা দেশবাসীকে। এরপর ১৯৯৪ সালে চট্টগ্রামের সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে প্রার্থী হয়েই বিপুল ভোটে জয়ী হন তিনি।

১৯৯৬ সালে অসহযোগ আন্দোলনের মাধ্যমে বিএনপি সরকারের পতন ঘটিয়ে দীর্ঘ ২১ বছর পর আওয়ামী লীগকে সরকার গঠনের সুযোগ সৃষ্টি করে দেন মহিউদ্দিন চৌধুরী। মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর নগরীর পরিচ্ছন্নতা, স্বাস্থ্য ও শিক্ষাখাতে মনোনিবেশ করেন সফল হন মহিউদ্দিন চৌধরী। সে সময় মহিউদ্দিন চৌধুরীর কর্মকান্ড দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়। এভাবে সমাজের প্রতিটি স্তরে কাজ করে তিনি নন্দিত জননেতা হিসেবে সাধারণ মানুষের হৃদয়ের মনিকোঠায় স্থান লাভ করেন। তাই তার মৃত্যু সমাজের নিপীড়িত নিস্পেষিত মানুষের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। সুজন নতুন প্রজন্মকে মহিউদ্দিন চৌধুরীর আদর্শ অনুসরণ করার আহবান জানান।

এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বন্দর থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইউনুছ, মোঃ এজাহার মিয়া, আব্দুল হাকিম মেম্বার, এস.এম আবু তাহের, হাজী মোঃ হোসেন, শের আলী সওদাগর, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ সদস্য নুরুল কবির, মোরশেদ আলম, হাফেজ মোঃ ওকার উদ্দিন, সরওয়ার জাহান চৌধুরী, হাজী নুরুল হুদা, নজরুল ইসলাম টিটু, ছালেহ আহমদ জঙ্গী, এজাহারুল হক, সৈয়দ মুনির, মহানগর যুবলীগ নেতা সমীর মহাজন লিটন, হাসান মোঃ মুরাদ, সাইফুল ইসলাম, মোঃ জাবেদ, মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, মোঃ ওয়াসিম, নাজমুল হাসান, সাদ্দাম হোসেন চৌধুরী, মোঃ কাইয়ুম, সাদ্দাম হোসেন, জিসান জাফর, ইফতেখার ইসলাম প্রমূখ।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *