দোহাজারীতে সাংবাদিক আয়ুব মিয়াজীর উপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও সমাবেশ

চন্দনাইশে কর্মরত সাংবাদিক আয়ুব মিয়াজী (৩২) কে সন্ত্রাসীরা তার নিজস্ব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মিয়াজী কম্পিউটার সেন্টারে হামলা চালিয়ে মারধর করে গুরুত্ব আহত করে।

হামলার প্রতিবাদে ৫ এপ্রিল বিকালে দোহাজারী সদরে মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

চন্দনাইশ প্রেস ক্লাবের সভাপতি মো. দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন পটিয়া প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও বিএমএসএফ দক্ষিণ জেলার সভাপতি আবদুল হাকিম রানা, প্রথম আলো প্রতিনিধি আবদুর রাজ্জাক, চন্দনাইশ প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ এরশাদ, বিজয় টিভি প্রতিনিধি ও টিভি জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন, সাতকানিয়া সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি সৈয়দ আক্কাস উদ্দিন, সাংবাদিক যথাক্রমে মাও. মোজাহেরুল কাদের, চট্ট টিভির সাইফুল ইসলাম, চাটগাঁ সংবাদের শহীদুল ইসলাম, মিনহাজ বাঙ্গালী, সৈকত দাশ ইমন, এম.এ হামিদ, হাজী শহীদুল ইসলাম, মাঈন উদ্দিন, আরফাত হোসেন, ভোক্তাধিকার বাংলাদেশ চন্দনাইশ উপজেলা আহ্বায়ক মো. জাবের বিন রহমান, ব্যবসায়ী মোহাম্মদ মাহাদু, চন্দনাইশ হকার সমিতির সভাপতি নুরুল আমিন প্রমুখ।

সভায় বক্তাগণ বলেন, দিন দুপুরে একজন গণমাধ্যম কর্মীকে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে মারধর করে ২য় তলা থেকে নিচে ফেলে দেয়া হয়। সে বর্তমানে মুমুর্ষ অবস্থায় চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। পুলিশের নিকট তথ্য প্রমাণ ও ভিডিও ফুটেজ থাকা সর্তেও আসামীদের গ্রেপ্তার না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সে সাথে ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের মাধ্যমে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান। অন্যথায় দক্ষিণ চট্টগ্রামে সাংবাদিক সমাজ আরো বৃহত্তর কর্মসূচী ঘোষনা করবেন বলে জানান।

উল্লেখ্য যে, গত ৪ এপ্রিল সাংবাদিক মিয়াজী তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দোহাজারী রেলষ্টেশন সংলগ্ন মিয়াজী কম্পিউটার সেন্টারে কাজ করার সময় ৭/৮ জন সন্ত্রাসী হকস্টিক, ছুরি, লাঠি নিয়ে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে। এক পর্যায়ে মারধর করতে করতে তার প্রতিষ্ঠান ২য় তলা থেকে নিচে ফেলে দিলে তার পা এবং কোমরে গুরুত্বর হাড়ভাঙ্গা যখম হয়। সন্ত্রাসীরা আয়ুব মিয়াজী কম্পিউটার সেন্টারে ল্যাপট্যাপ ভাংচুর করে কয়েকটি ল্যাপট্যাপ নিয়ে যায় এবং ক্যাশে থাকা নগদ ৫০ হাজার টাকা, ব্যবহারের ২টি মোবাইল ফোন, মূল্যবান কাগজপত্র নিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। মিয়াজী ইতিপূর্বে পূর্ব দোহাজারী এলাকায় রাতের আঁধারে পাহাড় কাটার সংবাদ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি)কে অবহিত করেন এবং অনলাইন পোর্টালে নিউজ প্রচার করায় সন্ত্রাসীরা ক্ষিপ্ত হয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে তিনি জানান।

এ ব্যাপরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদা বলেছেন, মিয়াজীর সংবাদ পেয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ঘটনাস্থলে গেলে মাটি দুস্যরা পালিয়ে যায়। তবে মাটি কাটার বিষয়টি দৃশ্যমান ছিল। এ ব্যাপারে তিনি মাটি কাটার বিষয়ে সমন্বয় সভায় উপস্থাপন করবেন এবং মামলা করার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরে লিখিতভাবে জানাবেন বলে জানিয়েছেন।

পরিবেশ রক্ষার্থে পাহাড়ের মাটি কাটা বিষয়ে তাদেরকে সংবাদ দেয়া এবং সংবাদ প্রচার করায় তার উপর হামলা হয়েছে কিনা তা তদন্তের পর পরিস্কার হবে। তবে একজন সাংবাদিকের উপর হামলা অত্যন্ত নিন্দনীয়।

এ ব্যাপারে তার পিতা আবদুর শুক্কুর বাদী হয়ে চন্দনাইশ থানায় ১টি মামলা দায়ের করেন। থানা অফিসার ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন মামলা হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছেন, মামলার সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তবে বিষয়টি মেয়ে ঘটিত বলে মনে হচ্ছে এবং একজন মহিলা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। তবে তার এন.আইডি কার্ড দিতে না পারায় অভিযোগটি গ্রহণ করা হয়নি। থানায় দেয়া অভিযোগে এন.আইডি কার্ডে উল্লেখিত নম্বরটি দোহাজারী সদর এলাকার আলী মিয়ার মেয়ে রৌশন আরা বেগমের। অথচ অভিযোগ করেছেন কক্সবাজার এলাকার মৃত নুর মোহাম্মদ এর মেয়ে রোজিনা আক্তার।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *