দেশের মানুষের মাঝেই খুঁজে পাই আমার হারানো মা-বাবার স্নেহ : প্রধানমন্ত্রী

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের মানুষের মাঝেই আমি খুঁজে পাই আমার হারানো মা-বাবার স্নেহ, ভাইয়ের ভালোবাসা।

শনিবার (২২ এপ্রিল) সকালে সরকারি বাসভবন গণভবনে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করার সময় এ কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমি আমার বাবার কাছ থেকে শিখেছি দুঃখি মানুষের মুখে হাসি ফুটানো। এ দেশের মানুষের কল্যাণ করা। দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা। আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি সে কাজই।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, চলতি মাসে ঢাকায় বেশ কয়েকটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। তার মধ্যে বঙ্গবাজার ও নিউ সুপার মার্কেটে সবচেয়ে বড় দুটি অগ্নিকাণ্ড হয়। একের পর এক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন অনেকে। এছাড়া অনেক মন্ত্রী-এমপিও ধারাবাহিক অগ্নিকাণ্ড নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, নিউমার্কেট-বঙ্গবারজারসহ অন্যান্য এলাকায় কয়েকটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অগ্নিসন্ত্রাসীদের কোনো চক্রান্ত আছে কিনা দেখতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, এসব আগুনে যেসব ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি। আমার পক্ষ থেকে তাদের ঈদ উপহার দিয়েছি।

দেশের মানুষের জন্য কষ্ট করতে সবসময় আছি

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের মানুষের জন্য সবসময় কষ্ট স্বীকার করেন বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমিও দেশের মানুষের জন্য সবসময় কষ্ট করতে প্রস্তুত ছিলাম এবং এখনো প্রস্তুত আছি।’

বিশ্বের অনেক উন্নত দেশ হিমশিম খেলেও সে তুলনায় বাংলাদেশের মানুষ অনেক ভালো আছে বলে মন্তব্য করেন সরকারপ্রধান। বলেন, ‘রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য বিশ্বব্যাপী মুদ্রাস্ফীতি থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশে আমরা দারিদ্র্যের হার কমাতে সক্ষম হয়েছি।’

‘যে দারিদ্র ৪১ ভাগ ছিল, আমরা কিন্তু এই দুর্যোগের সময়ও প্রতিবছর এক শতাংশ করে দারিদ্র্যের হার কমিয়ে এখন আমাদের অতি দরিদ্রের হার মাত্র ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। আল্লাহর রহমতে এটুকুও থাকবে না। বাংলাদেশ সম্পূর্ণ দারিদ্র্যমুক্ত হবে। যেটা জাতির পিতার স্বপ্ন আমরা সেটা পূরণ করে যাব। আমাদের দরিদ্রের হার ১৮ দশমিক ৭ ভাগ। সেটাও আমরা আরো কমিয়ে আনবো। যাতে বাংলাদেশ দারিদ্র্যমুক্ত ঘোষণা করা যায়।’

মানুষের জীবন যাতে স্থির ভাবে চলে সেই ব্যবস্থা করেছি

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা মানুষের জন্য বিনামূল্যে ঘর তৈরি করে দিয়ে তাদের জীবন জীবিকার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। যাতে কোনো মানুষ ভূমিহীন না থাকে। আমরা সরকারের পক্ষ থেকে যেমন করেছি, সেই সঙ্গে সঙ্গে আমাদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, চাকরিজীবী বা আমাদের সরকারি অফিসার থেকে শুরু করে প্রত্যেকটা বাহিনীর থেকে শুরু করে এবং সাধারণ মানুষ প্রত্যেকেই কিন্তু নিজে নিজে কিছু সহযোগিতা মানুষকে করেছেন বা ত্রান তহবিলে দিয়েছেন।’

‘যেখানে জমি পাওয়া যায়নি সেখানে জমি কিনেও আমরা ঘর করে দিয়েছি। সামান্য কিছু বাকি আছে তাদেরও ঘর নির্মাণ হচ্ছে। এটা শুধু ঘর না, বাড়ি না তাদের জমি, খাবার, পানি ও তাদের জীবন জীবিকার জন্য নগদ অর্থসহ সাহায্য করে এক একটা মানুষের জীবন যাতে স্থির ভাবে চলতে পারে সেই ব্যবস্থা আমরা করে দিয়েছি।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘দেশের সামর্থবান-বিত্তবানরা অভাবী মানুষের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়ালে দেশের মানুষের কিন্তু কোনো কষ্ট থাকবে না। বাংলাদেশ একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বিশ্বব্যাপী।’

‘আজকে আমরা বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। এই মর্যাদা ঝুলিয়ে রেখে আমাদের এগোতে হবে। এখান থেকে কেউ যেন বাংলাদেশকে আর সরিয়ে নিতে না পারে। তার জন্য দেশবাসীকে সতর্ক থাকতে হবে।’

এর আগে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম গণমাধ্যমকে জানান, প্রধানমন্ত্রী শনিবার সকাল ১০টা থেকে গণভবনে সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। তিন বছর বিরতির পর প্রধানমন্ত্রী দলের নেতাকর্মী এবং কবি, সাহিত্যিক, লেখক, সাংবাদিক, শিক্ষক ও বুদ্ধিজীবীসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।

পরে তিনি বেলা ১১টা থেকে বিচারপতিগণ, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, তিন বাহিনীর প্রধান, বিদেশি কূটনীতিক, সিনিয়র সচিব, সচিব এবং বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *