সচল হলো চট্টগ্রাম বন্দর, গভীর সমুদ্রে থাকা ৮০ জাহাজ অক্ষত

অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করেছে। নানা আশঙ্কা থাকলেও ঝড়ের তেমন প্রভাব পড়েনি চট্টগ্রামে। দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের নিয়ন্ত্রক চট্টগ্রাম বন্দরে কোনো ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। বন্দরের বহির্নোঙরে ভেসেছিল ৮০ জাহাজ। এর মধ্যে ২০টি জেটি থেকে বের করে সেখানে পাঠানো হয়েছিল এবং ৬০টি আগে থেকে সেখানে ছিল। এগুলোর কোনো ধরনের সমস্যা হয়নি।

এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তরের সবশেষ বিজ্ঞপ্তিতে চট্টগ্রাম বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলেছে। এতে করে বন্দর কর্তৃপক্ষের নিজস্ব অ্যালার্ট-১ জারি থাকবে। তবে এটিও শিগগিরই নামিয়ে ফেলা হবে। রোববার (১৪ মে) রাতেই অপারেশনাল কার্যক্রম এবং ডেলিভারি কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে। সোমবার (১৫ মে) সকাল থেকে জেটিতে জাহাজ ভেড়ানো হবে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ৮টার দিকে চট্টগ্রাম বন্দর সচিব ওমর ফারুক বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে বন্দরের কোথাও কোনো সমস্যা হয়নি। আমরা আগে থেকে প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। আবহাওয়া অধিদপ্তরের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ ছিল। বন্দরের স্ট্যান্ডিং কমিটির মিটিং হয়েছে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এখন সংকেত নেমে যাওয়ায় বন্দরের কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হয়ে গেছে। সকালে জেটিতে জাহাজ ভিড়বে।

তিনি আরও বলেন, আবহাওয়া অধিদপ্তরের সংকেত বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বন্দরে অ্যালার্ট-৪ জারি করা হয় এবং সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হয়। লাইটার জাহাজ সদরঘাট এলাকা থেকে কর্ণফুলী ব্রিজের আশেপাশের এলাকায় নিরাপদে আশ্রয় নিতে বলা হয়। বন্দরের সুরক্ষা নিশ্চিতে জেটিতে থাকা ২০টি বড় জাহাজ বহির্নোঙরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে আগে থেকে থাকা ৬০টিসহ মোট ৮০টি জাহাজ ছিল। এগুলোর কোনো সমস্যা হয়নি।

এদিকে, আবহাওয়া অধিদপ্তরের সবশেষ ২২ নম্বর বুলেটিনে বলা হয়েছে, অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে আজ (১৪ মে) সন্ধ্যা ৬টায় বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করেছে এবং দুর্বল হয়ে মিয়ানমারের সিটুয়েতে স্থল গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি স্থলভাগের অভ্যন্তরে আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও বৃষ্টি ঝরিয়ে ক্রমান্বয়ে দুর্বল হতে পারে।

কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। চট্টগ্রাম ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার সব নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *