অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সঠিক আচরণকে উৎসাহ দিতেই ভিসা নীতি : হাস

ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস আজ বলেছেন, নতুন মার্কিন ভিসা নীতি ‘সকলের’ জন্য প্রযোজ্য এবং এটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশের সকলকে সঠিক ‘আচরণ’ করতে উৎসাহিত করবে। তিনি বলেন, ‘(নতুন ভিসা) নীতির পিছনের ধারণাটি হল- এটি প্রত্যেকের জন্য প্রযোজ্য। এটি’র উদ্দেশ্য হচ্ছে- সঠিক আচরণ এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনকে উৎসাহিত করা। তাই যারা অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনকে সমর্থন করেন, তাদের ভয় পাওয়ার কিছু নেই।’ রাজধানীতে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মোঃ শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে এক বিশেষ আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

গত সপ্তাহে, ওয়াশিংটন বাংলাদেশীদের জন্য নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে। সেখানে বলা হয়েছে যে- এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ‘বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুন্ন করার জন্য দায়ী বা জড়িত বলে মনে করা যে কোন বাংলাদেশী ব্যক্তির ভিসা প্রদান বন্ধ করতে সক্ষম করবে।’

সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে হাস বলেন, বাংলাদেশ সরকার অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, আর যুক্তরাষ্ট্রও তাই চায়।

তিনি বলেন, ‘(বাংলাদেশের) প্রধানমন্ত্রী (শেখ হাসিনা) তাঁর প্রতিশ্রুতি (অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান) স্পষ্ট করেছেন এবং (বাংলাদেশের) পররাষ্ট্রমন্ত্রীও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের নির্বাচন দেখার জন্য স্বাগত জানিয়েছেন। সুতরাং, আমি কোন মতবিরোধ দেখছি না।’ মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমরা, যুক্তরাষ্ট্র তাই চাই, যা প্রতিটি বাংলাদেশী চায়- অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন।’

রাষ্ট্রদূত হাস বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের আহ্বানের প্রেক্ষিতে এবং বাংলাদেশী জনগণের সমর্থনে যুক্তরাষ্ট্র নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে। এটি আমাদের নীতি ব্যবহার করে সমর্থন করার আমাদের একটি উপায়।’

বর্তমানে বাংলাদেশ-মার্কিন সম্পর্কের ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জগুলো কী জানতে চাওয়া হলে হাস বলেন, তিনি ‘চ্যালেঞ্জের পরিবর্তে ইতিবাচক দিকে মনোনিবেশ করেছেন।’ তিনি বলেন, ‘(আজকের) ফটো প্রদর্শনীটি ঐতিহাসিকভাবে আমাদের অংশীদারিত্বের একটি মহান দৃষ্টান্ত। অতীতই নয়, এমন কি বর্তমানেও আমাদের বাণিজ্য, নিরাপত্তা সম্পর্ক, দুই দেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক, স্বাস্থ্যসেবা ক্ষেত্রের অংশীদারত্ব রয়েছে। এছাড়াও অবশ্যই আমরা কাজ করে যাচ্ছি, আসন্ন নির্বাচন নিয়ে আমাদের ভালো আলোচনা হচ্ছে।’

প্রদর্শনীতে ৫০টি ঐতিহাসিক আলোকচিত্র প্রদর্শন করা হয়েছে। এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকীর একটি বর্ধিত উদযাপন। ছয়টি সুনির্দিষ্ট ক্যাটাগরিতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের প্রতিফলন দেখানো হয়েছে।
এগুলো হচ্ছে-

‘আর্লি কন্টাক্ট’ ক্যাটাগরিতে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার আগেকার সময়ে যে অভিবাসী, শিল্পী, প-িত, স্থপতি, ডাক্তার ও উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে বাংলাদেশি এবং আমেরিকানদের মধ্যে বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার প্রাথমিক বীজ বরণ হয়েছিল- তা প্রদর্শিত হয়েছে।

‘অফিসিয়াল ভিজিট’ ক্যাটাগরিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের সফর এবং সাক্ষাত প্রদর্শিত হয়।

‘সহায়তা ও অবকাঠামো’ ক্যাটাগরিতে কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনকে কভার করা হয়েছে।

‘বাণিজ্য ও ব্যবসা’ ক্যাটাগরিতে প্রাণবন্ত দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্পর্ক প্রদর্শিত হয়েছে।

‘শিক্ষা ও বিজ্ঞান’ ক্যাটাগরিতে কিভাবে বাংলাদেশী এবং আমেরিকান বিজ্ঞানী এবং প-িতরা বিভিন্ন গবেষণা প্রকল্পে কয়েক দশক ধরে সহযোগিতা করেছেন- তা প্রদর্শন করা হয়েছে।

এবং ‘সংস্কৃতি ও প্রবাসী’ ক্যাটাগরিতে চিত্রিত হয়েছে যে, অর্ধ শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে কিভাবে উভয় দেশ সাংস্কৃতিক অভিব্যক্তির মাধ্যমে সংযুক্ত হয়েছে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *