জেএসসিতে চট্টগ্রাম বোর্ডে বেড়েছে পাসের হার ও জিপিএ-৫, এগিয়ে মেয়েরা

জেএসসিতে

২৪ ঘন্টা ডট নিউজ।রাজীব : জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। এবারের পরীক্ষায় চট্টগ্রাম বোর্ডে বেড়েছে পাসের হার ও জিপিএ-৫ প্রাপ্তির সংখ্যা।

চট্টগ্রাম বোর্ডে পাসের হার ৮২ দশমিক ৯৩ শতাংশ। যা গত বছরের তুলনায় ১ দশমিক ৪১ শতাংশ বেশি। গতবছর এ বোর্ডে পাসের হার ছিলো ৮১ দশমিক ৫২ শতাংশ।

গতবারের তুলনায় এ বছর জিপিএ ৫ প্রাপ্তির ক্ষেত্রেও ৮শ ১০ জন বেশি। এবছর জিপিএ-৫ পেয়েছে ৬ হাজার ৪১ জন শিক্ষার্থী। গত বছর জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিলো ৫ হাজার ২৩১ জন।

মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নারায়ন চন্দ্র নাথ।

চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা যায়, এ বছর পরীক্ষায় অংশগ্রহণ থেকে শুরু করে পাসের হার এবং জিপিএ-৫সহ সকল সূচকেই ছেলেদের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে মেয়েরা। এবারের জেএসসি পরীক্ষায় শতভাগ ইংরেজি ও গণিত বিষয়ে পাস করা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যাও বেড়েছে। বেড়েছে শতভাগ পাসের বিদ্যালয়ের সংখ্যা। গত বার শূণ্য পাসের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকলেও এবার একটিও নেই।

জেএসসিতে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে এগিয়ে মেয়েরা : এ বছর চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ১ হাজার ২৭৪টি বিদ্যালয়ের ২ লাখ ৮ হাজার ৯৬২ জন শিক্ষার্থী জেএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়ার কথা থাকলেও পরীক্ষা দিয়েছে ২ লাখ ৫ হাজার ৮৭১ জন শিক্ষার্থী। পাস করেছে ১ লাখ ৭০ হাজার ৭৩৪ জন।

এরমধ্যে এক লাখ ১৪ হাজার ৭৯২ জন ছাত্রী জেএসসিতে অংশগ্রহণ করে পাস করেছে ৯৫ হাজার ৩৩২ জন। পাসের হার ছিলো ৮৩ দশমিক ০৫ শতাংশ। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ৮০ দশমিক ৯২। অন্যদিকে ৯১ হাজার ৭৯ জন ছাত্র শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে পাস করেছে ৭৫ হাজার ৪০২ জন শিক্ষার্থী। যার পাসের হার ৮২ দশমিক ৭৯ শতাংশ। গত বছর ছিল ৮২ দশমিক ২৭।

জিপিএ ৫ প্রাপ্তিতেও এগিয়ে মেয়েরা। এবছর জিপিএ-৫ প্রাপ্তি ৬ হাজার ৪১ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্রীর সংখ্যা রয়েছে ৩ হাজার ৬২২ জন এবং ছাত্র রয়েছে ২ হাজার ৪১৯ জন।

চট্টগ্রাম বোর্ডে বেড়েছে শতভাগ পাসের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান : এ বোর্ডে গতবারে তুলনায় শতভাগ পাস শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেড়েছে ১৩টি। এবার ১০২টি বিদ্যালয়ে শতভাগ পরীক্ষার্থী পাস করেছে। গতবার ছিল ৮৯টি। তাছাড়া গতবার জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষায় ১টি শূন্য পাস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থাকলেও এবার তা ছিলনা।

এদিকে শতভাগ ইংরেজি ও গণিত বিষয়ে পাস করা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যাও বেড়েছে এবার। বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নারায়ণ চন্দ্র নাথ বলেন, গণিত বিষয়ে শতভাগ পাস প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২ শত ৭৫টি, যা গত বছর ছিলো ২ শত ৯টি। এছাড়া ইংরেজি বিষয়ে শতভাগ পাস প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২ শত ২২ টি, যা গত বছর ছিলো ১ শত ৯৩ টি।

চলতি বছর জিপিএ ভিত্তিতে শিক্ষা বোর্ড সেরা তিনটি স্কুল নির্ধারণ করা হয়েছে। এরমধ্যে চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল, ডা. খাস্তগীর উচ্চ বিদ্যালয় ও বাংলাদেশ মহিলা সমিতি উচ্চ বিদ্যালয় সেরা তিনে জায়গা করে নিয়েছে। চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল রয়েছে প্রথম স্থানে। এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে এবার ৩৪৩ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে সবাই পাস করেছে। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৯৩ জন।

দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ডা. খাস্তগীর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকেও শতভাগ পরীক্ষার্থী পাস করেছে। ৩২৫ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ২৭৮ জন পেয়েছে জিপিএ-৫। তাছাড়া বাংলাদেশ মহিলা সমিতি উচ্চ বিদ্যালয় (বাওয়া) রয়েছে তিন নম্বর স্থানে।এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ৫০২ জনের সবাই পাস করেছে। জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৪১ জন।

সেরা তিনে স্থান করে নেওয়ায় এ তিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বাঁধভাঙা উল্লাসে মেতেছেন। শিক্ষার্থীরা জানায়, জেএসসির ফলাফলে সাফল্যতার ধারাবাহিকতা বজায় রেখে এসএসসি ও এইচএসসিতে ভালো রেজাল্ট করে কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছতে তারা চেষ্টা করবে।

চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নারায়ন চন্দ্র নাথ জানিয়েছেন, অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ, খাতা মূল্যায়নে আন্তরিক হওয়ার নির্দেশনা এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকদের সংখ্যা বাড়ার কারণে জেএসসির ফলাফলে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *