স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রত্যেক কাজে নারীদের অংশগ্রহণ জরুরী: ডিসি

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেছেন, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক নারী। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকারী-বেসরকারী চাকুরিতে পুরুষের পাশাপাশি নারীদের অংশগ্রহণের হার অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। মাথাপিছু আয় ১২ হাজার ৫’শ ডলারে উন্নীত হয়েছে, মাতৃ ও শিশু মৃত্যুর হার হ্রাস পেয়েছে। এখন থেকে কেউ আর ঘরে বসে থাকবে না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে জাতির পিতার স্বপ্ন উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রত্যেক কাজে নারীদের অংশগ্রহণ অত্যন্ত জরুরী।

আজ ১১ জুলাই মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস উপলক্ষে নগরীর আগ্রাবাদস্থ চট্টগ্রাম জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয় আয়োজিত আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল-‘জেন্ডার সমতাই শক্তি : নারী ও কন্যাশিশুর মুক্ত উচ্চারণে হোক পৃথিবীর অবারিত সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন’।

আলোচনা সভার পূর্বে জেলা পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের সামনে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক। এর পর বেলুন উড়িয়ে ও র‌্যালির মাধ্যমে বিশ্ব জনসংখ্যা দিবসের শুভ উদ্বোধন করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে পরিবার পরিকল্পনা সেবা, প্রাতিষ্ঠানিক ডেলিভারী ও অন্যান্য সেবার বিশেষ অবদানের জন্য ১০ ক্যাটাগরিতে ১০ জনকে পুরস্কৃত করার পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক ডেলিভারীকৃত ৩ কন্যা শিশুর হাতে উপহার সামগ্রী ও নগদ অর্থ তুলে দেন জেলা প্রশাসক।

জেলা প্রশাসক বলেন, নারীদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমাদের সকলকে আন্তরিক হতে হবে। সাফ ফুটবলে নারীরা চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ছেলেরা যা-ই কিছু করতে পারবে মেয়েরাও তা-ই করতে পারবে। খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে আরও আগ্রহী করে তুলতে চট্টগ্রাম জিমনেসিয়ামের পাশে মেয়েদের জন্য এই প্রথম একটি খেলার মাঠ করতে যাচ্ছি, বাকলিয়ায়ও মেয়েদের জন্য একটি খেলার মাঠ হবে।

তিনি বলেন, নারীরা বাচ্চা নিয়ে যখন কর্মক্ষেত্রে যায় সেখানে ব্রেস্টফিডিং কর্ণার ও ডে কেয়ার সেন্টার থাকেনা। জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে শীঘ্রই একটি ব্রেস্টফিডিং কর্ণার করতে যাচ্ছি। প্রত্যেক দপ্তওে ব্রেস্টফিডিং কর্ণার করা জরুরী। আমরা জেলার ১৫ উপজেলা সদরে এবং পরবর্তীতে ইউনিয়ন পর্যায়ে ব্রেস্টফিডিং ও ডে-কেয়ার সেন্টার করতে চাই। তাহলে নারীরা তাদের বাচ্চা রেখে কর্মস্থলে যেতে পারবে। এজন্য সংশ্লিষ্ট সকলের আন্তরিক সহযোগিতা প্রয়োজন।

পরিবার পরিকল্পনা সেবা আরও বেগবান করতে অবকাঠামো উন্নয়ন ও আধুনিকায়নসহ লজিস্টিক সাপোর্ট বৃদ্ধির বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে অবহিত করার আশ্বাস দেন জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান।

পরিবার পরিকল্পনা চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আবুল কালামের সভাপতিত্বে ও রাউজান উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নিক্সন চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত বিশ্ব জনসংখ্যা দিবসের আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী ও রাউজান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম এহেছানুল হায়দার চৌধুরী বাবুল। স্বাগত বক্তব্য রাখেন পরিবার পরিকল্পনা চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ডা. ছেহেলী নার্গিস। মাল্টি মিডিয়ার মাধ্যমে চট্টগ্রাম জেলায় পরিবার পরিকল্পনার সার্বিক কার্যক্রমের চিত্র তুলে ধরেন পরিবার পরিকল্পনা চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক নাজমুল হাসান। বক্তব্য রাখেন বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা মমতা’র উপ-পরিচালক স্বপ্না তালুকদার ও রাউজানের গুজরা ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ সাহাবুদ্দিন আরিফ।

আলোচনা সভায় অন্যান্য বক্তারা বলেন, দেশে এখন একটি আধুনিক ও স্মার্ট জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। সকলের পারফরমেন্স বাড়াতে হবে। নিরাপদ প্রসবসেবা, প্রসব পরবর্তী সেবা সমূহ আরও গতিশীল করতে হবে। পরিবার পরিকল্পনা বিভাগে জনবল ও যন্ত্রপাতি সংকট সত্তে¡ও সেবার মান বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখে সাধারণ সেবা গ্রহীতাদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতসহ প্রাতিষ্ঠানিক ডেলিভারীর হার বৃদ্ধি করতে হবে। মাঠ পর্যায়ে নিরাপদ সেবা দেয়ার জন্য কিভাবে পরিকল্পনা গ্রহণ করতে পারি সে ব্যাপারে পলিসি নিতে হবে। মানসম্মত পরিবার পরিকল্পনা সেবা নিশ্চিত করা গেলে সফলতা অবশ্যই আসবে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *