ইরানের সবচেয়ে প্রভাবশালী সামরিক কমান্ডার এবং ইসলামি বিপ্লবী গার্ডের প্রধান জেনারেল কাসেম সোলাইমানিকে হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইরানের মধ্যে নতুন করে তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে।
দেশ দু’টির মধ্যকার উত্তেজনার মধ্যেই নিজেদের যুদ্ধবিমানের মহড়া শুরু করে দিয়েছে ইরান। দেশটির পশ্চিম আকাশে যুদ্ধবিমান উড়তে দেখা গেছে। ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে যুদ্ধবিমান উড়ানোর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। যুদ্ধবিমান সতর্ক অবস্থানে থেকে পাহারা দিচ্ছে।
ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী বা আইআরজিসর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রামাজান শরিফ বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের ক্ষণিকের এই আনন্দ-উল্লাস শোকে পরিণত হবে। শুক্রবার ইরাকের একটি বিমানবন্দরে মার্কিন হামলায় অভিজাত এই বাহিনীর কুদস ফোর্সের প্রধান জেনারেল সোলাইমানি নিহত হন।
এদিকে, ইরান যেভাবে যুদ্ধবিমান উড়াতে শুরু করেছে তাতে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে ইরাকের রাজধানী বাগদাদে শুক্রবার ড্রোন হামলা চালিয়ে সোলাইমানিকে হত্যা করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে পেন্টাগন।
পেন্টাগন জানিয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশেই ওই হামলা চালানো হয়েছে। ইরানের ভবিষ্যত হামলা প্রতিহত করতেই এই অভিযান চালানো হয়েছে। পেন্টাগন বলছে, জেনারেল সোলেইমানি ইরাকে মার্কিন কূটনীতিক এবং কর্মকর্তাদের ওপর হামলার পরিকল্পনা করছিলেন। জেনারেল সোলেইমানি এবং তার কুর্দস বাহিনী শত শত মার্কিনি এবং জোটের সদস্যের হতাহতের পেছনে দায়ী বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ জারিফ এক টুইট বার্তায় বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের হঠকারিতার পরিণতি ভোগ করতে হবে।
ওয়াশিংটন এক বিবৃতিতে জেনারেল সোলাইমানির মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, চলতি সপ্তাহে বাগদাদে মার্কিন দূতাবাসে হামলার অনুমোদন দিয়েছিলেন জেনারেল সোলাইমানি।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির পর দেশটির সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তি হিসেবে আলোচিত নাম মেজর জেনারেল কাসেম সোলাইমানি।
তিনি ছিলেন বিপ্লবী গার্ডস বাহিনীর এলিট ইউনিট কুদস ফোর্সের প্রধান। বলা হচ্ছে, দেশের বাইরে ইরানের সামরিক ও রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের চেষ্টায় সোলাইমানি ছিলেন মূল ব্যক্তি। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইরানের পররাষ্ট্র নীতি নির্ধারণেও তার ভূমিকা ছিল।
বিবিসি লিখেছে, গত দুই দশক ধরে ইরাক, ইয়েমেন, সিরিয়া ও লেবাননের মতো দেশে শিয়া মিলিশিয়া গোষ্ঠীগুলোর শক্তিশালী হয়ে ওঠার পেছনে তিনিই ছিলেন প্রধান রূপকার। এর মোকাবিলায় তেহরানের আঞ্চলিক শত্রু সৌদি আরব, ইসরায়েল এবং যুক্তরাষ্ট্রকে বেগ পেতে হয়েছে। ফলে বহুদিন ধরেই তিনি ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের ‘টার্গেট’।
Leave a Reply