স্মাট বাংলাদেশ বিনির্মাণে স্মার্ট পরিবার পরিকল্পনা সেবা নিশ্চিত করতে হবে : বিভাগীয় কমিশনার

চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মোঃ তোফায়েল ইসলাম বলেছেন, বর্তমান সরকারের নিরলস প্রচেষ্টায় পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ বাংলাদেশের উন্নয়নের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলছে। বিনামূল্যের পরিবার পরিকল্পনা সেবায় চট্টগ্রাম জেলার স্মার্ট মনিটরিং কার্যক্রম দেশের সর্বত্র প্রশংসিত হয়েছে। আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে স্মাট বাংলাদেশ বিনির্মাণে চট্টগ্রামসহ সর্বত্র স্মার্ট পরিবার পরিকল্পনা সেবা নিশ্চিত করতে হবে। মাতৃ মৃত্যু ও শিশু মৃত্যুর হার শূণ্যের কোঠায় নামিতে আনতে শতভাগ প্রাতিষ্ঠানিক ডেলিভারী সেবা নিশ্চিত করতে হবে। পরিবার পরিকল্পনা সেবাকেন্দ্র গুলোকে জনগণের আস্থার স্থল হিসেবে পরিচিত করতে হবে।

আজ ৭ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় নগরীর কর্ণেলহাট ১০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে পরিবার পরিকল্পনা চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয় আয়োজিত পরিবার কল্যাণ সেবা ও প্রচার সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

পরিবার কল্যাণ সেবা ও প্রচার সপ্তাহের (৯-১৪ ডিসেম্বর) এবারের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে-“নিরাপদ মাতৃত্ব পরিকল্পিত পরিবার, স্মার্ট বাংলাদেশ হোক আমাদের অঙ্গীকার”। অনুষ্ঠানের শুরুতে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে কর্মসূচীর উদ্বোধন করেন বিভাগীয় কমিশনার। সভা শেষে ফিতা কেটে কর্ণেলহাট ১০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র পরিদর্শন করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে বিভাগীয় কমিশনার বলেন, বাল্যবিবাহ ফৌজদারী অপরাধ ও এটি রোধে জরিমানার বিধান রয়েছে। উন্নত জাতি গঠনে বাল্যবিবাহ রোধ করে প্রত্যেক মা, সন্তান ও পরিবারকে সুস্থ রাখতে সরকার বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন। জাতিসংঘ ও এনজিও সংস্থাগুলো সরকারকে এ বিষয়ে সহযোগিতা করছে। রুগ্ন মা ও সন্তানেরা উন্নত দেশ গঠনে নেতৃত্ব দিতে পারবেনা, আমরা বাল্যবিবাহমুক্ত স্মাট বাংলাদেশ গড়তে চাই। এ লক্ষ্যে ১৮ বছরের আগে বিয়ে ও ২০ বছরের আগে সন্তান নয়। গত নভেম্বর মাসে নগরীর কর্ণেলহাট ১০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে ৫১টি প্রাতিষ্ঠানিক নরমাল ডেলিভারীর প্রশংসাসহ প্রাতিষ্ঠানিক নরমাল ডেলিভারীর সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন বিভাগীয় কমিশনার।

তিনি আরও বলেন, অনাকাঙ্খিত গর্ভধারণে মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্যের ঝুঁকি বাড়ে। সরকার এ বিষয় যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে পরিবার পরিকল্পনা সেবাকে মানুষের দৌরগোড়ায় পৌঁছে দিচ্ছে। দেশের সকল হাসপাতাল, মা-শিশু কল্যাণ কেন্দ্র ও কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো প্রাতিষ্ঠানিক ডেলিভারীর বিষয়ে অগ্রাধিকার দেয়ার কারণে মাতৃ ও শিশু মৃত্যুর হার কমেছে। মানুষের গড় আয়ু ৪৬/৪৭ বছর থেকে ৭২ বছরে উন্নীত হয়েছে। এর ধারাবাহিকতা ধরে রেখে পরিবার পরিকল্পনা, মা ও শিশু স্বাস্থ্য এবং কৈশোরকালীন স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে সংশ্লিষ্ট সকলকে আরও আন্তরিক হতে হবে।

পরিবার পরিকল্পনা চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক গোলাম মোঃ আজমের সভাপতিত্বে ও পরিবার পরিকল্পনা চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক নাজমুল হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত পরিবার কল্যাণ সেবা ও প্রচার সপ্তাহের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিবার পরিকল্পনা চট্টগ্রাম জেলার উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আবুল কালাম ও সহকারী পরিচালক (সিসি) ডা. ছেহেলী নারগিস। স্বাগত বক্তব্য রাখেন কর্ণেলহাট ১০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার ডা. শিরীণ আকতার রুহিনা। পরিবার পরিকল্পনা চট্টগ্রাম বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়ের বিভিন্ন স্তরে কর্মরত চিকিৎসক ও কর্মচারীরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

পরিবার পরিকল্পনা চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক গোলাম মোঃ আজম জানান, স্মার্ট বাংলাদেশ বির্নিমাণে এ অধিদপ্তর তথা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রনালয় বদ্ধপরিকর। এরই আলোকে ২৪/৭ ঘন্টা সেবা প্রদানে সুখী পরিবার ১৬৭৬৭ কল সেন্টারসহ প্রত্যেকটি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের জন্য চালু রয়েছে জরুরী হটলাইন সার্ভিস সেবা। বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে বা যে কোন শিশু নির্যাতন প্রতরোধে প্রয়োজনীয় তথ্য ও সহায়তার জন্য ১০৯ ডায়েল করলেই মিলবে প্রয়োজনীয় তথ্যসেবা।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *