ক্ষোভে ফুঁসছে ঢাবি ক্যাম্পাস

রাজধানীর কুর্মিটোলা এলাকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হওয়ার জেরে ক্ষোভে ফুঁসছে গোটা ক্যাম্পাস। রোববার দিবাগত রাতেই দোষীদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। সোমবারও বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে নানা ধরনের প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।

ধর্ষকদের বিচারের দাবিতে সোমবার সকালে একাই অনশনে বসে যান বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের এক ছাত্র। অনশনে বসা ওই ছাত্রের নাম সিফাতুল ইসলাম। দর্শন বিভাগের ২০১৩/১৪ সেশনের ছাত্র তিনি। পরে তার সঙ্গে যোগ দেন আর কয়েকজন শিক্ষার্থী। সেখানে ব্যানারে লেখা রয়েছে, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে ধর্ষণের প্রতিবাদে অনশন।’

সিফাতুল ইসলাম বলেন, আমাদের বোন ধর্ষণের শিকার হয়েছে তার প্রতিবাদে আমরা অনশন পালন করছি। আমরা দ্রুত ধর্ষকদের গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ধর্ষণের প্রতিবাদে ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। বেলা ১১ টায় সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বিশাল মানববন্ধন করে তারা। এসময় ধর্ষণের প্রতিবাদ ও বিচার চেয়ে নানা ধরনের প্ল্যাকার্ড-ব্যানার ছিল তাদের হাতে।

অন্যদিকে, ছাত্রী নির্যাতন ও ধর্ষণে জড়িতদের শাস্তির দাবিকে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।

ছাত্রী নির্যাতনের প্রতিবাদে ঢাবি শামসুন নাহার হলের ভিপি তাসনীম আফরোজ ইমির আহ্বানে বিক্ষোভ ও মানববন্ধনের ডাক দিয়েছে শিক্ষার্থীদের অপর একটি অংশ।

ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রী ঢাকা মেডিকেল কলেজের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী তার সাথে দেখা করতে যাওয়া সহপাঠী, শিক্ষক ও চিকিৎসকদের জানিয়েছেন, রবিবার রাতে রাজধানীর কুর্মিটোলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস থেকে নামার পর অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজন তার মুখ চেপে ধরে। এ সময় তাকে মারধরও করা হয়। এক পর্যায়ে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। অচেতন অবস্থায়ই তাকে ধর্ষণ করা হয়।

রাত ১০টার দিকে জ্ঞান ফেরার পর তিনি সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ে এক বান্ধবীর বাসায় যান। এরপর সহপাঠীরা তাকে ক্যাম্পাসে নিয়ে আসেন। সেখান থেকে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মানসিকভাবে বিপর্যস্ত আছেন। আর সুচিকিৎসায় মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে।

ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক আব্দুল কাহান জানান, ২১ বছরের ওই শিক্ষার্থী তার সহপাঠীদের জানিয়েছেন, মুখ চেপে ধরায় তিনি অজ্ঞান হয়ে যান এবং রাত ১০টার পরে তার জ্ঞান ফেরে। এরপর বন্ধুদের ফোন করলে তারা গিয়ে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসেন।

সহপাঠীরা জানান, হাসপাতালে নেওয়ার সময় ওই শিক্ষার্থী বাম পায়ে প্রচণ্ড ব্যথার কথা বলছিলেন।

ক্যান্টনমেন্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাহান সাহান জানান, পুলিশ ঘটনাটির তদন্ত করছে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *