বিপিএলের চলতি আসরে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে আগে ব্যাট করে খুলনা টাইগার্সের সামনে ২০৬ রানের লক্ষ্য দাঁড় করে ঢাকা প্লাটুন। যার জবাবটা জুতসই ভাবে বুঝিয়ে দিল খুলনা। নাজমুল হোসেন শান্তর ঝড়ো সেঞ্চুরিতে ৮ উইকেটে জয় তুলে নিয়েছে দলটি। একই সাথে রাজশাহী রয়্যালসের পর নিশ্চিত করলো কোয়ালিফায়ারের খেলা।
এদিন মুমিনুল হকের ৯১ ও মেহেদী হাসানের ৬৮ রনের সুবাদে ২০৫ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করে ঢাকা। পাহাড় সম এই টার্গেট টপকাতে নেমে খুলনাকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন মিরাজ। শান্ত একপ্রান্ত ধরে খেললেও অপর প্রান্তে নিজ ব্যাটে ঝড় তোলেন মিরাজ। চার-ছক্কার ফুলঝুরি সাজিয়ে ২৫ বলে ৪৫ রান করে আউট হন তিনি। যেখানে ৫টি চারের সাথে ছক্কা হাঁকান ২টি।
সতীর্থ্যকে হারিয়ে খোলস ছেড়ে বের হন শান্ত। দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে মাত্র ২৮ বলে ফিফটি তুলে নেন তিনি। এরপর আরও বেশি বিধ্বংসী হয়ে উঠেন শান্ত। থিসারা পেরেরার করা ইনিংসের ১৩তম ওভারে ৩টি ছয়ের মারে তুল নেন ২০ রান। পরের ওভারেই ফিরতে হয় রাইলি রুশোকে। ১৭ বলে ২৩ রান করে রুশো আউট হলে ভাঙে দ্বিতীয় উইকেটে ৮১ রানের জুটি।
এরপর আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। শাহরিয়ার নাফীস, মোহাম্মদ আশরাফুল, সাব্বির রহমান এবং তামিম ইকবালের পর পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে বিপিএলে সেঞ্চুরি করার গৌরব অর্জন করেন শান্ত। দ্বিতীয় কনিষ্ঠতম ক্রিকেটার হিসেবে এ নজির গড়েন তিনি। যা ডেভিড মালান ও আন্দ্রে ফ্লেচারের পর চলতি বিপিএলে তৃতীয় ব্যক্তিগত শতক।
শেষদিকে ৫১ বলে শতক হাঁকানো শান্তর ৮টি চার ও ৭টি ছয়ের সাহায্যে ৫৭ বলে ১১৫ রানের কল্যাণে ৮ উইকেটে জয় তুলে মাঠ ছাড়ে খুলনা টাইগার্স। যা বিপিএলে রেকর্ড করা চেজ। এদিন মুশফিকের ব্যাট থেকে আসে ১৮ রান। এ জয়ের ফলে রাজশাহীর সাথে কোয়ালিফায়ার পর্ব নিশ্চিত করলো খুলনা। ম্যাচ হেরে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে এলিমিনেটর ম্যাচ খেলতে হবে ঢাকা প্লাটুনকে।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে সুবিধা করতে পারেননি ঢাকার দুই ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল ও এনামুল হক বিজয়। তামিম ৫ বলে ১ এবং এবং বিজয় আউট হন ১০ বলে সমান ১০ রান করে। খানিক বাদে জাকের আলীও ৭ বলে ১৪ রান করে ফিরে গেলে বিপাকে পড়ে ঢাকা। এরপরের গল্পটা মুমিনুল হক এবং মেহেদী হাসানের। দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে বাকি সময়টা খুলনার বোলারদের শাসন করতে থাকেন দুজন।
এরই এক ফাকে ৪১ বলে ফিফটি তুলে নেন মুমিনুল। একই পথে হাঁটেন মেহেদীও। টুর্নামেন্টে নিজের তৃতীয় ফিফটির স্বাদ পেতে তিনি খরচ করেন ৩১ বল। এরপর আরো আগ্রাসী হয় উঠেন এই দুই ব্যাটসম্যান। তবে নিজেদের ইনংসের শেষদিকে এসে আক্ষেপ নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় মুমিনুলকে। সেঞ্চুরি থেকে ৯ রান দূরে অর্থাৎ ৯১ রান করে আউট হন তিনি। এতেই ভাঙে চতুর্থ উইকেটে দুজনের ১৩৫ রানের পার্টনারশিপ।
শেষদিকে মেহেদীর ৩৬ বলে অপরাজিত ৬৮ রানের কল্যাণে ২০৫ রানের বিশাল সংগ্রহ পায় ঢাকা প্লাটুন। নিজের ইনিংসটিতে ৩টি চারের সাথে ৫টি ছয় হাকান মেহেদী।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ঢাকা প্লাটুন: ২০৫/৪ (২০ ওভার)
মুমিনুল ৯১, মেহেদী ৬৮*, জাকের আলী ১৪; ফ্রাইলিঙ্ক ২/৩৫, আমির ১/৩৫, শফিউল ১/৫০।
খুলনা টাইগার্স: ২০৭/২ (১৮.১ ওভার)
শান্ত ১১৫*, মিরাজ ৪৫, রুশো ২৩; শাদাব ১/৩২।
ফল: খুলনা ৮ উইকেটে জয়ী।
Leave a Reply