সীমান্তে দেড় মাসে ১১ বাংলাদেশি নিহত : বিজিবি

ভারতের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফ কর্তৃক গত দেড় মাসে সীমান্তে ১১ বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) পরিচালক (পরিকল্পনা) লেফটেন্যান্ট কর্নেল সৈয়দ আশিকুর রহমান।

আজ বুধবার সকালে বিজিবি সদর দফতরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

তিনি বলেন, গত বছরের ২৫ ডিসেম্বর থেকে সীমান্তে নিহতের সংখ্যা ১১ জন। এ ধরনের মৃত্যু যাতে না হয় সে জন্য বিজিবির পক্ষ থেকে যা যা পদক্ষেপ নেওয়ার তা নেওয়া হয়েছে।

আশিকুর রহমান বলেন, সীমান্ত এলাকায় পুরনো ও পরিত্যক্ত বিওপিগুলোয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজিবি। প্রাথমিকভাবে চারটি বিওপি যাচাই-বাছাই করে স্কুলের জন্য গড়ে তোলা হচ্ছে। ২০২১ সাল থেকে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হবে। বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এসব স্কুলের নাম দেওয়া হয়েছে, ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষা নিকেতন’।

তিনি বলেন, আমাদের পুরনো কিছু এলাকার বিওপিগুলো সীমান্ত থেকে একটু ভেতরে। দেশ উন্নত হওয়ায় এখন বাজারঘাট ও স্থাপনা হচ্ছে সীমান্তকেন্দ্রিক। বিওপিগুলো ভেতরে হওয়া আমাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে কিছুটা সমস্যা হয়। তাই আমরা বিওপিগুলো সীমান্তের কাছাকাছি নিয়ে যাচ্ছি। সরকার এটি অনুমোদন দিয়েছে। সারাদেশে আমাদের ১২৬টি বিওপি আছে।

সৈয়দ আশিকুর রহমান বলেন, আমরা ইতোমধ্যে কিছু বিওপি চিহ্নিত করেছি, যেগুলো পরিত্যক্ত। এসব বিওপিতে স্কুল করা হবে। সীমান্তবর্তী এসব এলাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই। সীমান্তের মানুষ দরিদ্র হওয়ায় তারা চোরাকারবারিসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ে। তাদের শিক্ষিত করতে পারলে এই অপরাধ প্রবণতা কমে আসবে। তাই আমরা বিওপিতে স্কুল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

প্রাথমিকভাবে চারটি বিওপিতে স্কুল করা হবে, সেগুলো হলো- ঠাকুরগাঁওয়ের মুন্ডুমালা, সুনামগঞ্জের নবীনগর, কুমিল্লা শিবের বাজার এবং ফেনীর শালধর বিওপি।

এছাড়াও আরও ছয়টি রয়েছে। যেগুলোতে ধীরে ধীরে স্কুল করা হবে। এসব স্কুলে দিনে শিক্ষার্থীরা পড়ালেখা করবে, রাতে বয়স্কদের সচেতন করতে বিভিন্ন সচেতনতামূলক পাঠদান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শিক্ষা নিকেতনে বয়স্কদের কারিগরি প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এর পর তাদের স্বল্প সুদে ঋণের ব্যবস্থা করা হবে। এ সব বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গেও কথা হয়েছে বিজিবি। বিজিবির ধারণা সীমান্তে দরিদ্র মানুষকে সাবলম্বী করতে পারলে চোরাচালান কমে আসবে।

গত মাসে বিজিবির অর্জন তুলে ধরে আশিকুর রহমান বলেন, এক মাসে ৯৭ কোটি ১৮ লাখ ৩ হাজার টাকা মূল্যের চোরাচালানের পণ্য ও মাদক দ্রব্য জব্দ করা হয়েছে। জব্দ করা মাদকের মধ্যে রয়েছে ৭ লাখ ২৩ হাজার ৬৮৫ ইয়াবা, ৪০ হাজার ৭৪১ বোতল ফেনসিডিলসহ মদ, গাঁজা, হেরোইন ও নেশাজাতীয় ইনজেকশন। এ সময়ের মধ্যে প্রায় সাড়ে ১৪ কেজি সোনা, ইমিটেশন গহনা, কসমেটিক, পোশাক, থান কাপড়, কষ্টি পাথরের মূর্তি, কাঠ, ২১ ট্রাক, ৬টি পিকআপ, ১টি প্রাইভেটকার, ১১টি অটোরিকশা ও ৫৪টি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়।

এ সময় মাদক পাচার ও অন্যান্য চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ২৭২ চোরাকারবারিকে এবং অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করার অপরাধে ৩৮ জন বাংলাদেশি ও দুজন ভারতীয় নাগরিককে আটক করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *