অলি খাঁ জামে মসজিদের সম্প্রসারিত দ্বিতীয় তলার উদ্বোধন করলেন মেয়র

হাজারো মুসল্লি নিয়ে নগরীর নওয়াব ওয়ালিবেগ খাঁ (অলি খাঁ) জামে মসজিদের এশার নামাজ আদায়ের মাধ্যমে সম্প্রসারিত দ্বিতীয় তলা উদ্বোধন করলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আলহাজ্ব আ.জ.ম.নাছির উদ্দীন।

মঙ্গলবার (৩ মার্চ) রাতে এর উদ্বোধন করা হয়। এ সময় মসজিদের উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি এ এ এম সাইফুদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল আনোয়ার, কাউন্সিলর সাইয়েদ গোলাম হায়দার মিন্টু, মোজাহেরুল ইসলাম, হাজী মকবুল আহমদ, আলহাজ্ব খালেদ জামান, মফিজুর রহমান, মো. নাজিম উদ্দিন, সৈয়দ রফিকুল ইসলাম, ফারুক খালেক চৌধুরী, সৈয়দ ছগির আহমদ, আলহাজ্ব সেলিম উদ্দিনসহ স্থানীয় গণ্যমান্য মুসল্লি।

দেশ ও জাতির সমৃদ্ধি কামনা করে মুনাজাত পরিচালনা করেন মসজিদের খতিব অধ্যাপক মাওলানা আবদুল মান্নান আশরাফী।

সম্প্রসারিত এ দ্বিতীয় তলা উদ্বোধনের ফলে মুসল্লিরা এখন থেকে মসজিদেও মূল ভবণের দ্বিতীয় তলায় বসে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতে পারবেন।

দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্য শৈলীর এই মসজিদটির পুরাতন অবকাঠামো অক্ষুণ্ন রেখে মসজিদটি সম্প্রসারিত করা হয়েছে। প্রতি ফ্লোর পাঁচ হাজার বর্গফুট হিসাবে ছয় তলার সর্বমোট ৩০ হাজার বর্গফুট আয়তনের এই মসজিদ নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ১২ কোটি টাকা। এতে চার হাজার মুসল্লি এক সাথে নামাজ আদায় করতে পারবেন। সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে এই মসজিদের উন্নয়ন কাজের আওতায় প্রতি ফ্লোরের সৌন্দর্যবর্ধন, টাইলস স্থাপনসহ নানামুখী কাজ সম্পন্ন করা হবে। এছাড়া আরো থাকছে দুইটি লিফট, দুইটি সিঁড়ি, ৮৫ ফুট বিশিষ্ট সুউচ্চ একটি মিনার, কারপার্কিং ব্যবস্থা, টয়লেট, ওজুখানা, ইমাম, মুয়াজ্জিন ও অফিস কক্ষ এবং পাঠাগার ইত্যাদি। ইতোমধ্যে মসজিদের মূল ভবণের ৬ষ্ঠ তলা পর্যন্ত আর সি ওয়ার্ক কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে।

সাবেক মেয়র আলহাজ্ব এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী আমলেই ৬ষ্ঠ তলা পর্যন্ত আরসি ওয়ার্ক সম্পন্ন হয়। এতে ব্যয় হয় প্রায় চার কোটি টাকা। জনাব মহিউদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুর পর চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আলহাজ্ব আ জ ম নাছির উদ্দীন এই মসজিদের দায়িত্ব ভার গ্রহন করেন।

সিটি মেয়রের উদ্যেগে মসজিদের দ্বিতীয় তলার কাজ হিসেবে ইতোমধ্যে দেওয়ালে রং,প্লাষ্টার,ফ্যান, লাইটিং,জানালায় গ্রীল, থাই এ্যালূমিনিয়াম গ্লাস,দরজা, ফ্লোরে টাইলস বসানোর কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

এছাড়া তৃতীয় তলার কাজও শিঘ্রই শেষ হবে। ফলে মসজিদের মুসল্লীরা মসজিদের মূল ভবণে বসেই নামাজ আদায় করতে পারবে। এই ফ্লোরের কাজ সম্পন্ন করতে ব্যয় হয়েছে প্রায় দেড় কোটি টাকা।

নগরীর চকবাজার এলাকায় অবস্থিত ইসলামের প্রাচীন স্থাপত্য এই মসজিদ। ১৭১৩ সালে মোগল আমলে নওয়াব ওয়ালিবেগ খাঁ এই মসজিদটি নির্মাণ করেন। উদ্বোধনকালে সিটি মেয়র বলেন মসজিদ নির্মাণ, সংস্কার ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা অত্যন্ত সওয়াবের কাজ। ইসলামে মসজিদ নির্মাণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের পক্ষ থেকে সর্বপ্রথম পৃথিবীর বুকে যে ঘর নির্মাণ করা হয়েছিল তা হলো মসজিদুল হারাম বা পবিত্র কাবাঘর। নবী করিম সা: মদিনায় হিজরতের পর সর্বপ্রথম সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়ে যে কাজটি করেছিলেন তা হলো মসজিদ নির্মাণ। কোনো এলাকায় মসজিদ থাকা এটা মুসলিম এলাকার পরিচয়পত্রের মতো। মসজিদ মুসলমানদের জন্য একটি আশ্রয়স্থল। তাই আমাদের সবাইকে মসজিদ নির্মাণ ও সংরক্ষণের সাথে সংশ্লিষ্ট থাকার তাওফিক দানে মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে সহযোগিতা কামনা করেন সিটি মেয়র।

এ প্রসঙ্গে তিনি নামাজ, রোজা, হজ্ব, যাকাত আদায়ের পাশাপাশি রাসুলে করিম (স:) প্রদর্শিত পথ অনুসরণ করার আহ্বান জানান। মেয়র বলেন, কায়মনোবাক্যে আমরা আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইলে তিনি ক্ষমা করে দেন। কিন্তু মানুষের হক হরণকারীকে তিনি কখনো ক্ষমা করেন না। যতক্ষন পর্যন্ত যার হক কেড়ে নেয়া হয়েছে সে ক্ষমা না করে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *