কুবির কোনো ড্রেনেরই নেই পানি নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা, ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ

কুবি প্রতিনিধি: কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ক্যাফেটেরিয়ার সন্নিকটস্থ একটি জায়গায় ময়লা পানি ও বর্জ্য জমে একটি দুর্গন্ধযুক্ত জায়গা তৈরি হয়েছে। ক্যাফেটেরিয়ার ময়লা পানি ও বর্জ্য যাওয়ার ড্রেন ও নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় রাস্তার পাশে এসে জমেছে বর্জ্যগুলো। আর তৈরি হয়েছে দূর্গন্ধ।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ার পশ্চিম পাশে ও শহীদ মিনারে যাওয়ার রাস্তার পাশের জায়গাটিতে ক্যাফেটেরিয়ার বর্জ্য ও ময়লা পানি এসে জমে জায়গাটি দুর্গন্ধযুক্ত হয়ে গিয়েছে। এখন শিক্ষার্থীরা রাস্তা দিয়ে হাটার সময় নাকে ভেসে আসে দুর্গন্ধ।

অথচ এই রাস্তাই হচ্ছে শহীদ মিনার, মসজিদ, কেন্দ্রীয় মাঠ ও বাস স্টপেজে যাওয়ার একমাত্র রাস্তা। এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার পাশে এমন নোংরা পরিবেশ হওয়ায় শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করছে।

এ ব্যাপারে অর্থনীতি ১৩ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মাহিন উদ্দিন বলেন, “আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার পাশে যদি এমন বিব্রতকর ও দুর্গন্ধযুক্ত স্থান থাকে তবে তা খুবই কষ্টকর। এদিকে হাটলে আমাদের নাক বন্ধ করে হাটতে হয়। খুবই বাজে গন্ধ ভেসে আসে নাকে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবাদী সংগঠন অভয়ারণ্য’র সভাপতি রিজওয়ান কবীর বলেন, “ক্যাফেটেরিয়ার পাশে যে দুর্গন্ধযুক্ত জায়গা তৈরি হয়েছে সেটাতে শিক্ষার্থীদের মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি রয়েছে। শিক্ষার্থীদের এ রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করার সময় নাকে-মুখে হাত দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। প্রশাসনের এ সমস্যা সমাধানে কার্যকরী পদক্ষেপ হাতে নেয়া উচিত।”

এ ব্যাপারে ক্যাফেটেরিয়ার পরিচালক মহিউদ্দিন মজুমদার বলেন, “আমরা সবসময় ক্যাফেটেরিয়া ও এর আশেপাশে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার চেষ্টা করি। তবে এখন এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে কারন পশ্চিমদিকের ড্রেন দিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেই। পানি ও বর্জ্য নিষ্কাশনের ব্যবস্থা থাকলে এমন অবস্থা হতো না।”

শুধু ক্যাফেটেরিয়াই নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোথাও ড্রেনের নেই কোনো পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা। আর তাই প্রত্যেকটি ড্রেনেই জমছে ময়লা ও বর্জ্য। তাই বাড়ছে মশা। এসব জায়গাগুলো থেকে যেমন দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে, তেমনি শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকিও রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র মেডিকেল অফিসার ডাঃ মাহমুদুল হাসান খান বলেন, “এমন পরিবেশে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি রয়েছে। পাশাপাশি শ্বাসকষ্ট রোগীদের জন্য এটা খুবই ভয়ানক এবং মশাবাহীত যে রোগগুলো আছে সেগুলো ছড়াবে।”

ড্রেন ও ড্রেনের পানি নিষ্কাশনের ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্ত্বাবধারক প্রকৌশলী এস. এম. শহিদুল হাসান বলেন, “ক্যাফেটেরিয়ার ড্রেনের কাজ আমাদের ছিল না, তবে সামনে যদি ড্রেনের জন্য বাজেট পাই তবে ড্রেনের ব্যবস্থা করবো। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের পানি নিষ্কাশনের যে সমস্যা রয়েছে সেটি আমরা জানি। বিশ্ববিদ্যালয়ে কোথাও পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেই। এ নিয়ে আমাদের সামনে কাজ করতে হবে।”

সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (চলতি দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, “ক্যাফেটেরিয়ার পাশে এমন পরিবেশ ব্যাপারটা আসলেই দুঃখজনক। শিক্ষার্থীদের চলাচলের জায়গার আশেপাশে এরকম দুর্গন্ধ জায়গা থাকবে তা আমাদের কাম্য নয়। আমরা এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নিব।”

এছাড়াও তাৎক্ষণিক তিনি সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে ইঞ্জিনিয়ার দপ্তরকে নির্দেশ দেন।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *