ত্রিনবাগো নাইট রাইডার্সকে ১২ রানের ব্যবধানে হারিয়ে সিপিএল ২০১৯ আসরের ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করল বার্বাডোজ ট্রাইডেন্টস। রবিবার শিরোপা জয়ের লক্ষ্যে গায়ানা অ্যামাজন ওয়ারিয়র্সের মুখোমুখি হবে বার্বাডোজ।
প্রথমে ব্যাট করে স্কোরবোর্ডে ৬ উইকেটে ১৬০ রান জমা করে বার্বাডোজ। ম্যাচের শেষ ১৪ বলে রেইমন্ড রেইফার ও অ্যাশলে নার্সের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে লড়াকু পুঁজি পায় দলটি। সপ্তম উইকেট জুটিতে ১৪ বলে ৪৮ রান করেন তারা। রান তাড়া করতে নেমে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে ত্রিনবাগো। সেকুগে প্রসন্নের ২৭ বলের ৫১ রানের ঝড়ো ইনিংস ত্রিনবাগোকে স্বপ্ন দেখালেও, তার বিদায়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় দলটি। শেষ পর্যন্ত ১৪৮ রানে ত্রিনবাগোর ইনিংস শেষ হলে ১২ রানের জয় পায় বার্বাডোজ।
দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে ব্যাট হাতে ১৮ রান করার পর বল হাতে আজও খরুচে ছিলেন সাকিব। ২ ওভার থেকে ২৭ রান খরচ করলেও দলকে এনে দিতে পারেননি কাঙ্ক্ষিত সাফল্য।
১৬১ রানের জয়ের লক্ষ্যে শুরুটা দারূন পেয়েছিল ত্রিনবাগো। সাকিবের করা ইনিংসের প্রথম ওভারে ৪ চার মেরে রান তাড়া শুরু করেন সুনীল নারিন। দ্বিতীয় ওভারেই ঘুরে যায় ম্যাচের মোমেন্টাম। জেসন হোল্ডার ২ রান খরচায় তুলে নেন লেন্ডল সিমন্সের উইকেট। পরবর্তী ওভারে আউট হয়ে যান নারিনও।
দুই ওপেনারের বিদায়ে রান তোলার গতিতে ভাটা পড়ে ত্রিনবাগোর। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকা দলটি ৮১ রান তুলতেই হারিয়ে বসে ৫ উইকেট। ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে কাইরন পোলার্ড ও প্রসন্ন’র ৩৯ রানের জুটি ম্যাচে প্রতিরোধ গড়ে। পোলার্ড ২৩ রান করে আউট হলেও দ্রুতগতিতে রান তুলে দলকে খেলায় ধরে রাখেন প্রসন্ন।
৪ চার ও ছক্কায় অর্ধশতক পূর্ণ করে দলকে ফাইনালের স্বপ্ন দেখান লঙ্কান এ ব্যাটসম্যান। ২০তম ওভারের প্রথম বলে তিনি আউট হলে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় ত্রিনবাগো। রেইফারের দুর্দান্ত ইয়র্কারে ৫১ রানে তার বিদায়ের পর ১৪৮ রানে অল-আউট হয় দলটি।
বার্বাডোজের বোলারদের মধ্যে দুটি করে উইকেট লাভ করেন মোট চারজন বোলার। হোল্ডারের ১ উইকেটের বিপরীতে দুটি করে উইকেট নেন হ্যারি গুরনে, হেইডেন ওয়ালশ, নার্স ও রেইফার।
এর আগে ভেজা আউটফিল্ডের জন্য প্রায় ঘন্টা দেড়েক পর শুরু হওয়া ম্যাচে টস জিতে ত্রিনবাগো। দীর্ঘসময় ধরে কাভারে ঢাকা উইকেটের সুবিধা নিতে প্রথমে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় দলটি। ম্যাচের শুরু থেকেই করতে থাকে নিয়ন্ত্রিত বোলিং। সাফল্য পেতে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি দলটিকে। বার্বাডোজের দলীয় ২৭ রানে অ্যালেক্স হেলসকে (১০) আউট করে ম্যাচে প্রথম সাফল্য তুলে নেয় ত্রিনবাগো।
হেলসের বিদায়ের পর ক্রিজে আসেন সাকিব। ইতিবাচক ব্যাটিংয়ে আভাস দেন বড় কিছু করার। যদিও শেষ পর্যন্ত আজও তা আর করতে পারেননি বাঁহাতি এ ব্যাটসম্যান। ১ ছক্কা ও চারে ১২ বল মোকাবেলায় ১৮ রান করেন তিনি। পেরির বলে ফিরতি ক্যাচ দিলে দলীয় ৫১ রানে আউট হন তিনি।
সাকিবের আউটের পর জনসন চালর্স ও জেপি ডুমিনির ব্যাটে ভালোভাবেই এগিয়ে যাচ্ছিল বার্বাডোজ। ম্যাচের মাঝপথে সেই ছন্দ ধরে রাখতে পারেনি দলটি। ডুমিনির (১০) চোট পেয়ে মাঠ ছাড়ার পর ৩৫ রান করে জনসনও আউট হয়ে গেলে ছন্দপতন ঘটে বার্বাডোজের। ত্রিনবাগোর বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের বিপরীতে জনাথন কার্টার, জেসন হোল্ডাররা বলার মতো কিছুই করে ওঠতে পারেনি। যা শঙ্কা জাগায় বার্বাডোজের লড়াকু সংগ্রহের।
তবে শেষ পর্যন্ত তা হতে দেননি রেইফার ও নার্স। সপ্তম উইকেট জুটিতে ঝড় তুলে দলকে লড়াকু পুঁজি এনে দেন তারা। ইনিংসের শেষ ১৪ বলে ৪৮ রান করে বার্বাডোজকে ৬ উইকেটে ১৬০ রান করতে সাহায্য করেন নার্স ও রেইফার। ৯ বল থেকে ৩ ছক্কায় ২৪ রান করে অপরাজিত থাকেন নার্স। আর ১৮ বল মোকাবেলায় ২ ছক্কার সাহায্যে রেইফার করেন ২৪ রান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
বার্বাডোজ ট্রাইডেন্টস; ১৬০/৬ (২০ ওভার)
চার্লস ৩৫, রেইফার ২৪*, নার্স ২৪*, হোপ ২৩, সাকিব ১৮; পেরি ৪-০-২৫-২।
ত্রিনবাগো নাইট রাইডার্স: ১৪৮/১০ (১৯.৩ ওভার)
প্রসান্ন ৫১, পোলার্ড ২৩, রামদিন ২১; নার্স ৪-০-১৪-২।
ফল: বার্বাডোজ ট্রাইডেন্টস ১২ রানে বিজয়ী।
Leave a Reply