করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ে দেশবাসীর বন্দর কেন্দ্রিক উৎকন্ঠা,সরজমিনে দেখতে গেলেন সুজন

সৃষ্টিকর্তার আশীর্বাদ এবং প্রকৃতির অপার মহিমান্বিত কর্নফুলী নদীর পাড় ঘেষে সৃষ্ট চট্টগ্রাম বন্দর। বাংলাদেশের অর্থনীতির সোনার ডিম পাড়া রাজহাঁস এই বন্দর। স্বাভাবিকভাবেই বৈশ্বিক মহামারী সৃষ্টিকারী এ ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে উৎকন্ঠায় দেশের আপামর জনগন।

আর এই উৎকন্ঠায় করোনাভাইরাস বিস্তার প্রতিরোধে চট্টগ্রাম বন্দরের গৃহীত ব্যবস্থার সর্বশেষ পরিস্থিতি জানতে আজ সোমবার (২২ মার্চ) চট্টগ্রাম বন্দরে গিয়ে হাজির হন বর্তমান সময়ে চট্টগ্রামের আলোচিত সামাজিক সংগঠন জনদুর্ভোগ লাঘবে জনতার ঐক্য চাই শীর্ষক নাগরিক উদ্যোগের প্রধান উপদেষ্টা ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন।

এ সময় তাঁকে স্বাগত জানান চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য, প্রশাসন ও পরিকল্পনা মোঃ জাফর আলম।

পরে তার অফিস কক্ষে মতবিনিময় সভায় সুজন বলেন বাংলাদেশের বাণিজ্যের প্রধান প্রবেশদ্বার হচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর। এই বন্দরে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৪ থেকে ৫ হাজার গাড়ী প্রবেশ করে। প্রতিটি গাড়ীর সাথে একজন চালক এবং একজন সহকারী থাকে। এছাড়া পণ্য ডেলিভারিসহ অন্যান্য কাজে বন্দরে আরো প্রায় ৪ থেকে ৫ হাজার মানুষের বন্দরে প্রবেশ। তাছাড়া জাহাজে করে বিদেশ থেকেও প্রতিদিন প্রচুর পরিমানে নাবিক এবং ক্রু বন্দরে প্রবেশ করে থাকে। স্বাভাবিকভাবে এতো বিপুল সংখ্যক জনগনের স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে সারাদেশের মানুষের মতো আমরাও উদ্বিগ্ন। এর পাশাপাশি বিভিন্ন ক্যাটাগরীর শ্রমিকরা প্রতিদিনই বন্দরের অপারেশনাল কাজে বিদেশী জাহাজে প্রবেশ করে।

তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর অর্থনৈতিকভাবে একটি শক্তিশালী প্রতিষ্টান। এ বন্দরের কাছে চট্টগ্রামবাসীর অনেক চাওয়া পাওয়া রয়েছে। আমরা আশা করবো চট্টগ্রাম বন্দর একটি সেবাধর্মী প্রতিষ্টান হিসেবে করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। বিশেষ করে বন্দরের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল ব্যবহারকারী, কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং শ্রমিকদের কাজে যোগদানের পূর্বে মাস্ক, তরল সাবান অথবা হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিস্কার এবং হ্যান্ড গ্লাভস পরিধান করানোর আহবান জানান তিনি।

এছাড়া বন্দরের সকল প্রবেশ পথে থার্মাল মিটার দিয়ে শরীরের তাপমাত্রা মাপার ব্যবস্থা করার জন্যও বন্দর কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি। এছাড়া করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের জন্য নগরীর অন্যান্য হাসপাতালের পাশাপশি চট্টগ্রাম বন্দর পরিচালিত হাসপাতালেও আইসুলেশন ব্যবস্থা রাখার জন্য অনুরোধ জানান সুজন।

তিনি বন্দর হাসপাতালে কর্মরত ডাক্তার, নার্স, প্যারামেডিকেল, আয়াদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য পিপিই সরবরাহ করারও আহবান জানান।

প্রয়োজনবোধে বন্দর হাসপাতাল থেকে অন্যান্য হাসপাতালে পিপিই সরবরাহ করার জন্য প্রস্তুতি রাখার অনুরোধ করেন। তাছাড়া বন্দরের আশেপাশে বিভিন্ন বস্তি এবং নিম্ন আয়ের লোকজনদের মাঝেও মাস্ক, তরল সাবান এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজার সরবরাহ করার আহবান জানান। বন্দরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও প্রবেশ মুখ প্রতিনিয়ই পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখা এবং নিয়মিত ব্লিচিং পাউডারও ছিটানোর অনুরোধ জানান।

তিনি বলেন, আমরা সবাই যদি মানবিক দিক বিবেচনায় কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এ দুর্যোগ মোকাবেলায় কাজ করি তাহলে আমরা অবশ্যই এ দেশের মানুষকে করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা করতে পারবো।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *