দেশের অর্থনীতি সচল রাখা বন্দর শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান সুজনের

অর্থনীতি সচল রাখা বন্দর শ্রমিকদের নিরাপত্তা চাই সুজন

২৪ ঘন্টা ডট নিউজ। চট্টগ্রাম ডেস্ক : সরকার নির্ধারিত ছুটির দিনেও দেশের অর্থনীতি’র চাকা সচল রাখা বন্দর শ্রমিকদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহবান জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন।

দেশব্যাপী করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় সতর্কতামূলক ব্যবস্থার অংশ হিসেবে তিনি আজ ৩০ মার্চ সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের নিকট এ আহবান জানিয়েছেন।

জনদুর্ভোগ লাঘবে জনতার ঐক্য চাই শীর্ষক নাগরিক উদ্যোগের প্রধান এ উপদেষ্টা বিজ্ঞপ্তিতে বলেন বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র হচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর। দেশের আমদানি রপ্তানি বাণিজ্যের ৯০ শতাংশেরও বেশি কার্যক্রম সম্পন্ন হয় এই বন্দরের মাধ্যমে।

দেশব্যাপী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় সতর্কতামূলক ব্যবস্থার অংশ হিসেবে সরকার গত ২৬শে মার্চ থেকে ৪এপ্রিল পর্যন্ত টানা ১০ দিনের সরকারি ছুটি ঘোষণা করেছে। ছুটির দিনগুলোতেও দেশের আমদানি রপ্তানি স্বাভাবিক এবং ভোগ্য পণ্য সরবরাহ অব্যাহত রাখার জন্য চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ নানামূখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে যা প্রশংসার দাবীদার।

কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্যি যে বন্দরের অভ্যন্তরে যে সকল শ্রমিকগণ বিভিন্ন অপারেশনাল কাজ এবং জাহাজে উঠা নামার কাজে নিয়োজিত রয়েছে তাদের নিরাপত্তা সুরক্ষাটা অনেকাংশেই উপেক্ষিত।

এ সকল শ্রমিকরা মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস ও সরকার নির্ধারিত স্বাস্থ্য বিধি না মেনেই তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। চট্টগ্রাম বন্দর কেন্দ্রিক উদ্বেগ এবং উৎকন্ঠা সত্বেও কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা এখানে ব্যাপকভাবে পরিলক্ষিত হচ্ছে। এতে করে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে যারা প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তারা নিজেরাই মৃত্যু ঝুঁকির মধ্যে রয়ে গিয়েছে।

সুজন বলেন, বর্তমান দেশের উদ্ভুত পরিস্থিতিতে এতো বিপুল সংখ্যক শ্রমিকের স্বাস্থ্যের দায় দায়িত্ব কে নিবে তা সচেতন মহলকে ভাবিয়ে তুলছে। এছাড়া যে সকল শ্রমিক বর্তমান সাধারণ ছুটিতে জীবনের মায়া ত্যাগ করে কাজে যোগদান করেছে তাদেরকে বিশেষ সুবিধা প্রদান করার জন্যও বন্দর কর্তৃপক্ষের নিকট আহবান জানান তিনি।

তিনি আরো বলেন বন্দর কেন্দ্রিক দেশবাসীর উৎকন্ঠা সরজমিনে জানতে গত ২২শে মার্চ চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য, প্রশাসন ও পরিকল্পনা মোঃ জাফর আলম এর সাথে স্বাক্ষাত করি ও বন্দরের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল ব্যবহারকারী, কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং শ্রমিকদের কাজে যোগদানের পূর্বে মাস্ক, তরল সাবান অথবা হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিস্কারসহ হ্যান্ড গ্লাভস পরিধান নিশ্চিত করার অনুরোধ করি।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ সব ধরণের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করার ঘোষণা প্রদান করলেও কার্যত তাদের সে ঘোষণা মাঠ পর্যায়ে কার্যকর হচ্ছে না। তাই অবিলম্বে বন্দরের অপারেশনাল কাজে নিয়োজিত সকল শ্রমিক ও স্টাফদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার্থে কাজে যোগদানের পূর্বে তরল সাবান দিয়ে হাত পরিস্কারকরণ, মাস্ক এবং হ্যান্ড গ্লাভস পরিধান করানোর আহবান জানান সুজন।

এছাড়া বন্দরের সকল প্রবেশ পথে থার্মাল মিটার দিয়ে শরীরের তাপমাত্রা মাপার ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্যও বন্দর কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি বলেন আমরা আশা করি চট্টগ্রাম বন্দর দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে নিজেদের সুরক্ষার পাশাপশি চট্টগ্রামবাসীকেও সুরক্ষা প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করবে। বন্দরের নৈতিক দায়িত্ব রয়েছে জনগনের এ দুর্যোগে মানুষের পাশে দাড়ানোর।

তিনি করোনাভাইরাস থেকে নগরবাসীকে মুক্ত করার জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে নগরবাসীর মাঝে মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস, হ্যান্ড ওয়াশ, হ্যান্ড স্যানিটাইজারসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপকরণ সরবরাহ করার আহবান জানান। এছাড়া করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের জন্য চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ পরিচালিত হাসপাতালে আইসুলেশন ব্যবস্থা রাখার অনুরোধ জানান।

তিনি আরো বলেন চট্টগ্রাম বন্দর অর্থনৈতিকভাবে একটি শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান। করোনাভাইরাস কেন্দ্রিক দুর্যোগে রাষ্ট্রের পাশাপশি স্থানীয়ভাবে অসহায় মানুষদের নিকট আন্তরিকতার সাথে সাহায্যের হাত প্রসারিত করার জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষের নিকট বিনীত অনুরোধ জানান সুজন।

২৪ ঘন্টা/আর এস পি

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *