করোনা ভাইরাসে (কোভিড-১৯) পুরো বিশ্বের চিকিৎসা ব্যবস্থা ভঙ্গুর হয়ে পরেছে। জীবন বাঁচানোর যে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম, তার অপ্রতুলতা সব দেশেই হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে। করোনা ভাইরাসে খারাপ অবস্থায় চলে গেলে রোগীর ভেন্টিলেটরের প্রয়োজন হয়। আফগানিস্তানে মেয়েদের একটি দল গাড়ির যন্ত্রাংশ দিয়ে কম খরচে সেই ভেন্টিলেটর তৈরির চেষ্টা করছেন। তাদের এ আবিষ্কার করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে দেশটির লড়াইকে আরও গতিশীল করবে বলে আশা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের।
রোববার (১৯ এপ্রিল) পর্যন্ত আফগানিস্তানে প্রায় এক হাজার জনের করোনা ভাইরাস সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। মারা গেছেন ৩০ জন। যদিও যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির প্রকৃত অবস্থা এর থেকে কয়েকগুণ বেশি খারাপ৷ পর্যাপ্ত ‘টেস্টিং কিট’ না থাকায় সেখানে কোভিড-১৯ শনাক্তের পরীক্ষা যথাযথভাবে করা যাচ্ছে না।
পাঁচ সদস্যের ‘আফগান অল গার্লস রোবট টিম’-এর এ মেয়েদের বয়স ১৪ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে। যদি তারা যন্ত্রটি সফলভাবে তৈরি করতে পারে এবং সরকারের অনুমোদন পায় তবে মাত্র তিনশ মার্কিন ডলারে সেটি বাজারে ছাড়তে পারবে বলে আশা এ কিশোরীদের। বাজারে একটি ভেন্টিলেটরের দাম প্রায় ৩০ হাজার মার্কিন ডলার।
ভেন্টিলেটর তৈরিতে তারা ‘টয়োটা করোলা’ মডেলের গাড়ির ইঞ্জিন ও ব্যাটারি ব্যবহার করছে। আফগানিস্তানে প্রথম হেরাত প্রদেশে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়। করোনা সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে শুরু করতে হেরাতের গভর্নর সরকারের কাছে আরও বেশি ভেন্টিলেটরের ব্যবস্থা করার আহ্বান জানান। ওই আহ্বানে সাড়া দিয়েই এ কিশোরীরা ভেন্টিলেটর তৈরির প্রজেক্ট শুরু করে।
আফগানিস্তানের একটি প্রযুক্তি কোম্পানি ওই কিশোরীদের ভেন্টিলেটর তৈরিতে অর্থ সহায়তা দিচ্ছে। কোম্পানিটির পরিচালক রোয়া মাহবুব বলে, দলটি স্থানীয় স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এবং হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির এক দল বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির একটি নকশার ভিত্তিতে প্রাথমিক যন্ত্র তৈরির কাজ করছে৷
অবশ্য কিশোরীদের এ দলটির খবরের শিরোনাম হওয়ার ঘটনা এটাই প্রথম নয়। ২০১৭ সালে তারা ওয়াশিংটনে একটি রোবটিক্স প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ার আমন্ত্রণ পেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসার জন্য আবেদন করেছিল। কিন্তু তাদের ভিসা দিতে অস্বীকৃতি জানানো হয়। হইচই শুরু হলে খোদ প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হস্তক্ষেপে তারা যুক্তরাষ্ট্র যাওয়ার অনুমতি পেয়েছিল।
Leave a Reply