হালদা নদীতে আবারও ডলফিন হত্যা

রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি:এশিয়ার প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র হালদা নদীতে আবারো ডলফিনের মৃত্যু হয়েছে।

রবিবার (২৪ মে) সকালে রাউজানের উরকিরচর ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডে মৃত ডলফিন ভাসতে দেখে স্থানীয় লোকজন।

পরে খবর পেয়ে রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জোনায়েদ কবির সোহাগ ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়্যদ আব্দুল জব্বার সোহেল ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃত ডলফিনটি স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় মাটিচাপা দেন।

হালদা বিশেষজ্ঞ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণী বিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মঞ্জুরুল কিবরিয়া বলেন, বাহ্যিক লক্ষণ দেখে মনে হচ্ছে মাছ ধরার জালে আটকে গিয়ে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে ডলফিনটির মৃত্যু হয়েছে। ডলফিনটি ৭ ফুট ১ ইঞ্চি দৈর্ঘ্যের এবং ওজন আনুমানিক ৭০-৮০ কেজি। এটি এযাবত কালের মারা যাওয়া সবচেয়ে বড় সাইজের ডলফিন।

আজকেরটিসহ ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর থেকে গত আড়াই বছরে ২৫টি ডলফিনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগে গত ২১ মার্চ ২৩ তম ডলফিনের মৃতদেহ পাওয়া যায় রাউজান পশ্চিম গুজরার আজিমের ঘাট এলাকায়। প্রতিটি মৃত ডলফিনই হালদা নদী থেকে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

উল্লেখ্য, সারা বিশ্বের বিভিন্ন নদীতে ডলফিন আছে মাত্র ১ হাজার ১০০টি। এর মধ্যে হালদাতে প্রায় ১৬৬ টি ডলফিন আছে। ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার (আইইউসিএন) হালদা নদীর ডলফিনের এই প্রজাতিকে অতি বিপন্ন (লাল তালিকাভুক্ত) হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এগুলো বিশ্বের অতি বিপন্ন প্রাণী। ডলফিন যে নদীতে ডলফিন থাকে বোঝা যায় যে সে নদীটা জীবন্ত। তাই ডলফিন চলে গেলে মাছেরও ক্ষতি হবে বলে মনে করেন গবেষক ও সংশ্লষ্টরা। বিশ্বের অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রাণী বাংলাদেশ হারাবে যদি সত্যিই ডলফিন চলে যায় বা আর না থাকে।

মা মাছ ও লাল তালিকাভুক্ত অতি বিপন্ন ডলফিন রক্ষায় সরকার ২০১০ সালে চট্টগ্রামের নাজিরহাট থেকে কালুরঘাট পর্যন্ত হালদা নদীর প্রায় ৪০ কিলোমিটার এলাকাকে জলজ প্রাণীর অভয়ারণ্য ঘোষণা করে।

তবে রাউজান উপজেলার ছত্তার খালের মুখ থেকে হাটহাজারী উপজেলার মদুনাঘাট পর্যন্ত নদীর প্রায় ১০ কিলোমিটার এলাকা ডলফিনের মূল বিচরণক্ষেত্র।

২৪ ঘণ্টা/এম আর/নেজাম

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *