ত্রাণ ভিক্ষা নয়, চিকিৎসা সহায়তা চাই;চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের নিকট সুজনের করুণ আকুতি

করোনা দুর্যোগের সময় বাংলাদেশ অর্থনীতির হৃৎপিন্ড খ্যাত চট্টগ্রাম বন্দরের অমানবিক নিস্পৃহতায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন।

তিনি আজ সোমবার (১ জুন) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

এ সময় জনদুর্ভোগ লাঘবে জনতার ঐক্য চাই শীর্ষক নাগরিক উদ্যোগের প্রধান উপদেষ্টা সুজন বলেন, চট্টগ্রামের ভৌগলিক সুবিধার উপর গড়ে উঠেছে চট্টগ্রাম বন্দর। এই বন্দরের হাত ধরে বাংলাদেশ সম্পদের সমৃদ্ধির উচ্চশিখরে আরোহণ করেছে। বন্দরের আয় দিয়েই অনেক গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক অবকাঠামো গড়ে উঠেছে। কিন্তু বাপ-দাদার ভিটেমাটির বিনিময়ে যেই বন্দর তৈরি, চট্টগ্রামবাসীর কোনো বিপদ আসলে সেই বন্দরের দরজা সাধারণত বন্ধই থাকে।

তিনি বলেন, অনেক চট্টগ্রামবাসীই বাপ-দাদার ভিটেমাটি হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে, তবু তাদের মনে সান্তনা, তাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে বাংলাদেশ জাতীয় সমৃদ্ধির উচ্চসোপানে আরোহন করছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় এই যে, বৈশ্বিক দুর্যোগ করোনাকালে এখন পৃথিবীর বাকি দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশও বিপর্যস্ত।

সুজন বলেন, আমাদেরই চট্টগ্রাম নগরী এখন করোনা হটস্পটে পরিণত হয়েছে। শত শত চট্টগ্রামবাসী করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে প্রত্যহ, প্রতিদিনই দেখা যাচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। চট্টগ্রাম বন্দরেরই পাঁচজন কর্মচারী ও বন্দর সংশ্লিষ্ট মানুষ এই পর্যন্ত মারা গিয়েছে করোনাক্রান্ত হয়ে। ঘরে ঘরে যখন দূর্যোগরূপী করোনা মৃত্যুর কড়া নাড়ছে, তখন চট্টগ্রামবাসীর আত্মত্যাগে প্রতিষ্ঠিত বন্দর যাদের হাজার কোটি টাকা অলস পড়ে আছে, তারা এই দুর্যোগে সামান্য মানবিক সহযোগিতা দেখায়নি কাউকে। যেটি খুবই দুঃখ, ক্ষোভ ও লজ্জার বিষয়। চট্টগ্রাম বন্দরের এই নীরব অবহেলা জনমনে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে।

তিনি বলেন চট্টগ্রামের মানুষ বন্দরের কাছে ত্রাণ ভিক্ষা চায় না। এই চরম দুর্যোগের সময় মানুষ আশা করে যে মানুষের জীবন বাঁচাতে বন্দর কর্তৃপক্ষ তাদের হাজার কোটি টাকার সম্পদ হতে কিছু অর্থ চিকিৎসা সহযোগিতায় ব্যয় করবে। বন্দরের অলস পড়ে থাকা হাসপাতালের দরজা চাইলেই জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া ও ভেন্টিলেটরের ব্যবস্থা করা বন্দর কর্তৃপক্ষের পক্ষেই সম্ভব।

এছাড়া বন্দর কর্তৃপক্ষ পরিচালিত হাসপাতালে বন্দরের কর্মচারীদের জন্য কিছু সংখ্যক সিট সংরক্ষিত রেখে বাকি সিটগুলো সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হোক। বেসরকারী উদ্যোগে পরিচালিত মা ও শিশু হাসপাতালের বিশাল ভবন ৫০০ রোগী ধারনের ক্ষমতা রাখে, কিন্তু উপযুক্ত সহযোগিতার অভাবে খালি পড়ে রয়েছে। হাসপাতালে করোনা সংকটকালীন যাবতীয় চিকিৎসা ব্যয় ও চিকিৎসা সংক্রান্ত অন্যান্য সরঞ্জামাদি ক্রয়ে বন্দরের তহবিল হতে ব্যয়ভারও গ্রহণ করতে পারে। তাছাড়া বন্দর সংশ্লিষ্ট ও বন্দরে চাকুরিরত প্রত্যেক শ্রমিকের পৃথক নমুনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করার আহ্বান জানান জনাব সুজন। এই করোনা মহামারির সময় যেসব বন্দর কর্মচারী প্রাণ হারিয়েছেন তাদের পরিবারকে উপযুক্ত সহায়তার আহ্বানও জানান তিনি।

চট্টগ্রাম বন্দর জাতীয় সমৃদ্ধির মূলকেন্দ্র। উক্ত প্রতিষ্ঠান থেকে জনগনের আকাঙ্ক্ষিত প্রত্যাশা রয়েছে, প্রত্যাশা পূরণে বন্দরের মানবিক সাড়াও প্রত্যাশা করেন নাগরিক উদ্যোগের প্রধান উপদেষ্টা খোরশেদ আলম সুজন।

২৪ ঘণ্টা/এম আর

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *