চাঞ্চল্যকর ফখরুল হত্যার একবছর : মুল ২ আসামি এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে

Date:

রাউজান পৌরসভার গহিরায় প্রবাসী ফখরুল ইসলামকে শ্বশুর বাড়িতে জবাই করার আলোচিত-চাঞ্চল্যকর ঘটনার একবছর পূর্ণ হয়েছে গত ১৮ অক্টোবর। কিন্তু এই এক বছরেও এ ঘটনার মূল দুই আসামিকে ধরতে পারেনি পুলিশ।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এই হত্যা মামলার আসামি ফখরুল ইসলামের স্ত্রী ও শাশুড়ি ধরা পড়ে দীর্ঘদিন জেল খেটে সম্প্রতি জামিন পেয়েছেন। তবে এ ঘটনার দুই আসামি ধরা না পড়ায় এ মামলার মূল রহস্য এখনো রয়ে গেছে অজানা। নিহতের পরিবারের সদস্যরা মনে করেন, অধরা আসামিরা ধরা পড়লেই ফখরুল হত্যার আসল রহস্য উদঘাটন হতো।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত ২০১৮ সালের ১৮ অক্টোবর সন্ধ্যায় গহিরা চৌমুহনীর উত্তর পাশে জনতা ব্যাংকের পেছনের ৪ তলা বিশিষ্ট আমেরিকা প্রবাসী আবু তাহেরের বাসার ৩য় তলার ভাড়াটিয়া ঘর থেকে আগুনের ধোঁয়া বের হতে দেখলে স্থানীয় বাসিন্দারা দ্রুত আগুন নেভাতে যান।

স্থানীয় লোকজন আগুন নেভাতে গিয়ে বাসাটির সিঁড়িসহ ফ্লোরে রক্তের দাগ দেখে বাসার ছাদে উঠে দেখেন, গলাকাটা অবস্থায় পড়ে ছিল উম্মে হাবিবা মায়ার স্বামী ফখরুল ইসলামের রক্তাক্ত দেহ। সঙ্গে সঙ্গে সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে গহিরা জে.কে মেমোরিয়াল হাসপাতালে, পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তিনদিন চিকিৎসকের সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে ২০ অক্টোবর না ফেরার দেশে পাড়ি জমান ফখরুল। ফখরুল হত্যার ঘটনায় পুলিশ তার স্ত্রী উম্মে হাবিবা মায়া ও শাশুড়ি রাশেদা আকতারকে গ্রেপ্তার করে। এ ঘটনায় ফখরুল ইসলামের ছোট ভাই নুরুল ইসলাম বাদি হয়ে রাউজান থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় ফখরুলের স্ত্রী উম্মে হাবিবা মায়া, মা রাশেদা আকতার, খালাতো ভাই খোরশেদ (৩১), বাসার দারোয়ান মো. হালিম (৩৬)এবং আরো ৫-৬ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়।

মামলার বাদি নুরুল ইসলাম ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে বলেন, ‘ভাইয়ের শাশুড়ি ও স্ত্রী গত সেপ্টেম্বর মাসে জেল থেকে জামিন নিলেও তাদের কাছ থেকে পুলিশ কোন ক্লু বের করতে পারেনি। বাকি দুই আসামি ধরা না পড়ায় আমরা উদ্বিগ্ন। ভাইয়ের হত্যাকারীদের ব্যাপারে পুলিশ কোন তথ্য দিতে পারছে না। অধরা দুই আসামি ধরা পড়লে মূল রহস্য উদঘাটন হতো’।

তিনি আরো বলেন, ‘আমার ভাইয়ের সঙ্গে মায়ার ছাড়াছাড়ি হয় আগেই। কাবিননামার জন্য তারা ভাইয়ের বিরুদ্ধে কোর্টে মামলাও করে। পরে পৌরসভার প্যানেল মেয়র বশির উদ্দিন খানের মধ্যেস্থতায় কাবিনের টাকা নির্ধারণ করা হয় এবং আমার ভাই ফখরুলের পাসপোর্ট শাশুড়ির জিন্মায় ছিল।

সেদিন পাসপোর্ট নিতে এবং কোর্টের কাবিননামার মামলা তুলে নেয়ার কথা বলে ভাইয়ের শাশুড়ি তাকে বাসায় ডেকে নেয় পূর্ব পরিকল্পিতভাবে। এরপর ফখরুলের স্ত্রী মায়া, তার মা রাশেদা বেগম এবং বাসার দারোয়ানসহ তাদের লোকজন মিলে আমার ভাইকে জবাই করে হত্যা করে।

নিহতের ছোট ভাই রেজাউল করিম ও নজরুল ইসলাম ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে বলেন ‘আমরা এখনো ভাই হত্যার ন্যায় বিচার পাইনি। আর কোন বাবা, মায়ের বুক যাতে খালি না হয়, সেজন্য আমাদের ভাইকে নৃশংসভাবে হত্যার বিচার চাই। এজন্য প্রশাসন, এমপি ও সংশ্লিষ্ট সবার হস্তক্ষেপ কামনা করছি’।

এ প্রসঙ্গে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা থানার এস.আই সাইমুল ইসলাম ইভান ২৪ ঘন্টা ডট নিউজকে বলেন, ‘ফখরুলকে কারা হত্যা করেছে, সে বিষয়টি আমরা এখনো নিশ্চিত হতে পারিনি। তারপরও এ ঘটনার চার্জশিট দাখিল করবো শীঘ্রই’।

উল্লেখ্য, নিহত ফখরুল ইসলাম রাউজান পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের মোবারকখীল এলাকার তাজুল ইসলামের পুত্র। তিনি বিয়ে করে ছিলেন গহিরা দলইনগর এলাকার প্রবাসী আবু বক্কর ওরফে বাবুলের মেয়ে উম্মে হাবিবা প্রকাশ মায়াকে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Share post:

Subscribe

spot_imgspot_img

Popular

More like this
Related

Burberry is the First Brand to get an Apple Music Channel Line

Find people with high expectations and a low tolerance...

For Composer Drew Silva, Music is all About Embracing Life

Find people with high expectations and a low tolerance...

Pixar Brings it’s Animated Movies to Life with Studio Music

Find people with high expectations and a low tolerance...

Concert Shows Will Stream on Netflix, Amazon and Hulu this Year

Find people with high expectations and a low tolerance...