২৪ ঘণ্টা ডট নিউজ। চট্টগ্রাম ডেস্ক : বুকে প্রচণ্ড ব্যাথা নিয়ে চট্টগ্রামের সরকারি-বেসরকারি তিনটি হাসপাতালে ছুটোছুটি করতে করতেই না ফেরার দেশে চলে গেলেন চট্টগ্রাম মহানগরীর বায়োজিদ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ শফিউল আলম সগীর। মঙ্গলবার সকালে চিকিৎসা বঞ্চিত হয়ে তিনি মারা গেছেন।
কোন হাসপাতালেই তাকে ভর্তি করেনি, চিকিৎসাও দেননি অভিযোগ স্বজনদের। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সিটি মেয়র আ জ ম নাছিরসহ আওয়ামী লীগ নেতারা। তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন শিক্ষা উপ-মন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
জানা গেছে, শফিউল আলম সগীরের হঠাৎ বুকে ব্যথা অনুভব করলে মঙ্গলবার সকাল এগারোটার দিকে তাকে প্রথমে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নেওয়া হয়। সেখানে তার চিকিৎসাতো দুরে থাক ভর্তি করাও হয়নি।
এরপর সেখান থেকে জি ই সি মোড়স্থ মেডিকেল সেন্টার নেওয়া হয় সেখানেও তার চিকিৎসা সেবা দিতে অপারগতা প্রকাশ করে হাসপাতালের কর্মরতরা। এদিকে বুকের ব্যথায় ছটফট করা এ আওয়ামী লীগ নেতাকে নিয়ে আবারো ছুটলো নতুন হাসপাতালের খোঁজে।
পাঁচলাইশের পার্কভিউ হাসপাতালে তাকে নেওয়া হলে সেখানেও প্রথমে তার চিকিৎসা প্রদানে অপারগতা প্রকাশ করে। পরে অবশ্য বিভিন্ন তদবির ও কাউন্সিলর শাহেদ ইকবাল বাবুর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় তাকে ভর্তি করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে ভর্তি হওয়ার পর চিকিৎসা শুরুর আগেই তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
স্বজনরা জানিয়েছেন হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু হয়েছে বর্ষীয়ান এই আওয়ামী লীগ নেতার। তাকে নিয়ে সরকারি বেসরকারি ৩টি হাসপাতালে ছুটোছুটি করেছি। তাদের অভিযোগ করোনা উপসর্গ সন্দেহে তাকে কোন হাসপাতালেই ভর্তি করতে চাইনি। সামান্য চিকিৎসার অভাবে নির্মমভাবেই মারা গেলেন চট্টগ্রামের এই আওয়ামী লীগ নেতা।
চট্টগ্রামের সিটি মেয়র আ জ ম নাছির মঙ্গলবার সকালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া বায়েজিদ থানা আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি সগিরের মৃত্যুর ঘটনায় বেসরকারি হাসপাতাল মালিকদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
একইদিন বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্যসচিব ড. আহমদ কায়কাউসের সঙ্গে এক জুমের কনফারেন্সে ক্ষোভ প্রকাশ করে সচিবকে তিনি বলেন, ‘আজকে সকালে আমাদের থানা আওয়ামী লীগের এক সেক্রেটারি স্ট্রোক করেছিলেন।
তাকে তিন চারটা হাসপাতালে নেওয়া হলেও কোনও হাসপাতালেই সিট খালি নেয় এমন অজুহাতে ভর্তি করায় নি। পরে যখন পার্কভিউ হাসপাতালে নেওয়া হলো তখন চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে দেখেন তিনি আর বেঁচে নেই।
বায়েজীদ থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক হারুন বলেন ”হার্ট অ্যাটাকে মারা গিয়েছেন সগীর ভাই। কিন্তু করোনা সন্দেহ করে উনাকে চিকিৎসা দেয়নি হাসপাতালগুলো।
সঠিক সময়ে চিকিৎসা পেলে সগীর ভাইকে এভাবে আমাদের হারাতে হতো না। আমরা আশা করবো, চট্টগ্রামের আর কোন মানুষ যেন চিকিৎসা সুবিধা বঞ্চিত হয়ে এভাবে অকালে মৃত্যুর কোলে ঢলে না পড়েন।
শিক্ষা উপ-মন্ত্রী নওফেলের শোক : বায়েজিদ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সফিউল আলম ছগির এর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন শিক্ষা উপ-মন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল(এম.পি)।
শোক বার্তায় শিক্ষা উপ-মন্ত্রী বলেন, ছাত্রলীগ-যুবলীগ করে তৃণমূল থেকে উঠে আসা বায়েজিদ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম ছগির এর মৃত্যুতে আওয়ামী লীগ একজন দক্ষ ও মেধাবী সংগঠক হারালো। তাঁর মৃত্যুতে চট্টগ্রামের আওয়ামী পরিবারের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে।
শিক্ষা উপ-মন্ত্রী তাঁর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবার পরিজনের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
২৪ ঘণ্টা/রাজীব প্রিন্স
Leave a Reply