পাপুলের পক্ষ নিয়ে প্রত্যাহার হচ্ছেন কুয়েতের রাষ্ট্রদূত

সংসদ সদস্য কাজী শহীদুল ইসলাম পাপুলের বিরুদ্ধে কুয়েত সরকারের তদন্তে যেখানে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য বের হয়ে আসছে, সেখানে তার পক্ষে সাফাই গেয়েছেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তার লেখা এমন একটি চিঠি প্রকাশ পেয়েছে। যেখানে পাপুলের বিরুদ্ধে প্রকাশিত খবরগুলোকে ‌ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যেপ্রনোদিত বলে দাবি করেছেন রাষ্ট্রদূত।

এর মধ্যে রাষ্ট্রদূত পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলছেন, দায়িত্বে না থাকলেও তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ তদন্ত করবে রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলো।

তদন্তে বের হয়ে আসছে একের পর এক তথ্য। অর্থ পাচার, ঘুষ কেলেঙ্কারিসহ নানা অভিযোগে অভিযুক্ত সংসদ সদস্য কাজী পাপুলের কাছ থেকে অবৈধ সুযোগ নেয়া কুয়েতের বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা, ব্যবসায়ীদের নাম বের হয়ে আসছে দেশটির তদন্তে। শুধু মানবপাচার নয়, গ্রেফতারকৃত পাপুলের বিরুদ্ধে ৫টি অভিযোগের তদন্ত করছে এখন কুয়েতের গোয়েন্দা সংস্থা।

উল্টো চিত্র বাংলাদেশের পক্ষ থেকে। গ্রেফতারের ১৬ দিন পরও কোন তথ্য নেই, দাবি রাষ্ট্রদূতের। অথচ, চিঠিটিতে দেখা যায়, গত ফেব্রুয়ারি মাসে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর কাছে রাষ্ট্রদূতের পাঠানো চিঠিতে দাবি করা হয়েছে, পাপুলের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো মিথ্যে।

কুয়েতের আল কাবাস পত্রিকার সাংবাদিককে দূতাবাসের পক্ষ থেকে জিজ্ঞাসাবাদ করার কথা বলা হয় এ চিঠিতে। একইসঙ্গে কুয়েতের জেনারেল ডিপার্টমেন্ট অব ক্রিমিনাল এভিডেন্স থেকে পাপুলকে গুড কন্ট্রাক সার্টিফিকেট এবং নট কনভিকটেড মর্মে উল্লেখ করার কথাও বলা হয়। এ চিঠিতে মোট ৩ বার সব অভিযোগ মিথ্যে বলে দাবি করেন রাষ্ট্রদূত। গণমাধ্যমের কাছেও তিনি অভিযোগগুলো ‘বাতাসের’ বলে দাবি করেন।

কুয়েতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমাদের কাছে কোন তথ্য নেই। তাছাড়া সরকার আমাদের কিছু জানাচ্ছে না। কর্মচারী জড়িত এই সেই, এগুলো মুখরোচক কথা, বাতাসের কথা। কিসের তদন্ত হবে? বাতাসের কথা থেকে কোন তদন্ত হয়?

চিঠির বিষয়ে অবগত নন জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলছেন, রাষ্ট্রদূতের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো তদন্তের আওতায় আনা হবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন বলেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে বোধহয় চিঠি দিয়েছিলেন, এটা হয়তো ব্যক্তি চিঠি, আমি জানি না। অবশ্যই বড় অ্যাকশন হবে। আমরা ইতিমধ্যে নতুন রাষ্ট্রদূত ওখানে কে যাবেন সেটা নির্ধারণ করেছি। বর্তমান বাদ হলেও যদি দেখা যায় যে, এগুলোর সাথে সম্পৃক্ততা আছে, সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান আছে, তাহলে তারা এটা দেখবে।

কুয়েতের গণমাধ্যমের সবশেষ খবরে বলা হচ্ছে, পাপুলের কাছ থেকে ২৮ কোটি টাকা ঘুষ নেয়ার অভিযোগে দেশটির পুলিশ আরও দুই ব্যক্তিকে খুঁজছে।

২৪ ঘণ্টা/এম আর

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *