সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার চারখাই ইউনিয়নের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী কামাল আহমদ (৪২) এর হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। সেই সাথে হত্যাকান্ডে জড়িত ৩ আসামী গ্রেফতার এবং নিহতের কঙ্কাল উদ্ধার করেছে।
পুলিশ জানায় মঙ্গলবার (৭ জুলাই) বিকেলে বছর খানেক আগে নিখোজ ব্যবসায়ী কামাল আহমদের কঙ্কাল কচুরিপানা ভর্তি ডোবায় ড্রামের উদ্ধার করা হয়। এর আগে ওই দিন সকাল ৯টায় ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃত যুবকের নাম আমির উদ্দিন। সে জকিগঞ্জ উপজেলার আটগ্রাম এলাকার রায়গ্রামের মনু মিয়ার ছেলে (২৪)।
ঘটনার বিবরণে জানাযায়, গত বছরের ১০ আগস্ট বিয়ানীবাজারের চারখাই এলাকার আদিনাবাদ গ্রামের মৃত রকিব আলির ছেলে কামাল আহমদ (৪০) নিখোঁজ হন। চারখাই বাজারের কামাল ষ্টোরের সত্তাধীকারী ছিলেন তিনি। সেখানে ব্যবসা করেলও তিনি একটি বাড়ি বানিয়ে বসবাস করতেন আলিনগর ইউনিয়নের খলাগ্রামে। তার সাথে থাকতো তারই দোকানের কর্মচারী জকিগঞ্জের আটগ্রাম এলাকার রায়গ্রামের মনু মিয়ার ছেলে আমির উদ্দিন। ব্যক্তিগতভাবে ব্যবসায়ী কামাল ছিলেন অবিবাহিত।
প্রতিদিনের ন্যায় ব্যবসায়ী কামাল ও তার দোকান কর্মচারী আমীর ব্যবসা বাণিজ্য শেষে তারা রাতে ঘুমাতে যান আলিনগর ইউনিয়নের খলাগ্রামের বাড়িতে। ঘাতকরা ওই রাতেই তাকে হত্যা করে লাশ একটি ড্রামে ভরে তারই বাড়ির পাশে একটি ডুবায় ফেলে দেয়।
পরদিন ব্যবসায়ী কামাল দোকানে না যাওয়ায় পরিবারের লোকজন ফোন দেন দোকান কর্মচারী আমির উদ্দিনকে। সে একেক ধরনের কথা বলে। পালিয়ে বেড়ায় সে নিজেও।
পরবর্তীতে ব্যবসায়ী কামাল নিখোঁজ হয়েছেন বলে তার পরিবারের পক্ষ থেকে একটি মামলা দায়ের করা হয়। সিলেটের পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেন জকিগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায়কে। তিনি ঘটনার রহস্য বের করতে মাঠে নামেন। তথ্য প্রযুক্তি ও ব্যবসায়ী কামাল এবং দোকান কর্মচারী আমিরের সাথে কারা কারা থাকতো তাদের নিয়ে গভীর অনুসন্ধান চালান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায়।
অবশেষে অনেক তথ্য সংগ্রহের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দোকান কর্মচারী আমিরকে গ্রেফতার করা হয়। মঙ্গলবার সকাল ৯টায় কানাইঘাটের কাড়াবাল্লা গ্রাম থেকে আমিরকে গ্রেফতার করে পুলিশের একটি দল।
সিলেট জেলা পুলিশের মিডিয়া মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর মোঃ লুৎফর রহমান জানান, আমিরকে গ্রেফতারের পর তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে শুরু হয় লাশ উদ্ধার অভিযান। এক সময় সে স্বীকার করে ব্যবসায়ী কামালের বাড়ির পাশে ডোবায় ড্রামে ভরে লাশ ফেলে দেয়া হয়েছে। বিকেলে ডুবুরীর সাহায্যে ড্রামের ভেতর থেকে উদ্ধার করা হয় কয়েকটি কঙ্কাল।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার লুৎফর রহমান আরো জানান, ‘ঘটনার সাথে জড়িত অন্যান্য আসামিদের ধরার জন্য পুলিশ তৎপর রয়েছি। অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য আমরা কাজ করছি।’
২৪ ঘণ্টা/এম আর
Leave a Reply